চাকা ছাড়া অবতরণ! বিমানের সেই ২ মিনিটের রোমহর্ষক গল্প

নিজস্ব প্রতিবেদক: শুধু দুই মিনিট। এই স্বল্প সময়ের মধ্যেই আকাশ থেকে মাটিতে ফিরেছে ৭১টি জীবন। না, এটি কোনো সিনেমার দৃশ্য নয়। এটি বাস্তব, বাংলাদেশ বিমানের বিজি ৪৩৬ ফ্লাইটের এক রোমহর্ষক গল্প।
শুক্রবার দুপুর ১টা ২০ মিনিটে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করেছিল ড্যাশ ৮-৪০০ মডেলের উড়োজাহাজটি। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের দিকে উড়ছিল শান্তভাবে। কিন্তু আকাশে ওড়ার কিছু সময় পরই ঘটে অপ্রত্যাশিত এক ঘটনা—পেছনের একটি চাকা খুলে নিচে পড়ে যায়।
পাইলট মুহূর্তেই বুঝে ফেলেন—এটি আর সাধারণ ফ্লাইট নয়। এটিসিকে (এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল) পাঠান জরুরি বার্তা, ঘোষণা করেন ‘ইমারজেন্সি’। ঢাকার আকাশের নিচে তখন শুরু হয় উত্তেজনার প্রস্তুতি। রানওয়ের পাশে প্রস্তুত রাখা হয় ফায়ার সার্ভিস, ইঞ্জিনিয়ারিং টিম, মেডিকেল ইউনিট—সব।
বিমানে থাকা যাত্রীরা তখন জানতেন না কী ঘটতে যাচ্ছে। শিশুরা মায়ের কোলের আশ্রয়ে, বড়রা নীরবে প্রার্থনায়। বিমানের ভেতর তখন নীরব এক যুদ্ধ—ভয়, অনিশ্চয়তা আর প্রত্যাশার।
অবশেষে দুপুর ২টা ২০ মিনিট। ঢাকার আকাশে ঢুকে আসে ফ্লাইটটি। নিয়ন্ত্রণ টাওয়ার থেকে একের পর এক দিকনির্দেশনা। রানওয়েতে নামতে শুরু করে বিমান। শেষ মুহূর্তে ভারসাম্য হারানোর আশঙ্কা থাকলেও, অভিজ্ঞ পাইলট দক্ষতায় নামিয়ে ফেলেন বিমানটিকে।
মাত্র দুই মিনিট। এই সময়ের মধ্যেই সংঘটিত হয় এক নিখুঁত জরুরি অবতরণ। সব যাত্রী নিরাপদ, অক্ষত। বিমানের গায়ে সামান্য আঁচড় পড়লেও, যাত্রীরা মাটিতে নামার পর চোখে ছিল বিস্ময়, ঠোঁটে কৃতজ্ঞতা।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) এবিএম রওশন কবীর জানান, “কক্সবাজার থেকে উড্ডয়নের পরই পেছনের একটি চাকা খুলে পড়ে যায়। ফ্লাইটটি ‘ইমারজেন্সি’ ঘোষণা করে। শাহজালালে অবতরণের সময় সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ড্যাশ ৮-৪০০ মডেলের বিমান এমন পরিস্থিতিতে এক চাকা দিয়েও অবতরণে সক্ষম, তবে এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এরকম পরিস্থিতিতে পাইলটের সিদ্ধান্ত ও ঠান্ডা মাথার দক্ষতা প্রাণ বাঁচানোর সবচেয়ে বড় উপাদান।
প্রথমে যেটি ছিল সম্ভাব্য দুর্ঘটনা, সেটি পরিণত হলো এক সাহসী ও সফল উদ্ধার অভিযানে। বিমানের সেই ২ মিনিটের অবতরণ এখন হয়ে উঠেছে সাহস, পেশাদারিত্ব আর মানবিকতার এক দৃষ্টান্ত।
FAQs (প্রশ্নোত্তর):
প্রশ্ন: বিমানের চাকা খুলে গেলে কী হয়?
উত্তর: বিমানের এক বা একাধিক চাকা খুলে গেলে তা বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করে। তবে সঠিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পাইলট ও প্রস্তুত থাকা থাকলে নিরাপদ অবতরণ সম্ভব।
প্রশ্ন: উড্ডয়নের সময় বিমানের চাকা খুলে গিয়েছিল কোন ফ্লাইটে?
উত্তর: বিজি ৪৩৬ (ড্যাশ ৮-৪০০) ফ্লাইটটি কক্সবাজার থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার পর পেছনের একটি চাকা খুলে পড়ে।
প্রশ্ন: যাত্রীদের কি কোনো ক্ষতি হয়েছে?
উত্তর: না, বিমানের পাইলট সফলভাবে জরুরি অবতরণ করান এবং সব ৭১ জন যাত্রী নিরাপদে অবতরণ করেন।
প্রশ্ন: এ ধরনের ঘটনার পর কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়?
উত্তর: অবতরণের পর বিমানের ইঞ্জিনিয়ারিং টিম পুরো যান্ত্রিক অবস্থা পর্যালোচনা করে ও পরবর্তী নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
জামিরুল ইসলাম/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- স্বর্ণের বাজারে বড় পরিবর্তন, ভরিতে কমলো ৭,৩২৫ টাকা
- সোনার দাম কমল: ৯ মে থেকে কার্যকর নতুন মূল্য তালিকা
- “না মারলে ঘটত বড় কিছু”—নেহালের এই কথায় দেশজুড়ে তোলপাড়
- ১০ বলে ২৭ রান! রাকিবুলের ছক্কা বৃষ্টি আর জয়ের উল্লাস
- বিএনপির ৪ নেতার পদত্যাগ: সামনে এলো আসল কারণ
- শেয়ারবাজারের ঝুঁকি নিয়ে গভর্নর সতর্ক, জানিয়ে দিলেন বিনিয়োগকারীদের
- আসন্ন বাজেটে শেয়ারবাজারে আস্থা ফেরাতে সরকারের ৭ পদক্ষেপ
- শেয়ারবাজার নিয়ে খেলা বন্ধে কঠোর শাস্তির দাবি
- শেয়ারবাজারের সংকটে এনসিপির শক্তিশালী প্রস্তাব
- ভুটানকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করল বাংলাদেশ
- যুদ্ধবিরতির পর কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানকে ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব
- শেয়ারবাজারে নাটকীয় দিন: একই শ্রেণির শেয়ার দুই চরমে
- বাংলাদেশ ২-২ ড্র: সাফ অনূর্ধ্ব-১৯-এ মালদ্বীপের সাথে সমতা
- শেষ ওভারে বদলে গেল ম্যাচের দৃশ্যপট, ব্যর্থ আকবরদের প্রচেষ্টা
- আজ সন্ধ্যা ৬টার আগে হতে পারে ঝড়, সতর্ক ৬ জেলা