ঢাকা, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫, ১৯ বৈশাখ ১৪৩২

লোকসানে বিদ্যুৎ খাতের দুই শীর্ষ কোম্পানি, বিনিয়োগকারীদের হতাশা

শেয়ারবাজার ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ মে ০২ ১৫:২৩:৩৫
লোকসানে বিদ্যুৎ খাতের দুই শীর্ষ কোম্পানি, বিনিয়োগকারীদের হতাশা

নিজস্ব প্রতিবেদক: এক সময় যে কোম্পানিগুলো ছিল বিদ্যুৎ খাতের আস্থার বাতিঘর, আজ তারা হাঁটছে লোকসানের আঁধার পথে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রাষ্ট্রায়ত্ত পাওয়ারগ্রীড কোম্পানি এবং বেসরকারি এনার্জিপ্যাক পাওয়ারজেনারেশন ২০২৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে মুনাফা হারিয়ে লোকসানে ডুবে গেছে। বিনিয়োগকারীদের হতাশা যেন আরও ঘনীভূত হলো এই প্রতিবেদনে।

পাওয়ারগ্রীড: ভরসার খুঁটি হঠাৎ নড়বড়ে

একসময় যে পাওয়ারগ্রীড কোম্পানি ছিল নির্ভরতার নাম, সেই প্রতিষ্ঠানই এখন লোকসানের খাতায় নাম লিখিয়েছে। জানুয়ারি থেকে মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত তিন মাসে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ২ টাকা ০৩ পয়সা। অথচ গত বছর এই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় ছিল ২ টাকা ৩৭ পয়সা—অর্থাৎ মুনাফা থেকে এক লাফে গভীর ক্ষতিতে।

এই ধাককা থেমে থাকেনি এখানেই। পুরো অর্থবছরের নয় মাস মিলিয়ে শেয়ার প্রতি লোকসান দাঁড়িয়েছে ৩৪ পয়সা, যেখানে আগের বছর একই সময়ে আয় ছিল ২ টাকা ১৬ পয়সা।

ডিভিডেন্ডের দিক থেকেও চিত্রটা হতাশাজনক। ২০২৪ সালে কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করেনি কোম্পানিটি। অথচ ২০২২ ও ২০২৩ সালে ১০ শতাংশ করে নগদ লভ্যাংশ এবং ২০২০ ও ২০২১ সালে ২০ শতাংশ করে নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে এই পাওয়ার জায়ান্ট।

এনার্জিপ্যাক: আগুনের বদলে ধোঁয়া

বেসরকারি খাতের আরেক আলোচিত নাম—এনার্জিপ্যাক পাওয়ারজেনারেশনও এ যাত্রায় আর রক্ষা পায়নি। ২০২৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১১ পয়সা। অথচ গত বছর এই সময়েই তারা ৫ পয়সা করে আয় করেছিল প্রতি শেয়ারে।

জুলাই ২০২৪ থেকে মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত নয় মাসে মোট শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ০৯ পয়সা। এ সময়ের আগের বছরের চিত্র ছিল অনেকটাই আলাদা—১৪ পয়সা শেয়ার প্রতি আয়।

ডিভিডেন্ডের খাতাও এবার খালি। ২০২৪ সালে কোনো লভ্যাংশ না দেওয়া এ কোম্পানি ২০২৩ সালে ৫ শতাংশ এবং ২০২১ ও ২০২২ সালে ১০ শতাংশ করে ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছিল।

ভবিষ্যতের পথে অন্ধকার?

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের এই দুই গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানির হঠাৎ এমন দুর্বল পারফরম্যান্স বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় সতর্ক সংকেত। বিশ্লেষকরা বলছেন, উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়া, পরিচালন দক্ষতায় ঘাটতি এবং জ্বালানি খাতের নীতিগত অস্থিরতা এর পেছনে বড় কারণ হতে পারে।

এখন দেখার বিষয়—এই ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়াতে পারে কিনা প্রতিষ্ঠানগুলো। নাকি আরও গভীর লোকসানের গহ্বরে হারিয়ে যাবে এক সময়ের লাভের বাতিঘরগুলো?

আল-আমিন ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ