ঢাকা, বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৪ কার্তিক ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

ব্যাংক মার্জার ও এনবিএফআই বন্ধে বিনিয়োগকারীদের রক্ষায় সতর্ক বিএসইসি

শেয়ারনিউজ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ২৯ ২০:২৯:০৩
ব্যাংক মার্জার ও এনবিএফআই বন্ধে বিনিয়োগকারীদের রক্ষায় সতর্ক বিএসইসি

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ জানিয়েছেন, ব্যাংক এবং নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান (এনবিএফআই) একীভূতকরণ (মার্জার) অথবা তাদের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতিতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পুঁজি সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে কমিশন সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওস্থ বিএসইসি কার্যালয়ের মাল্টিপারপাস হলে দেশের শীর্ষ ব্রোকারহাউজের প্রধান নির্বাহীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

সংস্কারের গতিতে সন্তুষ্ট কমিশন, দ্রুত ফল আসার আশা

সভায় বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ জোর দিয়ে বলেন, কমিশন বর্তমানে পুঁজিবাজারকে আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে একাধিক সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করছে। এই সংস্কারের প্রধান ক্ষেত্রগুলো হলো মার্জিন রুল, মিউচুয়াল ফান্ডের নীতিমালা, প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) সংক্রান্ত বিধিমালা এবং কর্পোরেট গভর্ন্যান্সের নীতিমালার যুগোপযোগী পরিবর্তন।

তিনি আরও বলেন, "অতীতে সংঘটিত অনিয়মের বিচার নিশ্চিত করে বাজারের প্রতিটি স্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা ফিরিয়ে আনতে কমিশন বদ্ধপরিকর। আমরা প্রতিটি সংস্কারমূলক সিদ্ধান্ত ন্যায়সঙ্গত এবং যুক্তিযুক্ত (Reasonable and Rationable) ভিত্তির ওপর নিয়েছি। আশা করি, আগামী দুই মাসের মধ্যেই এই কাজগুলো চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন হবে।" চেয়ারম্যান বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করে বলেন, নেগেটিভ ইক্যুইটিসহ বাজারের মৌলিক সমস্যাগুলো সমাধানে কমিশন কাজ করছে এবং শীঘ্রই এর ইতিবাচক প্রভাব বাজারে দৃশ্যমান হবে। তিনি পুঁজিবাজারের অগ্রগতির জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করে একটি জবাবদিহিতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

ব্রোকারদের পক্ষ থেকে উত্থাপিত মূল দাবি ও আলোচনা

বৈঠকে উপস্থিত দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউজগুলোর প্রতিনিধিরা পুঁজিবাজারের গতি ফেরাতে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব ও সমস্যা সমাধানের দাবি উত্থাপন করেন। তাদের আলোচনার মূল বিষয়বস্তুগুলো ছিল:

পুঁজিবাজারের গতিশীলতা বৃদ্ধি এবং কারসাজি চক্রকে প্রতিরোধ করা।

একটি সুচিন্তিত পরিকল্পনার মাধ্যমে নেগেটিভ ইক্যুইটির স্থায়ী সমাধান।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের একীভূত হওয়া বা বন্ধের সময় বিনিয়োগকারীদের পুঁজির সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

অনলাইনে নতুন বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি পুনঃস্থাপন।

বাজার সংশ্লিষ্ট পলিসিতে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা ও ইলেকট্রনিক কেওয়াইসি (ই-কেওয়াইসি) দ্রুত চালু করা।

ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানি এবং বেসরকারি ভালো প্রতিষ্ঠানগুলোকে সরাসরি তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নেওয়া।

তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ঘোষিত কিন্তু এখনো অপরিশোধিত (Unpaid) লভ্যাংশের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া।

পুঁজিবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা, এক্সচেঞ্জ ও সিডিবিএল-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি।

'এক্সচেঞ্জেস ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন, ২০১৩'-এর পুনর্বিবেচনা এবং বাজারের গুজব প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ।

এই গুরুত্বপূর্ণ সভায় বিএসইসি চেয়ারম্যান ও চারজন কমিশনার ছাড়াও ডিবিএ প্রেসিডেন্ট এবং ব্র্যাক ইপিএল, আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ, ইউসিবি স্টক ব্রোকারেজ, লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ, শেলটেক ব্রোকারেজ, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক সিকিউরিটিজ, আইআইডিপিসি সিকিউরিটিজ, আইডিএলসি সিকিউরিটিজ, শান্তা সিকিউরিটিজ, ফার্স্ট ক্যাপিটাল সিকিউরিটিজ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক সিকিউরিটিজ, ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজ, মার্কেন্টাইল সিকিউরিটিজ, সিটি ব্রোকারেজ, ইউনাইটেড ফাইন্যান্সিয়াল ট্রেডিং কোম্পানি, ইবিএল সিকিউরিটিজ ও প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ