জীবনে একবার হলেও যে নামাজ পড়তে বলেছেন আমাদের প্রিয় রাসুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: নফল নামাজগুলোর মধ্যে ‘সালাতুত তাসবিহ’ একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। এটি গুনাহ মাফ ও আত্মশুদ্ধির জন্য বিশেষভাবে সুপরিচিত। সালাতুত তাসবিহ নামাজের মূল বিষয় হলো আল্লাহর প্রশংসাসূচক তসবিহ পাঠ করা। এই নামাজে বারবার উচ্চারিত হয়: ‘সুবহানাল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহি ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার’।
সালাতুত তাসবিহের গুরুত্ব ও ফজিলত
সালাতুত তাসবিহ নিয়মিত আমল করা একজন মুমিনের জন্য গুনাহ থেকে মুক্তির মাধ্যম এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের সহজ উপায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) স্বয়ং এই নামাজের গুরুত্ব বর্ণনা করেছেন এবং তাঁর চাচা আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব (রা.)-কে এই নামাজ পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
হাদিসে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “চাচাজান, আমি কি আপনাকে উত্তম তসবি শিক্ষা দেব না? যখন আপনি তা আদায় করবেন, আল্লাহ আপনার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী, নতুন-পুরাতন, ইচ্ছাকৃত ও অনিচ্ছাকৃত, ছোট-বড় সকল প্রকার পাপ ক্ষমা করবেন।” এরপর তিনি চার রাকাতবিশিষ্ট সালাতুত তাসবিহের পদ্ধতি শিক্ষা দেন। (আবু দাউদ: ১২৯৭, ইবনে মাজাহ: ১৩৮৭)
রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, “যদি সম্ভব হয়, প্রতিদিন একবার এই নামাজ পড়ো। না হলে প্রতি জুমার দিন একবার, তাও সম্ভব না হলে মাসে একবার, না পারলে বছরে একবার, আর সেটাও যদি সম্ভব না হয় তবে জীবনে অন্তত একবার হলেও এই নামাজ পড়বে।” (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ১২৯৭)
সালাতুত তাসবিহ নামাজের পদ্ধতি
এই নামাজ চার রাকাত, যা একসঙ্গে বা দুই রাকাত করে আদায় করা যায়। প্রতি রাকাতে মোট ৭৫ বার তসবি পাঠ করতে হয়, আর চার রাকাতে মোট ৩০০ বার। নামাজের পদ্ধতি নিম্নরূপ:
১. সুরা ফাতিহা ও অতিরিক্ত সুরা পাঠের পর রুকুতে যাওয়ার আগে ১৫ বার তসবি পড়তে হবে।
২. রুকুতে রুকুর তাসবিহ পাঠের পর ১০ বার এই তসবি পড়তে হবে।
৩. রুকু থেকে উঠে ‘সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলার পর ১০ বার তসবি পড়তে হবে।
৪. প্রথম সেজদায় সিজদার তাসবিহের পর ১০ বার তসবি পড়তে হবে।
৫. দুই সেজদার মধ্যবর্তী বৈঠকে ১০ বার তসবি পড়তে হবে।
৬. দ্বিতীয় সেজদায় সিজদার তাসবিহের পর ১০ বার তসবি পড়তে হবে।
৭. দ্বিতীয় সেজদা থেকে মাথা তুলে বসে ১০ বার তসবি পড়তে হবে।
এইভাবে প্রতি রাকাতে মোট ৭৫ বার এবং চার রাকাতে মোট ৩০০ বার তসবি পাঠ করতে হয়।
সালাতুত তাসবিহের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক
যদি নামাজে কোনো তসবি বাদ পড়ে যায়, তবে পরবর্তী যে-রোকনে স্মরণ আসবে, সেখানেই সংখ্যা পূরণ করতে হবে।
যদি ‘সাহু সেজদা’ ওয়াজিব হয়, তবে সেই সেজদায় তসবি পড়তে হবে না।
তসবির সংখ্যা গোনার জন্য আঙুলের কর ব্যবহার করা যাবে না।
সালাতুত তাসবিহ নামাজের সময়
এই নামাজ যেকোনো সময় আদায় করা যায়, তবে সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত এবং ঠিক দুপুরের সময়ে নামাজ পড়া নিষিদ্ধ। রাতের বেলা বা তাহাজ্জুদের সময় এই নামাজ আদায় করাই উত্তম।
নিয়ত করার নিয়ম
সালাতুত তাসবিহের নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা জরুরি নয়। অন্তরে শুধু এই চিন্তা করাই যথেষ্ট যে, “আমি আল্লাহর উদ্দেশ্যে সালাতুত তাসবিহ নামাজ আদায় করছি।”
সালাতুত তাসবিহ নামাজ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শেখানো বিশেষ ইবাদত, যা গুনাহ মাফের অন্যতম শ্রেষ্ঠ মাধ্যম। প্রতিদিন, প্রতি জুমার দিন, প্রতি মাস বা বছরে একবার হলেও এটি আদায়ের চেষ্টা করা উচিত। আর যদি তা সম্ভব না হয়, তবে জীবনে অন্তত একবার এই নামাজ পড়া উচিত, যাতে আল্লাহর অফুরন্ত রহমত ও মাগফিরাত লাভ করা যায়।
মো: রাজিব আলী/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা: বৃষ্টির কারণে বন্ধ ম্যাচ
- আলোচিত ১০ সিনেমা যেখানে নায়ক-নায়িকা সত্যি মিলিত হয়েছেন
- ভারতের সাবেক স্পিনার দিলীপ দোশী মারা গেলেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে
- শেখ হাসিনা যাকে প্রধানমন্ত্রী করতে চেয়েছিলেন, জানালেন অলি
- আ. লীগের কার্যক্রম স্থগিত, নিষিদ্ধ করা হয়নি: ড. ইউনূস
- ভয়াবহ অন্ধকারে ঢাকার একাংশ
- FIFA ক্লাব বিশ্বকাপ ২০২৫: এক নজরে ৮ গ্রুপের পয়েন্ট টেবিল
- সাপে কামড়ানোর পর ১০ মিনিটের মধ্যে যা করবেন, তাতেই বাঁচবেন
- করোনা সংক্রমণ: স্কুল বন্ধ নাকি চলবে, সিদ্ধান্ত জানালো মাউশি
- বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা: শান্ত-নিসাঙ্কার সেঞ্চুরিতে ড্র টেস্ট
- ত্রয়োদশ নির্বাচনে বিএনপি ১০০ আসনও পাবে না
- বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্কবার্তা দিল ডিএসই
- বিনিয়োগকারীদের নজর কেড়েছে ৩ কোম্পানির শেয়ারে
- শ্রীলঙ্কা বনাম বাংলাদেশ: বৃষ্টির কারণে বন্ধ দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ
- এই লড়াই জিতবে কোন দেশ এর ভবিষ্যতবাণী করে গেছেন মহানবী (স)