‘সম্মানিত’ কোম্পানির গায়ে এবার ‘ঝুঁকির’ তকমা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) তালিকাভুক্ত বহুজাতিক কোম্পানি আরএকে সিরামিকস (বাংলাদেশ) লিমিটেড সময়মতো শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে ডিভিডেন্ড বিতরণে ব্যর্থ হওয়ায় কোম্পানিটিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। ডিএসই জানিয়েছে, সোমবার (৫ মে) থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।
শেয়ারবাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, একটি বহুজাতিক ও আর্থিকভাবে স্থিতিশীল কোম্পানির এমন ব্যর্থতা বাজারের জন্য অশনিসংকেত। এতে শুধু বিনিয়োগকারীদের আস্থা ক্ষুণ্ন হচ্ছে না, বরং বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সার্বিক ভাবমূর্তি নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
ডিএসই সূত্রে জানা যায়, কোম্পানিটি নির্ধারিত সময় অনুযায়ী বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) আয়োজন করেছে। সভায় অনুমোদিত লভ্যাংশ ঘোষণাও করা হয়েছে। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে শেয়ারহোল্ডারদের হাতে ওই ডিভিডেন্ড পৌঁছায়নি। ডিএসইর লিস্টিং রেগুলেশন অনুযায়ী, কোনো কোম্পানি সময়মতো ঘোষিত লভ্যাংশ বিতরণে ব্যর্থ হলে, তাকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
‘জেড’ ক্যাটাগরিতে থাকা কোম্পানিগুলো সাধারণত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয় এবং এসব কোম্পানির শেয়ারদরে অস্থিরতা বেশি দেখা যায়। ফলে বিনিয়োগকারীরা সাধারণত এসব কোম্পানিকে এড়িয়ে চলেন। তবে আরএকে সিরামিকসের মতো প্রতিষ্ঠানের এমন অবস্থায় নাম লেখানো বাজারে একটি ভিন্ন বার্তা দিচ্ছে।
বিশ্লেষকদের ভাষ্যমতে, বহুজাতিক কোম্পানিগুলো সাধারণত স্বচ্ছ পরিচালনা, সময়মতো ডিভিডেন্ড প্রদান এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা রক্ষার ক্ষেত্রে সুনাম অর্জন করে থাকে। সে প্রেক্ষাপটে আরএকে সিরামিকসের এই ব্যত্যয় শুধু একটি কোম্পানির ব্যর্থতা নয়, এটি পুরো পুঁজিবাজারের জন্য নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করতে পারে।
একজন বাজার বিশ্লেষক বলেন, “এই ঘটনা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মনোভাবেও প্রভাব ফেলতে পারে। তারা বাংলাদেশের বাজারকে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবতে শুরু করতে পারেন, যা ভবিষ্যতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বিনিয়োগে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে।”
এ বিষয়ে ডিএসইর একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানান, কোম্পানিটি কেন ডিভিডেন্ড সময়মতো বিতরণে ব্যর্থ হলো, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রয়োজনে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
তবে বাজারসংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করছেন, এটি আর্থিক দুর্বলতা নয়, বরং প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনার ফল। আরএকে সিরামিকসের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানিটির মূলধন, লাভ এবং সম্পদ কাঠামো এখনও যথেষ্ট শক্তিশালী। সে হিসেবে শিগগিরই কোম্পানিটি ডিভিডেন্ড বিতরণ করতে সক্ষম হবে বলেই তারা ধারণা করছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের ঘটনা যেন ভবিষ্যতে না ঘটে, সেজন্য কোম্পানিগুলোর পরিচালনা পর্ষদের আরও সচেতন হওয়া জরুরি। বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখতে হলে নির্ধারিত সময়সীমা মেনে চলা এবং স্বচ্ছতা বজায় রাখা অত্যাবশ্যক।
মো: রাজিব আলী/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- নকল অ্যাপ, ভুয়া ব্রোকারেজ: শেয়ারবাজারের বড় প্রতারণা উন্মোচন
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ৬৪% ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্কবার্তা: ৩,০০০ সদস্যের প্রতারক চক্রের চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস
- শেয়ারবাজারে আলোড়ন: ৯ স্টকে বাই সিগন্যাল, নতুন সুযোগ?
- বিনিয়োগকারীদের চিন্তা দুর করলো ৯ কোম্পানির শেয়ার
- ২,৩০০ কোটি টাকার বন্ডে শেয়ারবাজারে আলোড়ন: বিএসইসি'র অনুমোদন
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা করলো ৮ কোম্পানি
- সরকারি কর্মীদের জন্য সুখবর: নতুন পে-স্কেল, কার কত বেতন বাড়বে
- পে-স্কেল নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সুখবর দিলেন অর্থ উপদেষ্টা
- রেকর্ড চাহিদা: বিনিয়োগকারীদের চাহিদার শীর্ষে ২৪ কোম্পানির শেয়ার
- পুঁজি সংগ্রহে ব্যর্থ শেয়ারবাজার: দায়ী কারা? ফাঁস করলেন বিশেষজ্ঞরা
- ইন্টার মায়ামি বনাম শিকাগো ফায়ার: শেষ ৮ গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচ
- আগামীকাল আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে ৪ পরিবর্তন
- সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা নিয়মে যুগান্তকারী পরিবর্তন
- শেয়ারবাজারে নতুন মোড়: ফিরছেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা!