ঢাকা, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

কিডনির সমস্যায় শরীরে যে ৭টি লক্ষণ দেখা যায়, জেনেনিন সময় থাকতেই

লাইফ স্টাইল ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৫ ০৯:৪৪:৫৬
কিডনির সমস্যায় শরীরে যে ৭টি লক্ষণ দেখা যায়, জেনেনিন সময় থাকতেই

মানবদেহে কিডনি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে—রক্ত পরিশোধন, বর্জ্য পদার্থ বের করে দেওয়া, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও শরীরের তরল ভারসাম্য বজায় রাখা। কিন্তু কিডনি নষ্ট হওয়ার প্রাথমিক লক্ষণগুলো বেশ সূক্ষ্ম, যা অনেক সময় আমরা বুঝতেই পারি না। এজন্য একে ‘নীরব ঘাতক’ বলা হয়। সময়মতো লক্ষণগুলো শনাক্ত করলে ভয়াবহ জটিলতা রোধ করা সম্ভব।

কিডনি কেন এত গুরুত্বপূর্ণ

দেহের রক্তপ্রবাহ থেকে প্রতিদিন প্রায় ২০০ লিটার রক্ত ছেঁকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয় কিডনি। এছাড়া এটি শরীরের পানি, সোডিয়াম, পটাসিয়াম ও অ্যাসিডের ভারসাম্য রক্ষা করে। কিন্তু কিডনির কার্যকারিতা ব্যাহত হলে শরীরে নানান অস্বাভাবিক উপসর্গ দেখা দেয়—যা অনেকেই প্রাথমিকভাবে অবহেলা করেন।

কিডনি সমস্যার প্রধান লক্ষণসমূহ১️ মূত্রের পরিমাণ হঠাৎ কমে যাওয়া

যদি প্রতিদিনের মূত্রের পরিমাণ হঠাৎ কমে যায়, তবে তা কিডনির অকার্যকারিতার ইঙ্গিত হতে পারে।বিশেষ করে মূত্রে যদি সাদা ফেনা দেখা যায়, তবে বুঝতে হবে মূত্রে প্রোটিন মিশছে, যা কিডনির ফিল্টারিং প্রক্রিয়া দুর্বল হওয়ার লক্ষণ।

২ শরীরে অস্বাভাবিক ফোলাভাব

পায়ের পাতা, গোড়ালি, হাত বা মুখে ফুলে যাওয়া কিডনি সমস্যার অন্যতম ইঙ্গিত। কিডনি ঠিকভাবে কাজ না করলে দেহে অতিরিক্ত তরল ও বর্জ্য জমে গিয়ে ফোলাভাব সৃষ্টি হয়।

৩️ অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতা

সব সময় ক্লান্তি অনুভব করলে তা কিডনির দুর্বলতার কারণ হতে পারে। কিডনি রক্তে ইরিথ্রোপয়েটিন (EPO) নামক হরমোন তৈরি করে, যা লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনে সহায়তা করে। এটি কমে গেলে রক্তস্বল্পতা (Anemia) ও অবসাদ দেখা দেয়।

৪️ রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া

কিডনি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। হঠাৎ উচ্চ রক্তচাপ বা বারবার প্রেসার ওঠানামা করলে কিডনি সমস্যার সম্ভাবনা থাকতে পারে।

৫️ চোখের নিচে ফোলা ভাব

প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর চোখের নিচে ফুলে থাকা বা ডার্ক সার্কেল বৃদ্ধি পাওয়া কিডনির সমস্যার প্রাথমিক ইঙ্গিত হতে পারে। কারণ, শরীরের অতিরিক্ত তরল জমে এই ফোলাভাব সৃষ্টি হয়।

৬️ মূত্রে রঙের পরিবর্তন বা দুর্গন্ধ

মূত্র যদি ঘোলা, বাদামি বা লালচে রঙের হয় এবং দুর্গন্ধ ছড়ায়, তাহলে তা কিডনির সংক্রমণ বা ক্ষতির ইঙ্গিত দিতে পারে।

৭️ অল্প খাওয়া সত্ত্বেও ওজন বৃদ্ধি

দেহে তরল জমে থাকলে হঠাৎ ওজন বাড়তে পারে, যা কিডনির কাজ ব্যাহত হওয়ার ফল।

চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া কেন জরুরি

এই উপসর্গগুলোর যেকোনো একটি বারবার দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। রক্ত পরীক্ষা (Creatinine, BUN), প্রস্রাব পরীক্ষা এবং আলট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে কিডনির অবস্থা নির্ণয় করা সম্ভব।প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত হলে ওষুধ ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে কিডনি সুস্থ রাখা যায়।

কিডনি ভালো রাখতে যা করবেন

পর্যাপ্ত পানি পান করুন (প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস)

অতিরিক্ত লবণ ও প্রক্রিয়াজাত খাবার কমান

উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন

অযথা ব্যথানাশক ওষুধ সেবন এড়িয়ে চলুন

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ