শুরুতেই বিশাল ধাক্কা খেয়েছে মোহামেডান দেখুন সর্বশেষ স্কোর

আবাহনীর সংগ্রহ করা ১৯২ রান এবারের টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড।

প্রথম লেগে তার বিপক্ষে লেগবিফোর উইকেটের আবেদন নাকচ হওয়া নিয়ে কী যাচ্ছেতাই কাণ্ডটাই না ঘটিয়েছিলেন সাকিব। দিন শেষে মোহামেডান-আবাহনী দ্বৈরথ ছাপিয়ে অনেক বড় হয়ে দেখা দেয় সাকিবের সেই লাথি মেরে উইকেট ভাঙ্গা, আবার ছুটে এসে রেগেমেগে উইকেট উপরে ফেলে আছাড় মারার ঘটনা।

ওই দৃষ্টিকটু আর চরম অখেলোয়াড়ীচিত আচরণ ঢেকে দিয়েছিল খেলার ফলকেও। যেখানে ৫ বছর পর লিগে চির প্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীকে হারিয়েছিল মোহামেডান। সে ম্যাচে মুশফিকের বল সমান ১৮ রানের ইনিংস কোন কাজে আসেনি। মিস্টার ডিপেন্ডেবল দলকে টেনেও নিতে পারেননি।

হয়ত সেদিনই ‘ধনুর্ভঙ্গ’ পণ করেছিলেন মুশফিক, ‘যে করেই হোক মোহামেডানের সাথে সুপার লিগে আমি ঠিক ভাল খেলবো এবং দলের সাফল্যে কার্যকর অবদান রাখতে সাধ্যমত চেষ্টা করবো।’

বাস্তবে করেছেনও তাই। অধিনায়ক মুশফিকের চওড়া ব্যাটে মতিঝিলের ঐতিহ্যবাহী সাদা-কালোদের বিপক্ষে ১৮৭ রানের বিশাল স্কোর গড়েছে আকাশী হলুদরা।

বলে রাখা ভাল এটাই এবারের লিগের সর্বোচ্চ দলগত সংগ্রহ। আগের সর্বোচ্চ স্কোরটাও (১৮৩ ) আবাহনীর। সেটা প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে এই শেরে বাংলাতেই। এছাড়া শাইন পুকুরের বিপক্ষে ১৮১ রান করার রেকর্ডও আছে মুশফিক বাহিনীর।

সাধারণতঃ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে কোন দলের ১৯০ প্লাস রান মানেই অন্তত একজোড়া ফিফটি বা অন্তত একটি বড় ইনিংস। আজ মোহামেডানের বিপক্ষে তা নেই আবাহনীর। বড় ইনিংস বলতে মুশফিকের ৩২ বলে ৫৭।

তবে এর বাইরে আরও একটি ইনিংস আছে, যা আবাহনীকে চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে এবারের লিগে সর্বোচ্চ স্কোর গড়তে রেখেছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। সেটা মুনিম শাহরিয়ারের। ময়মনসিংহের এ ২৩ বছরের তরুণ ওপেনার ২৭ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলে দলকে শক্ত ভিত গড়ে দেন।

প্রায় ম্যাচে পাওয়ার প্লে কাজে লাগিয়ে আবাহনীকে শক্ত ভিত গড়ে দেয়ার কাজ করেছেন তরুণ মুনিম শাহরিয়ার। আজও তার ব্যাট ছিল সাবলীল। মোহামেডানের উদ্বোধনী বোলার আবু হায়দার রনির করা ম্যাচের প্রথম ওভারে তিনটি বাউন্ডারি মেরেই মাঠ মাতিয়েছেন মুনিম শাহরিয়ার।

তার ব্যাটের ধারা এতটাই সচল ছিল যে, তার সাথে ওপেন করা লিটন দাসকেও মনে হয়েছে ম্লান। প্রথম উইকেটে ৩.১ ওভারে ২৮ রান ওঠে আবাহনীর, সেখানে লিটনের অবদান ছিল মোটে ৪।

মোহামেডানের বাঁ-হাতি পেসার রুয়েল মিয়ার বলে ফ্লিক করতে গিয়ে লেগবিফোর উইকেটের ফাঁদে জড়ান এবারের লিগে প্রথম মাঠে নামা লিটন। ওয়ান ডাউন নাজমুল হোসেন শান্তও মুনিম শাহরিয়ারের সাথে ভাল সঙ্গ দিয়েছেন। দুজনে মিলে রানের চাকা সচল করেন।

শান্তও খেলেন ১৭ বলে ২৭ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস। ওই ইনিংসটি বড় না হলেও আবাহনীর জন্য অনেক কার্যকর ছিল। মোহামেডান অধিনায়ক শুভাগত হোমের এক ওভারে দুই ছক্কা হাঁকিয়ে তাকে অফ করে দেয়ার কাজটি করেন শান্ত।

সপ্তম ওভারে আসিফ হোসেনের বলে লং অনের ওপর দিয়ে আবার ছক্কা হাঁকানো বাঁ-হাতি শান্ত আউট হন পেসার আবু জায়েদ রাহীর বলে। অফ স্ট্যাম্পের ঠিক বাইরে ড্রাইভ খেলতে গিয়ে হন কট বিহাইন্ড।

এরপর নাইম শেখও ঝড় তুলে বিদায় নেন। ১৮ বলে ২৪ করার পর বাঁ-হাতি স্পিনার আসিফ হোসেনের এক ওভারে বাউন্ডারি, তারপর ছক্কা ও ডাবলস নিয়ে ওয়াইড বলে স্ট্যাম্পড হন বাঁ-হাতি আসিফ। এরপর যা করার করেছেন অধিনায়ক মুশফিক।

মোসাদ্দেক (৯ বলে ১৪) আর আফিফও (৯ বলে ১০) তেমন কিছু করতে পারেননি। কিন্তু আবাহনী ক্যাপ্টেন শেষ বল পর্যন্ত উইকেটে থেকে রান গতি বাড়ান। মোহামেডান বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার রনির আলগা বোলিং আবাহনী ব্যাটসম্যানদের হাত খুলে খেলতে বড় ভূমিকা রাখে।

প্রায় টানা খাট লেন্থে বল ফেলেছেন আবু হায়দার রনি। তার ৪ ওভারে ওঠে ৫০ রান। আবাহনীর ব্যাটসম্যানদের দিনে মোহামেডানের বোলারদের মধ্যে একজনই শুধু ভাল বল করেছেন। তিনি বাঁ-হাতি পেসার রুয়েল মিয়া। ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট দখল করেন সিলেটের এ পেসার।

মোহামেডান: সর্বশেষ স্কোর ৩৭/৪ (৫.৪ ওভার )