ঢাকা, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন সতর্কবার্তা

শেয়ারবাজার ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুলাই ০১ ১৪:৫৫:৪৮
বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন সতর্কবার্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক: গত ছয় মাসে মার্কিন ডলারের মান আন্তর্জাতিক বাজারে ১০ শতাংশের বেশি কমে গেছে। এটি ১৯৭৩ সালের পর ডলারের সবচেয়ে বড় পতন, যেটি বৈশ্বিক মুদ্রা বাজারে ও বাণিজ্য প্রবাহে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলছে।

মূলত যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসী শুল্কনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং সরকারি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াই এই দরপতনের প্রধান কারণ হিসেবে বিশ্লেষকরা উল্লেখ করেছেন। এ পরিস্থিতিতে ডলারের প্রতি দীর্ঘমেয়াদি আস্থা কমছে, যা ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত গ্রহণে নতুন অনিশ্চয়তা তৈরি করছে।

ডলারের দুর্বলতা সরাসরি প্রভাব ফেলছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে। যুক্তরাষ্ট্রের আমদানির খরচ বেড়ে যাচ্ছে, ফলে দেশটির ভোক্তা পর্যায়ে পণ্যের দাম বাড়ছে। বিদেশ ভ্রমণ ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে মার্কিন নাগরিকদের জন্য। অপরদিকে, রপ্তানি খাতে কিছুটা সুবিধা সৃষ্টি হলেও ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কনীতি এসব প্রাকৃতিক ভারসাম্যকে বাধাগ্রস্ত করছে।

বিনিয়োগপ্রবণতার দিক থেকে দেখা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা এখন আরও সতর্ক। ডলারের অবমূল্যায়নের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ড ও শেয়ারবাজারে আগ্রহ কমছে, এবং তারা বিকল্প বাজার ও মুদ্রার দিকে ঝুঁকছেন। ইউরো, জাপানি ইয়েন, ব্রিটিশ পাউন্ড, কানাডিয়ান ডলার, সুইডিশ ক্রোনা ও সুইস ফ্রাঙ্কের শক্তিশালী অবস্থান এই প্রবণতার প্রতিফলন।

যদিও মার্কিন স্টক ও বন্ড বাজার সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা স্থিতিশীলতা দেখিয়েছে এবং কিছু শুল্কনীতি থেকে সরে আসার ইঙ্গিত মিলেছে, তবুও ডলারের দরপতন রোধ হয়নি। এটি একটি স্পষ্ট সংকেত যে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কাঠামোতে পরিবর্তন আসছে এবং আগের মতো এককভাবে ডলারনির্ভরতা আর নিরাপদ বিবেচিত হচ্ছে না।

ডলারের রেকর্ড পতন বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়িক আস্থায় চাপ তৈরি করেছে। আমদানি-রপ্তানি, বিনিয়োগ ও মুদ্রা নীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে এই পরিস্থিতি। ব্যবসা ও বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে এখন অধিকতর বৈচিত্র্যপূর্ণ মুদ্রানীতি ও বাজার কৌশলের দিকে নজর দিতে হচ্ছে, যাতে দীর্ঘমেয়াদে ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা যায়।

জাকারিয়া ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ