ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ৩১ চৈত্র ১৪৩২

জমির কাগজে ভুল? একদিনেই ঠিক করার নতুন নিয়ম

সারাদেশ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ মে ১৫ ০১:৪০:৫৭
জমির কাগজে ভুল? একদিনেই ঠিক করার নতুন নিয়ম

নিজস্ব প্রতিবেদক

জমির কাগজে নামের বানান ভুল, জমির দাগ নম্বরে অসামঞ্জস্য, কিংবা মালিকানার রেকর্ডে বিভ্রান্তি—এমন পরিস্থিতি এক সময় ছিল আতঙ্কের নাম। তবে এখন আর এসব নিয়ে দীর্ঘদিন দৌড়ঝাঁপের প্রয়োজন নেই। ভূমি মন্ত্রণালয়ের নতুন ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় একদিনেই এসব ভুল রেকর্ড সংশোধন করা সম্ভব হচ্ছে।

ভুল রেকর্ড? সমাধান ‘মিস কেস’ প্রক্রিয়ায়

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম প্রামাণিক জানান, “জমির খতিয়ান বা নামজারিতে ভুল থাকলে ভূমি অফিসে ‘মিস কেস’ দায়ের করতে হয়। এসিল্যান্ড বা সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর বরাবর একটি আবেদন করলেই সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।”

এই আবেদন হতে হবে সাধারণ সাদা কাগজে, যার সঙ্গে ২০ টাকার কোর্ট ফি যুক্ত করতে হয়। পাশাপাশি জমির মালিকানার প্রমাণ, সংশ্লিষ্ট খতিয়ান, দাগ নম্বর, এবং পূর্ববর্তী রেকর্ডসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হবে।

প্রযুক্তি এনেছে গতি ও স্বচ্ছতা

বর্তমানে ভূমি মন্ত্রণালয় চালু করেছে ‘ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা সিস্টেম’, যার মাধ্যমে সারাদেশের ভূমি রেকর্ড এক প্ল্যাটফর্মে সংরক্ষিত রয়েছে। এই প্রযুক্তির সুবিধায় রেকর্ড যাচাই-বাছাই দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে সম্ভব হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন, যদি জমির প্রকৃত মালিক সঠিক দলিলসহ আবেদন করেন, তাহলে যাচাই শেষে একদিনের মধ্যেই ভুল রেকর্ড সংশোধন করে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

কেন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি?

জমির কাগজে সামান্য ভুল ভবিষ্যতে বড় জটিলতার কারণ হতে পারে। যেমন:

উত্তরাধিকার বা বিক্রয়ের সময় মালিকানা প্রমাণে সমস্যা

অন্য কেউ জমি নিজের নামে খারিজ করে নিতে পারে

ব্যাংক লোন বা সরকারি কাজে জমির কাগজ অসংগতিপূর্ণ বলে বাতিল হতে পারে

তাই কাগজে ভুল থাকলে দেরি না করে তা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।

আবেদন করতে যা যা লাগবে:

সাদা কাগজে আবেদন (এসিল্যান্ড বরাবর)

২০ টাকার কোর্ট ফি

জমির মালিকানার দলিল

খতিয়ান ও দাগ নম্বর

পূর্বের রেকর্ডের অনুলিপি

জাতীয় পরিচয়পত্র/ওয়ারিশান সনদ (যদি প্রযোজ্য হয়)

একদিনেই সমাধান, শুধু সঠিক পথে উদ্যোগ নিলেই সম্ভব

জমির কাগজ নিয়ে দুশ্চিন্তার দিন এখন অতীত। নতুন ডিজিটাল সিস্টেম এবং প্রশাসনিক সরলতা মানুষের হয়রানি কমিয়ে এনেছে অনেকটাই। এখন শুধু প্রয়োজন সচেতনতা এবং যথাসময়ে সঠিক উদ্যোগ।

আপনার জমির কাগজে কোনো ভুল থাকলে আজই খোঁজ নিন, সংশোধনের আবেদন করুন—আর নিশ্চিন্ত থাকুন নিজের মাটির প্রকৃত মালিক হিসেবে।

সচরাচর জিজ্ঞাসা (FAQs):

প্রশ্ন ১: জমির রেকর্ডে ভুল থাকলে কী করব?

ভূমি অফিসে ‘মিস কেস’ নামে আবেদন করতে হবে সহকারী কমিশনার (ভূমি)-এর বরাবর।

প্রশ্ন ২: একদিনে রেকর্ড সংশোধন কীভাবে সম্ভব?

ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এখন সঠিক কাগজপত্র ও আবেদন থাকলে একদিনেই সংশোধন করা সম্ভব।

প্রশ্ন ৩: আবেদনের জন্য কী কী কাগজ লাগবে?

জমির দলিল, ভুল খতিয়ান কপি, দাগ নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র, পূর্ব রেকর্ড এবং ২০ টাকার কোর্ট ফি।

প্রশ্ন ৪: মিস কেস কী?

খতিয়ানে ভুল সংশোধনের জন্য ভূমি অফিসে দাখিল করা আবেদনকেই মিস কেস বলা হয়।

আল-আমিন ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ