ঢাকা, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

এই লড়াই জিতবে কোন দেশ এর ভবিষ্যতবাণী করে গেছেন মহানবী (স)

২০২৫ জুন ২০ ১১:৫৪:০৮
এই লড়াই জিতবে কোন দেশ এর ভবিষ্যতবাণী করে গেছেন মহানবী (স)

বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা চরমে, ইরান ও ই-স-রা-ই-লে-র মাঝে সামরিক সংঘাতের তীব্রতা বাড়ছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে দুই দেশের মধ্যকার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা পাল্টা হামলা অব্যাহত রয়েছে। অনেক বিশ্লেষক আশঙ্কা করছেন, এ দ্বন্দ্ব মোড় নিতে পারে বৃহত্তম কোনো যুদ্ধের দিকে — এমনকি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ পর্যন্ত। তবে এই আধুনিক সংঘাতের পেছনে রয়েছে এক গভীর ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় প্রেক্ষাপট, যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ইসলামী সম্প্রদায়ের মাঝে আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ইরান-ই-স-রা-ই-লে-র সম্ভাব্য যুদ্ধের রূপরেখা মহানবীর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বহু শতাব্দী আগে বর্ণিত এক হাদিসের সঙ্গে মিলে যায়। মহানবী বলেছেন, কেয়ামতের আগের এক সময়ে খোরাসান থেকে একটি কালো পতাকা বহনকারী শক্তিশালী সেনাবাহিনী উত্তরণ করবে, যাদের কেউ থামাতে পারবে না যতক্ষণ না তারা সেই পতাকা জেরুজালেমের বিখ্যাত বায়তুল মোকাদ্দাস বা আল আকসা মসজিদে উত্তোলন করে।

খোরাসান থেকে কালো পতাকা বহনকারী সেনাবাহিনী:

খোরাসান মূলত প্রাচীন একটি অঞ্চল, যা বর্তমান ইরান, আফগানিস্তান ও তুর্কমেনিস্তানের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত ছিল। বর্তমানে এর অধিকাংশ অংশ ইরানের ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত। হাদিসে বর্ণিত ওই কালো পতাকা বহনকারী বাহিনী এই অঞ্চলে বসবাসরত বা সেখান থেকে আগত এক সৈন্যদল হবে বলে ধারণা করা হয়।

মহানবী বর্ণনা করেছেন, তারা অবিরাম এগিয়ে যাবে এবং অবশেষে আল আকসা মসজিদে সেই কালো পতাকা উত্তোলন করবে। এর অর্থ এই সংঘর্ষের ফলশ্রুতিতে আল আকসা মসজিদ দখলদার থেকে মুক্ত হবে। ইতিহাস জানায়, ১৯৪৮ সালে ইসরাইল জেরুজালেমকে নিজের রাজধানী ঘোষণা করে এবং আজও ওই অঞ্চল ও আল আকসার নিয়ন্ত্রণ ই-স-রা-ই-লে-র হাতে রয়েছে।

ইমাম মাহদী ও শেষযুদ্ধের আভাস:

অন্য একটি হাদিসে মহানবী বলেছেন, যখন খোরাসানের কালো পতাকা দেখা যাবে, তখন মুসলিমরা তাদের কাছে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। কারণ ঐ সেনাবাহিনীর সঙ্গে থাকবেন আল্লাহর খলিফা, ইমাম মাহদী। এই নির্দেশনা মুসলিম আলেমদের মধ্যে ইমাম মাহদীর আগমন ও শেষকালের প্রধান আলামতগুলোর আগমনের পূর্বাভাস হিসেবে গ্রহণ করা হয়।

এই যুদ্ধকে ‘আল মালহামা’ বলা হয়, যা মানব ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ ও ভয়াবহ সংঘাত হবে। এই যুদ্ধে ইমাম মাহদীর নেতৃত্বে ইসলামী খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে বলেও বিশ্বাস রয়েছে।

সাম্প্রতিক যুদ্ধবিগ্রহ ও হাদিসের সম্পর্ক:

গত ১৩ জুন ‘অপারেশন রাইজিং লাইন’ নামে ইসরাইল ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালায়। এ হামলায় ইরানের উচ্চ পদস্থ সেনা সদস্য, পরমাণু বিজ্ঞানী, সাংবাদিকসহ অনেকেই নিহত হন। প্রতিশোধে ইরানও বিভিন্ন স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে থাকে। প্রতিদিনই দুই দেশের মধ্যে হামলা-প্রতিহামলার ঘটনা ঘটে চলেছে।

এই পরিস্থিতিতে ধর্মীয় ভাবনা ও হাদিসের আলোকে অনেকে প্রশ্ন করছেন — পৃথিবীর শেষ অধ্যায় কি শুরু হয়ে গেছে? কেয়ামতের আগে এই যুদ্ধ কি বাস্তবায়িত হচ্ছে?

ইরান-ই-স-রা-ই-ল সংঘর্ষে বিশ্ব যেন এক অজানা ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলছে। তবে শেষ সিদ্ধান্ত, যেভাবে আল্লাহ তায়ালা নির্দেশ দিবেন, সেটাই বাস্তব হবে। মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে এখন একটাই বার্তা — সতর্ক থাকা, ধর্মীয় ঐতিহ্য ও হাদিস থেকে শিক্ষা নেওয়া, এবং শান্তির পথে কাজ করা।

আসলে, যেকোনো সংঘাতের মধ্যেও মানবতার কল্যাণ, শান্তি ও সহিষ্ণুতা প্রতিষ্ঠা করা উচিত। শেষ পর্যন্ত, আল্লাহই জানেন এই জটিল যুদ্ধের গতি ও পরিণতি।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ