ঢাকা, রবিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

MD. Razib Ali

Senior Reporter

কিডনি বিকল: বিপদ বাড়াবে ৫ খাবার! কী খাবেন, কী খাবেন না

লাইফ স্টাইল ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ নভেম্বর ২৩ ২০:০৫:২৭
কিডনি বিকল: বিপদ বাড়াবে ৫ খাবার! কী খাবেন, কী খাবেন না

কিডনির সমস্যা একবার ধরা পড়লে জীবনযাত্রায়, বিশেষত খাদ্যভ্যাসে, আনতে হয় আমূল পরিবর্তন। অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, অপর্যাপ্ত জলপান এবং বাইরের খাবারের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি— এসবই কিডনি সংক্রমণ বা পাথর জমার ঝুঁকি বাড়ায়। এই রোগ যেকোনো বয়সেই আসতে পারে। তাই রোগ নির্ণয়ের পর বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মেনেই ডায়েট চার্ট তৈরি করা অত্যাবশ্যক।

অ্যাকিউট কিডনি ইনজুরি (AKI) নাকি ক্রনিক কিডনি ফেলিয়োর (CKF)— ঠিক কী ধরনের জটিলতা তৈরি হয়েছে, তা আগে জানতে হবে।

ডায়েট শুরুর আগে কী করবেন?

কিডনি সংক্রান্ত কোনো জটিলতা দেখা দিলেই সর্বপ্রথম রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা করানো জরুরি। এর মাধ্যমে প্রোটিন, ক্রিয়েটিনিন, পটাশিয়াম, সোডিয়াম, ফসফরাস এবং শর্করার মাত্রা যাচাই করা হয়।

রোগের প্রকারভেদ (AKI নাকি CKF) নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর ওপর ভিত্তি করেই একজন পুষ্টিবিদ রোগীর দৈনিক খাদ্যতালিকা ঠিক করেন।

প্রোটিন সংক্রান্ত নির্দেশিকা: AKI রোগীদের ক্ষেত্রে প্রোটিন গ্রহণে সেভাবে কঠোরতা থাকে না। কিন্তু ক্রনিক কিডনি ডিজ়িজ় (CKD) আক্রান্তদের জন্য প্রোটিনের মাত্রা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। তবে যদি রোগীর ডায়ালিসিস চলে, সেক্ষেত্রে খাবারে প্রোটিনের পরিমাণ বাড়ানোর প্রয়োজন পড়ে।

আসুন জেনে নেওয়া যাক, কিডনির সমস্যা দেখা দিলে কোন ৫ ধরনের খাবার বা অভ্যাস কঠোরভাবে বর্জন করা উচিত।

১) চিকিৎসকের নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে বেশি তরল পান

কিডনি রোগীদের জন্য সবচেয়ে আগে জরুরি হলো, দিনে কতটা জল পান করবেন তা নিশ্চিত করা। চিকিৎসকের বেঁধে দেওয়া জলের পরিমাণের চেয়ে এক ফোঁটা বেশি তরল গ্রহণ করা চলবে না। অতিরিক্ত জল বা তরল এই রোগীদের জন্য ক্ষতিকারক। নরম পানীয় (soft drinks), অ্যালকোহল-যুক্ত ড্রিঙ্ক এবং এনার্জি ড্রিঙ্কও সম্পূর্ণরূপে বর্জনীয়।

২) বিপজ্জনক পটাসিয়াম ও ফসফরাস-সমৃদ্ধ খাদ্য

এই দুটি খনিজ পদার্থ (পটাশিয়াম ও ফসফরাস) কিডনি রোগীদের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করতে পারে। তাই যেসব ফল ও সবজিতে এদের পরিমাণ বেশি, তা খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে।

ফল: কলা, আম, খেজুর, কমলালেবুর মতো উচ্চ পটাশিয়াম-যুক্ত ফল খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে।

সবজি: আলু এবং টম্যাটোর মতো সবজি বর্জন করা ভালো। সবুজ শাকসবজি সাধারণত না খাওয়াই উচিত। যদি খেতেই হয়, তবে বিশেষ পদ্ধতি মানতে হবে: প্রথমে শাক কুচি করে কেটে জলে ভিজিয়ে রাখতে হবে। সেই জল ফেলে দিয়ে গরম জলে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখুন। এরপর গরম জল ছেঁকে ফেলে দিয়ে তবেই সেটি রান্না করা নিরাপদ।

৩) দুগ্ধজাত দ্রব্য এবং ডাল-বীজ জাতীয় খাবার

পনির, ছানা, দই-এর মতো দুগ্ধজাত খাদ্য এবং ডাল বা বিভিন্ন বীজজাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমাণে ফসফরাস থাকে। এই কারণে কিডনি রোগীদের এসব খাবার থেকে দূরে থাকা বুদ্ধিমানের কাজ।

৪) প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে আসক্তি

চিকিৎসকরা সাধারণত কম সোডিয়াম গ্রহণের পরামর্শ দেন। রান্নার নুন মেপে দেওয়ার পাশাপাশি, সস্, আচার, চিপ্‌স, চিজ়ের মতো প্রিজ়ারভেটিভযুক্ত প্যাকেটজাত এবং প্রক্রিয়াজাত খাদ্য একেবারেই খাওয়া চলবে না।

৫) চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যথানাশক ওষুধ

মাথা বা পায়ে ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া যথেচ্ছ বেদনানাশক ওষুধ খাওয়া একদমই উচিত নয়। এই ধরনের ওষুধ কিডনির রোগীদের শরীরে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। তাই এই বিষয়ে সতর্ক থাকা আবশ্যক।

গুরুত্বপূর্ণ সতর্কতা: যদিও এই প্রতিবেদনটি জনসচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে, তবুও মনে রাখবেন— প্রতিটি কিডনি রোগীর ডায়েট আলাদা হয়। নেফ্রোলজিস্ট অথবা ডায়েটিশিয়ানের সুস্পষ্ট নির্দেশ ছাড়া নিজের খাদ্যতালিকায় কোনো পরিবর্তন আনা চরম বিপদ ডেকে আনতে পারে।

আল-মামুন/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ