শবে বরাতের ইতিহাস: রহমত, মাগফিরাত ও মুক্তির মহিমান্বিত রজনী

শবে বরাত, অর্থাৎ সৌভাগ্যের রজনী, ইসলামে এক বিশেষ ফজিলতপূর্ণ রাত। ফারসি শব্দ ‘শব’ মানে রাত এবং ‘বরাত’ মানে সৌভাগ্য। আরবিতে একে বলা হয় ‘লাইলাতুল বরাত’, যা আল্লাহর করুণা ও অনুগ্রহের প্রতীক। হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, এই রাতে মহান আল্লাহ তার বান্দাদের গুনাহ ক্ষমা করেন, রহমতের দ্বার খুলে দেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি প্রদান করেন।
শবে বরাতের তাৎপর্য ও মাহাত্ম্য
এটি এমন এক পবিত্র রাত, যখন অসংখ্য বান্দা আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা ও কল্যাণ লাভ করেন। প্রতিবছর হিজরি বর্ষপঞ্জির শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে শবে বরাত পালিত হয়। ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে, এটি আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের রাত।
শবে বরাতের ইতিহাস ও নবীজির (সা.) শিক্ষা
শবে বরাতের গুরুত্ব ও ইতিহাসের প্রসঙ্গে উম্মুল মু’মিনিন হজরত আয়েশা (রা.)-এর বর্ণনা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এক রাতে তিনি দেখেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) গভীর নামাজে নিমগ্ন এবং দীর্ঘ সময় ধরে সেজদায় রয়েছেন। এতে হজরত আয়েশা (রা.) মনে করেছিলেন, তিনি হয়তো ইন্তেকাল করেছেন। সন্দেহ দূর করতে তিনি নবীজির বৃদ্ধাঙ্গুলিতে স্পর্শ করেন, তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) আঙুল নাড়িয়ে সাড়া দেন।
নামাজ শেষ করে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘হে আয়েশা! তুমি কি জানো, আজকের রাতের মাহাত্ম্য কী?’ আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আল্লাহ ও তার রাসুলই ভালো জানেন।’ তখন নবীজি (সা.) বলেন, ‘এটি অর্ধ শাবানের রাত, যে রাতে আল্লাহ তার বান্দাদের পাপ ক্ষমা করেন, দোয়া কবুল করেন এবং অনুগ্রহপ্রাপ্তদের বরকত দান করেন। তবে যারা বিদ্বেষ পোষণ করে, তাদের ক্ষমা করা হয় না।’
শবে বরাতে ইবাদতের গুরুত্ব ও করণীয়
শবে বরাতকে ইসলামে আত্মশুদ্ধি ও ইবাদতের রাত হিসেবে গণ্য করা হয়। এটি কোনো আনন্দ-উৎসবের রাত নয়, বরং তওবা, ইস্তিগফার ও নফল ইবাদতে কাটানোর রাত। রমজানের প্রস্তুতিমূলক মাস হিসেবে শাবান মাসে নবীজি (সা.) বেশি রোজা রাখতেন।
সাহাবিগণ নবীজিকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আগেকার উম্মত দীর্ঘ জীবন পেত এবং বেশি ইবাদত করতে পারত, কিন্তু আমাদের জীবনকাল তুলনামূলকভাবে কম। তখন আল্লাহ তাআলা নবীজিকে এমন কিছু বিশেষ রাত দান করেন, যাতে ইবাদত করলে অগণিত সওয়াব অর্জন করা সম্ভব।
শবে বরাতসহ ফজিলতপূর্ণ রাতসমূহ
শবে বরাতসহ কয়েকটি রাতকে ইসলামে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়েছে, যেমন:
শবে বরাতের রাত – আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর ক্ষমা লাভের রাত।
শবে কদরের রাত – হাজার মাসের চেয়েও উত্তম রজনী।
ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার রাত – আনন্দ ও ইবাদতের রাত।
আশুরার রাত – ঐতিহাসিক ও ত্যাগের প্রতীক।
এই পাঁচটি রাতের ইবাদত হাজার রাতের ইবাদতের চেয়েও বেশি সওয়াবের কারণ হয়। মহান আল্লাহ মুসলমানদের জন্য এই বিশেষ রাতগুলো নির্ধারণ করেছেন, যাতে তারা নেক আমল করতে পারে এবং পূর্ববর্তী জাতিগুলোর তুলনায় অধিক সওয়াব অর্জন করতে পারে।
শবে বরাত মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি রাত, যা আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে আসে। এটি আত্মশুদ্ধির রাত, যেখানে বান্দারা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং তার নৈকট্য লাভের চেষ্টা করেন। তাই এই রাতকে যথাযথভাবে ইবাদত ও আল্লাহর স্মরণে কাটানো প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অপরিহার্য।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- দেশের বাজারে ইতিহাস গড়ে কমলো সোনার দাম, জেনেনিন বাজার মূল্য
- অভিনেতা সিদ্দিককে পিটিয়ে পুলিশে দিল ছাত্রদল কর্মীরা
- আজ বাংলাদেশের বাজারে১৮ ক্যারেট, ২১ ক্যারেট ও ২২ ক্যারেট সোনার দাম
- ৬ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ডিভিডেন্ড ঘোষণা, কারা কত শতাংশ দিচ্ছে
- বাংলাদেশ স্কোয়াডে দুই পরিবর্তন, আসছে এক চেনা মুখ ও এক নতুন নাম
- বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করলেন হাসানত আব্দুল্লাহ
- মার্জিন রুলস ১৯৯৯-এ বড় পরিবর্তন: পুঁজিবাজারের নতুন দিগন্ত
- ১১ কোম্পানির তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ: কার লাভ, কার ক্ষতি?
- ৬৯০ টাকায় সাড়ে ১২ কেজির এলপি গ্যাস, কেন পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ?
- ১৬ কোম্পানির ইপিএস প্রকাশ: কার আয় বাড়ল, কে পড়ল লোকসানে
- শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল বিএসইসি
- বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার মারা গেছেন
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ৭ কোম্পানির নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা
- আজকের সৌদি রিয়াল রেট (২৮ এপ্রিল ২০২৫)
- রিয়াল বনাম বার্সা ফাইনাল: কখন, কোথায়, কিভাবে দেখবেন আজ রাতে