হাসান আলি ও শাহিন আফ্রিদির জায়গাই মিরাজ-সাকিব, ইতিহাসের পূনার্বৃতি

দুইবারে মিলে সেই রানটিও করতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। দুই ইনিংসে ১৭৬ ও ১৩৪ রানে অলআউট হয়ে হেরেছিল ইনিংস ও ১১৬ রানে। সেখানে বাংলাদেশের পুুঁজি ৪৬৮। পাকিস্তানের সেই স্কোরের চেয়ে ৪২ রান বেশি।

কিন্তু ওই সোয়া চারশ’ রান করেও পাকিস্তানিরা ইনিংস জয় পেয়েছিল পেসার হাসান আলির দুর্দান্ত বোলিংয়ে। প্রথম ইনিংসে আরেক দ্রুতগতির বোলার শাহিন আফ্রিদির সাথে সমান ৪টি (৫৩ রানে) আর পরের ইনিংসে মাত্র ৩৬ রানে ৫ উইকেট দখল করে জিম্বাবুইয়ানদের নাকাল করে ছাড়েন হাসান আলি।

দেখার বিষয় ছিল, বাংলাদেশের হয়ে হাসান আলির ভূমিকা নেন কে? অনেকটা কাকতালীয়ভাবেই পাকিস্তানের হাসান আলি আর শাহিন আফ্রিদির প্রথম ইনিংসে ৪+৪=৮ উইকেট নেয়ার ভূমিকায় দেখা গেল বাংলাদেশের দুই স্পিনারকে-সাকিব আল হাসান আর মেহেদি হাসান মিরাজ। সাকিব ৪টি আর মিরাজ ৫টি, দুজন মিলে নিলেন ৯ উইকেট। এবার দ্বিতীয় ইনিংসে হাসান আলির মতো ৫ উইকেট শিকার কে করেন, সেটাই দেখার।

প্রথম ইনিংসে পেসার তাসকিন আহমেদ আর এবাদত হোসেন কিছু করতে না পারলেও দুই স্পিনার মিরাজ আর সাকিবই যা করার করেছেন। প্রথম সেশনে মিরাজ ব্রেন্ডন টেলরকে (৮১) ফিরিয়ে দিলেও সেভাবে প্রভাব ফেলতে পারেননি।

কিন্তু সময় গড়ানোর সাথে সাথে হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে শুরু হয় মিরাজ আর সাকিব ম্যাজিক। এ দুই স্পিনারের ঘূর্ণি বলে একের পর এক সাজঘরে জিম্বাবুইয়ানরা। ২ উইকেটে ২২৫ রান থাকা দলটি কিনা শেষ পর্যন্ত অলআউট হয়েছে ২৭৬ রানে!

এই ১০ উইকেটের ৯ টিই তুলে নিয়েছেন দুই স্পিনার মিরাজ আর সাকিব। মিরাজের ঝুলিতে জমা পড়েছে ৫ উইকেট। আর সাকিব পতন ঘটিয়েছেন ৪ উইকেটের।

সকালের সেশনে ব্রেন্ডন টেলরকে ৮৭ রানে সাজঘরে পাঠিয়ে জিম্বাবুয়ে শিবিরে প্রথম ধাক্কাটা দিয়েছেন মিরাজ। আবার শেষ দিকে টেলর বাহিনীর ব্যাটিং লেজও মুরিয়ে দিয়েছেন মিরাজ।

লাঞ্চের এক ঘন্টা পর হঠাৎ মাত্র ৪ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বেকায়দায় পরে যায় টেলরের দল। সেই যে পেছনে পড়া, সেখান থেকে আর সামনে আগানো সম্ভব হয়নি। এরপর শেষ দিকের ব্যাটসম্যানরা মিরাজের বলে চোখে সর্ষে ফুল দেখেন।

জিম্বাবুয়ের শেষ ৫ উইকেটের পতন ঘটে মাত্র ১৫ রানে। ফলোঅনে ফেলা সম্ভব হয়নি একটুর জন্য। তাতে কী? আজ তৃতীয় দিনই মিরাজ আর সাকিবের বল খেলতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠেছে স্বাগতিক মিডল ও লোয়ার অর্ডারদের। কাল শনিবার চতুর্থ দিন আর পরে পঞ্চম দিন হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠের পিচে বাংলাদেশের স্পিনারদের খেলা খুব কঠিন হবে।

দেখা যাক, প্রথম ইনিংসে ১৯২ রানে এগিয়ে থাকা মুমিনুলের দল কত রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় ব্রেন্ডন টেলরের দলকে। মিরাজ-সাকিব দুজনার সামনেই আছে হাসান আলীর মত ফিনিশিং টাচ দেয়ার সুযোগ। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কে নেন হাসান আলীর ভূমিকা!