ঢাকা, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাজেটে শেয়ারবাজারের জন্য যেসব প্রণোদনা বিবেচনায় রয়েছে

শেয়ারবাজার ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ মে ২০ ১৭:৪৫:১৯
বাজেটে শেয়ারবাজারের জন্য যেসব প্রণোদনা বিবেচনায় রয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বর্তমানে দীর্ঘমেয়াদি এক মন্দার মধ্যে রয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থার ঘাটতি এবং বাজারের তারল্য সংকটকে গভীরতর করেছে। বিগত তিন অর্থবছরে ধারাবাহিক দরপতনের ফলে বাজার মূলধনে উল্লেখযোগ্য হ্রাস এসেছে এবং ইকুইটি মার্কেটে নতুন বিনিয়োগ প্রাপ্তি ব্যাপকভাবে সীমিত হয়েছে।

এই প্রেক্ষাপটে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শেয়ারবাজারের কার্যকারিতা পুনরুদ্ধারে সুনির্দিষ্ট কিছু প্রণোদনা অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বাজেটে করছাড়, ফি মওকুফ এবং শেয়ার লেনদেন সংক্রান্ত কর কাঠামোতে পুনর্বিন্যাসের বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে।

সোমবার (২০ মে) রাজধানীর একটি বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বিষয়ে আলোচনা করেন। বৈঠকে বাজার ব্যবস্থাপনায় কর-সহায়ক সংস্কার, বিশেষ করে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য ফিসহ ব্যয় কমানোর বিষয়ে প্রাথমিক মতামত উপস্থাপন করা হয়।

বিশ্বস্ত সূত্র মতে, বাজেটে যেসব প্রস্তাব বিবেচনায় রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে—

মুনাফার ওপর মূলধন কর হ্রাস বা সীমিত সময়ের জন্য অব্যাহতি

বিও হিসাব পরিচালনার ফি মওকুফ

শেয়ার লেনদেনের ওপর আরোপিত শুল্ক ও উৎসে কর কমানো

নতুন কোম্পানির তালিকাভুক্তি প্রক্রিয়ায় নিয়ন্ত্রক জটিলতা হ্রাস

একই সঙ্গে, ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়িয়ে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা করার পরিকল্পনাও রয়েছে। এর ফলে একদিকে ভোক্তা চাহিদা এবং ব্যক্তিগত সঞ্চয় সক্ষমতা বাড়বে, অন্যদিকে বিনিয়োগকারীদের শেয়ারবাজারে অংশগ্রহণ উৎসাহিত হতে পারে।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, বাজারে আস্থা ফেরাতে দীর্ঘমেয়াদি নীতিগত প্রতিশ্রুতি এবং বাস্তবভিত্তিক কর-সহায়ক পরিবেশ অপরিহার্য। গত কয়েক বছরে ঘোষিত প্রণোদনাগুলোর বাস্তবায়ন দুর্বল হওয়ায় বাজার কাঠামোর মধ্যে আস্থার ঘাটতি আরও প্রকট হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এবং বাজার বিশ্লেষক ড. মাহবুব হোসেন বলেন, “শেয়ারবাজারকে অর্থনীতির মূলধারায় রাখতে হলে করনীতিতে শৃঙ্খলা আনতে হবে এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য টেকসই প্রণোদনা কাঠামো গড়ে তুলতে হবে।”

বাজেট ঘোষণার প্রাক্কালে এনবিআর ও অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য ইঙ্গিত দিচ্ছে, এবারের বাজেটে শেয়ারবাজারকে অর্থনীতির একটি কার্যকর অর্থায়ন প্ল্যাটফর্ম হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হবে। এতে বাজারে নতুন মূলধন প্রবাহ বাড়ানোর পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘমেয়াদি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার সুযোগ তৈরি হতে পারে।

সবমিলিয়ে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট পুঁজিবাজারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত মোড় হতে পারে, যদি সেখানে প্রণোদনাগুলো বাস্তবায়নযোগ্য, পরিমাপযোগ্য এবং আর্থিক নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।

FAQ (প্রশ্নোত্তর)

১. আসন্ন বাজেটে শেয়ারবাজারের জন্য কী ধরনের প্রণোদনা আসতে পারে?

আসন্ন বাজেটে শেয়ারবাজারে করছাড়, লেনদেনের ওপর কর হ্রাস, নতুন কোম্পানির তালিকাভুক্তি সহজীকরণ এবং ব্যক্তির করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধির মতো প্রণোদনা বিবেচনায় রয়েছে।

২. করমুক্ত আয়সীমা বাড়ালে শেয়ারবাজারে কী প্রভাব পড়বে?

করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানো হলে ব্যক্তিগত সঞ্চয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে, যা বিনিয়োগকারীদের বাজারে আরও বেশি অংশগ্রহণে উৎসাহিত করবে এবং বাজারের তারল্য বৃদ্ধি করবে।

৩. শেয়ারবাজারের তারল্য বৃদ্ধির জন্য বাজেটে কী পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে?

বাজেটে মূলধন কর ছাড়, বিও হিসাবের ফি মওকুফ এবং লেনদেনের ওপর শুল্ক হ্রাসের মাধ্যমে বাজারে নতুন মূলধন প্রবাহ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হতে পারে।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

শেয়ারবাজারে করছাড়, বাড়ছে করমুক্ত আয়সীমা

শেয়ারবাজারে করছাড়, বাড়ছে করমুক্ত আয়সীমা

আগামী বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ানোর প্রস্তুতি, কর কাঠামো সংস্কারে জোর নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা, ব্যবসায়... বিস্তারিত