ঢাকা, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২

আস্থার ঘাটতি মেটাতে নতুন পদক্ষেপ বিএসইসির

শেয়ারবাজার ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ মে ২৭ ২০:৩৭:৪৫
আস্থার ঘাটতি মেটাতে নতুন পদক্ষেপ বিএসইসির

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে আরেকটি সাহসী ও সময়োপযোগী উদ্যোগ নিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এখন থেকে ব্রোকারদের মাধ্যমে পরিচালিত সমন্বিত গ্রাহক হিসাব (সিসিএ) থেকে অর্জিত সুদের এক-চতুর্থাংশ জমা হবে ‘স্টক এক্সচেঞ্জ ইনভেস্টরস প্রটেকশন ফান্ডে’।

মঙ্গলবার (২৭ মে) বিএসইসির ৯৫৬তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। পরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সিদ্ধান্তের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন কমিশনের পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম।

বিনিয়োগকারীর টাকায় স্বচ্ছতার নতুন জানালা

বিনিয়োগকারীদের অব্যবহৃত অর্থ সিসিএর মাধ্যমে ব্যাংকে জমা থাকে, যা থেকে ব্রোকাররা সুদ পেয়ে থাকেন। এতদিন এই সুদের পুরোটা ব্রোকারদের পকেটেই যেত। কিন্তু এখন থেকে সেই সুদের ২৫ শতাংশ জমা হবে একটি স্বতন্ত্র সুরক্ষা তহবিলে, যেখান থেকে ভবিষ্যতে বাজার পতন বা অনিশ্চয়তার সময়ে বিনিয়োগকারীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া যাবে। বাকি ৭৫ শতাংশ ব্রোকাররা আগের মতোই রাখতে পারবেন।

আস্থার সংকটে স্বস্তির ইঙ্গিত

বিএসইসি বলছে, এই সিদ্ধান্ত শুধু নিয়ম প্রয়োগ নয়, বরং একটি নীতিগত অঙ্গীকার—বিনিয়োগকারীদের পাশে দাঁড়ানোর। তারা মনে করছে, প্রটেকশন ফান্ডে সুদের অংশ সংরক্ষণ বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি অন্তর্নিহিত নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করবে, যা দীর্ঘমেয়াদে আস্থা ফেরাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বাজার বিশ্লেষকদের প্রশংসা

বাজার বিশ্লেষকদের ভাষ্যে, এটি শুধু বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষার বিষয় নয়, বরং পুরো বাজার ব্যবস্থাপনার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার দিকেও এক বড় পদক্ষেপ। তাদের মতে, এর ফলে ব্রোকাররা গ্রাহকের অর্থ ব্যবস্থাপনায় আরও যত্নবান হবেন এবং বিনিয়োগকারীরাও বাজার নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি ভাবনার সাহস পাবেন।

একটি বার্তা—বাজার শুধু মুনাফার জায়গা নয়, দায়িত্বেরও

এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিএসইসি যেন বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে একটি বার্তা দিচ্ছে: শেয়ারবাজার শুধু লাভের ক্ষেত্র নয়, এটি একটি দায়িত্বপূর্ণ সম্পর্কের জায়গা, যেখানে আস্থা, স্বচ্ছতা ও সুরক্ষাই মূল ভিত্তি।

সময়ের পরীক্ষায় এ সিদ্ধান্ত কতটা কার্যকর হয়, তা ভবিষ্যৎ বলবে। তবে এটুকু নিশ্চিতভাবে বলা যায়—এই উদ্যোগ বাজার ব্যবস্থাপনায় এক নতুন চিন্তার জন্ম দিয়েছে।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ