বিনিয়োগকারীর স্বার্থে জেড ক্যাটাগরিতে নতুন কড়াকড়ি

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিনের জড়তা, বিনিয়োগকারীদের অনাস্থা আর দুর্বল ব্যবস্থাপনায় জর্জরিত কোম্পানিগুলোর লাগাম টানতে মাঠে নেমেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এবার লক্ষ্যবস্তু সেইসব কোম্পানি, যারা ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে পড়ে রয়েছে বছরের পর বছর, আর যাদের উদ্যোক্তা-পরিচালকরা ৩০ শতাংশ শেয়ারধারণের ন্যূনতম শর্ত পর্যন্ত মানছেন না।
এই পরিস্থিতি পাল্টাতে ‘স্বতন্ত্র পরিচালক’ নিয়োগ বাধ্যতামূলক করল বিএসইসি—একটি সাহসী পদক্ষেপ, যা বাজারে সুশাসনের নতুন অধ্যায় রচনা করতে পারে।
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজারে বড় সাত সিদ্ধান্ত: ডেরিভেটিভ লেনদেনের যুগে প্রবেশ, কমল বিও হিসাব ফি
সিদ্ধান্ত এলো ৯৫৬তম কমিশন সভায়
মঙ্গলবার (২৭ মে) অনুষ্ঠিত হয় বিএসইসির ৯৫৬তম কমিশন সভা। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংস্থার চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ। পরবর্তী এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম জানান, কর্পোরেট গভার্নেন্স কোড, ২০১৮ অনুসরণ করে এসব কোম্পানিকে অবিলম্বে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করতে হবে।
কমিশনের ভাষ্য, এ উদ্যোগ কোম্পানির পরিচালনায় পেশাদারিত্ব আনবে, দায়িত্বজ্ঞান ও জবাবদিহিতার সংস্কৃতি গড়ে তুলবে এবং বিনিয়োগকারীদের হারিয়ে যাওয়া আস্থা ফিরিয়ে আনতে সহায়ক হবে।
কেন এমন সিদ্ধান্ত?
যেসব কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত থেকেও কার্যত ব্যবসা পরিচালনায় ব্যর্থ, দীর্ঘদিন ধরে মুনাফাহীন এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে—তাদের নিয়েই এই সিদ্ধান্ত।
অনেক কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকরা নিজেদের শেয়ারের প্রতি দায়বদ্ধ নন। ন্যূনতম ৩০ শতাংশ শেয়ারধারণের শর্ত পালন না করেও বছরের পর বছর ধরে তারা পর্ষদে রয়েছেন। এতে কোম্পানির স্বার্থ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তেমনি শেয়ারহোল্ডারদের নিরাপত্তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
এই বাস্তবতায় বিএসইসি মনে করছে, স্বতন্ত্র পরিচালকদের মাধ্যমে কোম্পানির সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানির জন্য বার্তা স্পষ্ট
বিনিয়োগকারীদের টাকা নিয়ে ব্যবসায়িক অক্ষমতা আর দায়বদ্ধহীনতার সময় ফুরিয়ে এসেছে—এই বার্তাই যেন দিয়েছে কমিশন।
জেড ক্যাটাগরি মানেই যেন একটা মৃত্যুপুরী—কোনো ব্যবসা নেই, মুনাফা নেই, আর্থিক প্রতিবেদন নেই, তবু তালিকাভুক্ত হয়ে বছরের পর বছর কাটিয়ে দেওয়া।
এখন থেকে এমন কোম্পানিকে জবাবদিহির ছায়াতলে আনতেই বসানো হবে এক একজন 'স্বতন্ত্র পরিচালক'—যিনি প্রতিষ্ঠানটির ভেতরের গল্পগুলো নতুনভাবে বলবেন, প্রয়োজনে ভুল নীতিতে আপত্তি তুলবেন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকবেন।
বিশ্লেষকদের চোখে আশার সঞ্চার
বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএসইসির এই সিদ্ধান্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য শুধু সুরক্ষা নয়, বরং কোম্পানিগুলোর মাঝে একটা জাগরণ তৈরি করবে।
পেশাদার পরিচালনার চর্চা বাড়বে, দায়বদ্ধতা বাড়বে, দুর্বল কোম্পানিগুলোও হয়তো ফিরে পাবে ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস।
একজন বিশ্লেষকের ভাষায়,
“স্বতন্ত্র পরিচালক হলো ভেঙে পড়া ভবনের মধ্যে একজন প্রকৌশলী—যিনি শুধু দেয়ালের ফাটল দেখেন না, তার মেরামতের পথও বাতলে দেন।”
আল-আমিন ইসলাম/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে কারসাজির চক্র: দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দামে অস্বাভাবিক উল্লম্ফন
- ৩ কোম্পানির কারখানায় ঝুলছে তালা, ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের
- শেষ হলো মেলবোর্ন স্টার্স বনাম বাংলাদেশের মধ্যকার রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের স্কোয়াড জায়গা পেলেন যারা
- ৮ প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ ঘোষণা, ছয় কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা খেলো ধাক্কা
- শেয়ারবাজার স্থিতিশীলতায় আইসিবির বিশেষ তহবিল থাকবে ২০৩২ সাল পর্যন্ত
- এশিয়া কাপ ২০২৫: তিন ওপেনার নিয়ে বাংলাদেশের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা
- রপ্তানি আয়ের ৮ হাজার কোটি টাকা গায়েব: কেয়া গ্রুপ ও চার ব্যাংককে তলব
- ভারত বনাম বাংলাদেশ : ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনে নিন ফলাফল
- ভারত বনাম বাংলাদেশ: গোল, গোল, ৮০ মিনিটের খেলা শেষ
- বদলে গেল ফোনের ডায়াল প্যাড, জানুন আসল কারণ ও আগের অবস্থায় ফেরানোর উপায়
- বদলে গেল আপনার ফোনের ডায়াল প্যাড, আতঙ্ক নয় সমাধান আছে, জেনে নিন
- শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সের বাঁচা মরার ম্যাচ
- ‘ক্ষমতা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি’—ড. ইউনূস
- গুজব না সত্য: যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা হাসিনার পদত্যাগপত্র খুঁজে পায়নি