বিসিবির দায়িত্ব নিতে চান কিনা জানিয়ে দিলেন মাশরাফি

একটা সময় ছিল যখন মাশরাফি বলতে পাগল ছিল সবাই। তার নামে গোটা গ্যালারি ফাটিয়ে দিত ভক্ত সমর্থকরা। তিনিই এক সময় ছিলেন মাহানায়ক। এখন হয়ে গেছেন মার্ভেল মভির সবচেয়ে বড় ভিলেন থ্যানোসের মত ভক্তদের কাছে। কোটা আন্দোলনের সময় চুপ থাকা, দলের উর্ধ্বে উঠে মানুষের পাশে থাকতে না পারার ব্যাপারটি তুমুল আলোচনা সমালোচনা জন্ম দেয়।
এর ফলশ্রুতিতে পুড়িয়ে দেয়া হয় তার বাড়ি। তবে এবার সব কিছু নিয়ে নিরবতা ভেঙেছেন মাশরাফি। দেশের একটি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সব কিছু পরিস্কার করেছেন।
রাজনীতিতে আসার আগে আপনি গোটা দেশে তুমুল জনপ্রিয় ছিলেন। এখন নিশ্চিতভাবেই তা নন। এবারের এই আন্দোলনে তো আপনাকে শূলে চড়ানো হয়েছে। আপনি কিছুক্ষণ আগে বলছিলেন যে, নিজের জন্য কিছু করতে পারেননি, পরিবারের জন্যও পারেনি। এখন কি তাহলে মনে হয়, রাজনীতিতে আসা আপনার ভুল ছিল?
মাশরাফি: তখন আমার কাছে মনে হয়নি। বিভিন্ন সময়ের বাস্তবতা আলাদা। এখনও যদি ওই সময়ে ফিরে যাই, একই কথা বলব।
আমি জানতাম, ক্রিকেটার হিসেবে হয়তো সবার আছে আমার গ্রহণযোগ্যতা আছে। রাজনীতিতে নামলে সেটা থাকবে না। কিন্তু ওই চ্যালেঞ্জ আমি নিতে চেয়েছি। মানুষের জন্য বড় পরিসরে কিছু করতে চেয়েছি। এই জায়গায় নিজের কাছে পরিষ্কার ছিলাম।
এখন যে সরকার এসেছে, আমরা যদি আমার জায়গা থেকে, আপনার জায়গা থেকে সমালোচনা করে নিচে নামাই, তাহলে তো এভাবেই যুগ যুগ ধরে চলতে থাকবে। তো, আমি যে জায়গায় ছিলাম, হয়তো রাজনীতিতে না এলেও পারতাম। ভালো ছিলাম। কিন্তু চ্যালেঞ্জটা নিয়েছি।
রাজনীতিতে আসার পর আমার বড় বড় কিছু এন্ডোর্সমেন্ট বাতিল হয়েছে। ২০১৯ বিশ্বকাপে অধিনায়ক হিসেবে যাব, এজন্য আরও বড় কিছু প্রস্তাব ছিল এন্ডোর্সমেন্টের। রাজনীতিতে আসার পর সেগুলোও সরে গেছে। মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি তারা, রাজনীতির সঙ্গে থাকতে চায় না। ৮-১০ কোটি টাকার চুক্তি বাতিল হয়েছে। আমি ওই টাকা নিয়ে অনায়াসেই পরিবার নিয়ে সুখে থাকতে পারতাম। কিন্তু একার ভালো থাকার কথা না ভেবে নড়াইলের কথা ভেবেছি।
নড়াইল তো ‘সি’ ক্যাটাগরির জেলা। কিন্তু আমার চেষ্টা ছিল ‘এ’ ক্যাটাগরির জেলার সুযোগ-সুবিধা যেন নড়াইলের মানুষকে দিতে পারি। সেই চেষ্টাকে এতটা আবেগ দিয়ে, এতটা মরিয়া হয়ে করেছি… আমি অন্তত জানি, সর্বোচ্চটা দিয়েই চেষ্টা করেছি। ২০১৮ সালের নড়াইল আর এখনকার নড়াইলের তুলনা করলেই সেটা বোঝা যাবে। আশা করি নতুন সরকার তা চলমান রাখবে।
রাজনীতিতে এসে ভুল করেছি, এটা তাই বলব না। ভুল করে থাকলে হয়তো নিজেরই ক্ষতি করেছি। তবে আমার ভেতরে কোনো খেদ কখনও কাজ করবে না। কারণ, নিজের চিন্তাটা আমার কাছে পরিষ্কার ছিল।
এখন আপনার কি ভাবনা? মানে, আপনি তো প্রথাগত মাঠের রাজনীতিবিদ নন বা ছিলেন না। এখন রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ কি?
মাশরাফি: ভবিষ্যতের কথা তো ভেবেছি অনেক। জানি না, সামনে কী করব।
আমি কখনও কোনো ব্যবসা করিনি সেভাবে। আমার ছোট ভাইয়ের একটি ফ্যাশন হাউজ আসে, সেটাও বেশ আগে থেকে। এছাড়া আমার পরিবারের কেউ ব্যবসা করে না। এখনও আমার মূল পেশা ক্রিকেট খেলাই। রাজনীতি ছিল প্যাশন, নড়াইলের জন্য করার চেষ্টা করেছি।
যে কাজগুলি নড়াইলে করেছি বা চলমান আছে, তালিকা ধরে যদি এগোতে থাকেন… অনেক কিছুই দেখতে পাবেন।
গত ৫-৬ বছরের দুই বছর তো কোভিডেই চলে গেছে। তার পরও যদি দেখেন, সড়কে ফোর লেনের কাজ চলছে। নদী ভাঙনের এলাকা আমাদের। সেখানে ৩০০ কোটি টাকার কাজ হয়েছে। কিছু কাজ জরুরি ভিত্তিতে হয়েছে। পল্লী অবকাঠামোর রাস্তার কাজ হয়েছে ২০০ কোটি টাকার। নড়াইল জেলা পল্লী অবকাঠামো উন্নয়নের ২৫০ কোটি টাকার কাজের অনুমোদন হওয়ার পর ৩৪ কোটি টাকার মতো টেন্ডার হয়েছে। হাসপাতাল ছিল ১০০ শয্যার। সেটা ২৫০ শয্যা করা হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় ১০টি আইসিইউ বেড নেওয়া হয়েছে। লোহাগড়া হাসপাতাল ছিল ৩১ শয্যার। সেটাকে চার তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে ৫০ শয্যা করা হয়েছে।
দেশের ২৯-৩০ টি পৌরসভায় এমজিএসপি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, সরকারের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। আমার আসনের দুটি পৌরসভা সেখানে ছিল। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অনুমোদন হয়ে টেন্ডার হয়েছে। কাজ শুরু হয়নি। আইটি ট্রেনিং সেন্টারের কাজ শুরু হয়ে গেছে। আরও আছে অনেক।
একটা বিশ্ববিদ্যালয় বাকি ছিল। সবশেষ যে পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাব গেছে, এর মধ্যে নড়াইল ছিল। এসএম সুলতানের নামে আমরা করতে চেয়েছিলাম।
আমি চেষ্টা করেছি। আশা করি, বর্তমান ও ভবিষ্যতের সরকার সেসব চলমান রাখবে।
ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ?
মাশরাফি: আমি তো আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলি না। বিপিএল খেলি আর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ খেলি। ভেবেছিলাম, আর এক মৌসুম খেলে হয়তো বাদ দেব। এখন যে পরিস্থিতি, তাতে আদৌ বিপিএল হয় কি না, বা ঢাকা লিগ হয় কি না, কে জানে। সময় হলে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেব।
ক্রিকেট বোর্ডে বা ক্রিকেটে কোনোভাবে সম্পৃক্ত থাকার সম্ভাবনা আছে?
মাশরাফি: আমি সংসদ সদস্য হওয়ার পর খেলা বাদ দিয়ে ক্রিকেট বোর্ডে যাইনি সাধারণত। নিজের কথা আসলে ভাবিনি। যে জায়গায় আমি ছিলাম, হয়তো ওপরের মহলে গিয়ে বলতে পারতাম যে ক্রিকেটে এই কাজটা করতে চাই বা ওই দায়িত্ব নিতে চাই। কিন্তু নিজের কথা বলতে চাইনি কখনোই।
যখন বলার সুযোগ ছিল, তখনই বলিনি। এখন যে পরিস্থিতি, আমার কাছে মনে হয়, ক্রিকেট বোর্ডে থাকা বা এরকম কোনো দায়িত্ব আমার প্রাপ্য নয়। আমি দাবিও করতে পারি না।
যখন রাজনীতিতে ছিলাম, ক্রিকেট বোর্ডে থাকার চেষ্টা করিনি। এখন রাজনীতিতে নেই, এখন যদি বোর্ডে থাকার চেষ্টা করি বা থাকতে চাই, তাহলে কেমন হয়ে যায় না!
যদি ছোট কোনো প্ল্যাটফর্মে সুযোগ আসে, সেই জায়গা থেকে চেষ্টা করতে পারি। কিন্তু বড় পরিসরে বা বোর্ডে গিয়ে বলব, ‘এখন কাজ করতে চাই ক্রিকেট নিয়ে’, এটা অনেকটা সুযোগসন্ধানী ব্যাপার হয়ে যাবে। এই জায়গা থেকে আমার মনে হয়, এটা আমার প্রাপ্য নয়।
হ্যাঁ, ক্রিকেট আমার রক্তে আছে। কেউ কখনও সহায়তা চাইলে অবশ্যই পাশে থাকব। কিন্তু বোর্ডে থাকার বাস্তবতা এই মুহূর্তে আমার নেই। ডিজার্ভও করি না।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- চুপ্পুকে সরিয়ে জাতীয় নির্বাচনে আগে নতুন রাষ্ট্রপতি চান পিনাকি
- PSG বনাম ইন্টার মায়ামি: কখন, কোথায় ও কীভাবে দেখবেন লাইভ ম্যাচ
- পিএসজি বনাম ইন্টার মায়ামি: ম্যাচ প্রিভিউ, একাদশ ও ম্যাচ শুরুর সময়
- ৮ গোল: শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম বাহারাইনের মধ্যকার ম্যাচের ৯০ মিনিটের খেলা
- মাহিয়া মাহির মৃত্যু গুজব: সত্য ও মিথ্যার বিশ্লেষণ
- বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্কবার্তা দিল ডিএসই
- শান্তর পদত্যাগ, নতুন টেস্ট অধিনায়কত্বে এগিয়ে যিনি
- পিএসজি বনাম ইন্টার মায়ামি: ৪-০ গোলে শেষ হলো ম্যাচ
- কফিনবন্দি হয়ে ফিরলেন ফখরুল, চোখের জলে ভেসে গেল শেষ বিদায়
- শ্রীলঙ্কা বনাম বাংলাদেশ: বৃষ্টির কারণে বন্ধ দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ
- ফাফ ডু প্লেসির ডাবল সেঞ্চুরি রেকর্ডে কাঁপছে ক্রিকেট বিশ্ব
- ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ : দ্বিতীয় পর্ব নিশ্চিত ১৬ দলের, সময় সূচি প্রকাশ
- বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নজরে পাঁচ কোম্পানি
- বাজারে সামগ্রিক মন্দার মাঝেও বস্ত্র খাতের ৫ কোম্পানির চমক
- বিনিয়োগকারীদের জন্য তিন কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা