উপদেষ্টা পরিষদে বড় রদবদল

নিজস্ব প্রতিবেদক: তথ্য ও সম্প্রচার এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম রাজনীতিতে সরাসরি অংশ নেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে অব্যাহতিপ্রাপ্ত হতে পারেন। তাঁর পদত্যাগের পর, উপদেষ্টা পরিষদে বড় ধরনের রদবদল হতে পারে, এমন গুঞ্জন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। খবর অনুযায়ী, নাহিদ ইসলাম চলতি সপ্তাহের শেষ অথবা আগামী সপ্তাহের শুরুতে পদত্যাগ করতে পারেন।

নাহিদ ইসলামের পদত্যাগের পর, উপদেষ্টা পরিষদে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হতে পারে। বিশেষত, শূন্য হওয়া বিভিন্ন দপ্তরে নতুন সদস্যদের নিয়োগ দেয়া হতে পারে। এমনকি, বর্তমান সরকারের কাজের গতির প্রতি যে অভিযোগ উঠছে, সেটি কাটাতে উপদেষ্টা পরিষদে পরিসর বাড়ানোর এবং কার্যক্রমে গতির উন্নতি করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে।

এদিকে, সম্প্রতি বেসামরিক বিমান, পর্যটন ও ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া দপ্তরগুলোর দায়িত্ব পুনর্বণ্টিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এফ হাসান আরিফের মৃত্যু পর, ভূমি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদারকে দেওয়া হয়েছে, এবং বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের অধীনে রাখা হয়েছে।

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ তারিখে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সরকারের কাজের গতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিছু রাজনৈতিক দল সরকারের শ্লথগতির বিষয়টি উত্থাপন করেছে এবং পরিসর বাড়িয়ে সরকারের কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার পরামর্শ দিয়েছে।

নাহিদ ইসলাম ইতোমধ্যে জানিয়েছেন যে, তিনি রাজনীতিতে অংশ নিতে হলে উপদেষ্টা পরিষদ ছেড়ে দেবেন। ফলে, তাঁর পদত্যাগের বিষয়ে শীঘ্রই ঘোষণা আসতে পারে। কিছু সূত্র জানিয়েছে যে, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের একজন ব্যক্তির নাম আলোচনায় রয়েছে, যিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিতে পারেন। তবে, বর্তমান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সরকারের বিদেশি কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করায়, তার দপ্তর পরিবর্তন নাও হতে পারে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, নাহিদ ইসলামের পদত্যাগের পর, তাঁর দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের হাতে আসতে পারে। এছাড়া, কিছু নামও শোনা যাচ্ছে, যেমন শফিকুল আলম (প্রেস সচিব) এবং ড. মুশতাক খান (বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক)।

নতুন উপদেষ্টা হিসেবে আরও কিছু নাম উঠেছে, যাদের মধ্যে বিশেষ সহকারীদের কাছ থেকে কাউকে উপদেষ্টা পরিষদে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে।

গণঅভ্যুত্থানের পর, ৫ আগস্ট দেশবাসী বড় রাজনৈতিক পরিবর্তনের সাক্ষী হয়, যেখানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে এবং ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এরপর, সরকার উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করে এবং কিছু মন্ত্রণালয়ের পুনর্বণ্টন করা হয়।

বর্তমানে সরকারের কাজের গতির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু, এবং কিছু মন্ত্রণালয়ে নতুন মুখ নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। পদত্যাগের ঘটনা এবং পরবর্তী রদবদল সরকারের কার্যক্রমে গতির উন্নয়ন করতে সহায়ক হতে পারে, তবে সঠিকভাবে এই পরিবর্তনগুলি সংগঠিত হলে, সরকারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখা সম্ভব হবে।

জামাল/