বাংলাদেশে বড় ভূমিকম্পের শঙ্কা
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ প্রকৃতির এক বিস্ময়, কিন্তু একই সঙ্গে এক বিশাল ঝুঁকির সম্মুখীন। ভূপৃষ্ঠের নিচে নিরব প্রতিনিয়ত চলতে থাকা পরিবর্তন যে কোনো সময় নিয়ে আসতে পারে ধ্বংসযজ্ঞ। তিনটি টেকটোনিক প্লেট—ইন্ডিয়া প্লেট, বার্মা প্লেট এবং ইউরেশিয়ান প্লেট—এর সংযোগস্থলে অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ ভূমিকম্পের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
ভূমিকম্পের সম্ভাব্যতা ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা
কলম্বো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে, ইন্ডিয়া প্লেট পূর্বদিকে ও বার্মা প্লেট পশ্চিম দিকে সরে যাচ্ছে, ফলে প্রতিবছর ১ থেকে দেড় মিটার সংকোচন হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ৮.২ থেকে ৯ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে।
ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কুমিল্লার মতো ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা শহর অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠার কারণে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। এক শতাংশ ভবনও যদি ধসে পড়ে, তবে প্রাণ হারাতে পারে দুই লাখেরও বেশি মানুষ। পাঁচ থেকে সাত লাখ মানুষ ভবনের ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়তে পারে। ভূমিকম্প-পরবর্তী সময়ে খাদ্য সংকট, অগ্নিকাণ্ড ও চিকিৎসার অভাবে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।
ইতিহাসের পাতায় বিধ্বংসী ভূমিকম্প
বাংলাদেশের ভূমিকম্পের ইতিহাস বেশ পুরনো। ১৭৬২ সালের গ্রেট আরকান ভূমিকম্প (৮.৫ মাত্রা) এবং ১৮৯৭ সালের আসাম ভূমিকম্প (৮.৭ মাত্রা) এই অঞ্চলের জন্য সবচেয়ে বড় বিপর্যয় ছিল। এসব ভূমিকম্পে চট্টগ্রাম, ফেনী ও কুমিল্লার মতো অঞ্চল ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তবে তখনকার সময়ে জনসংখ্যা কম থাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম ছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি ভিন্ন—একটি বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে যে ধ্বংস আসবে, তা কল্পনাতীত।
সরকারের উদ্যোগ ও প্রস্তুতি
২০০৮ সালে হাইকোর্টের নির্দেশে ভূমিকম্প মোকাবিলার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়। পাশাপাশি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর ফায়ার সার্ভিস, সিভিল ডিফেন্স ও সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বাড়াতে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এগুলো ভূমিকম্প-পরবর্তী উদ্ধারকাজের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে, ভূমিকম্পের আগে প্রস্তুতির দিকটি এখনো অবহেলিত।
আমাদের করণীয় ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলাদেশ এখনো ভূমিকম্প মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত প্রস্তুতি গ্রহণ করেনি। ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং সামাজিক পর্যায়ে সচেতনতা তৈরি করা জরুরি। ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, "সরকার যদি স্মার্টফোনের মাধ্যমে ভূমিকম্প মোকাবিলার প্রশিক্ষণমূলক গেম চালু করে, তবে তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে জনগণ কীভাবে ভূমিকম্পে নিরাপদে থাকতে হবে তা শিখে যাবে।" পাশাপাশি, নিয়মিত মহড়া ও শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার গুরুত্বও তুলে ধরেছেন তিনি।
সরকার ভূমিকম্প-পরবর্তী উদ্ধার তৎপরতার জন্য পরিকল্পনা করলেও, ভূমিকম্পের আগে প্রস্তুতির জন্য আরও বড় পরিসরে কাজ করা জরুরি। ভূমিকম্প-সহনশীল অবকাঠামো গড়ে তোলা, নির্মাণ কোড কঠোরভাবে মেনে চলা এবং জনসচেতনতা বাড়ানো ছাড়া বিপর্যয় রোধ করা সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ একটি ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ—এ সত্য অস্বীকার করার সুযোগ নেই। এখনই কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে যে ধ্বংস নেমে আসবে, তার জন্য আমরা প্রস্তুত কি?
মো: রাজিব আলি/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- IPL 2026 মিনি-নিলাম: তারিখ, সময়, বাজেট ও লাইভ স্ট্রিমিং - এক নজরে সব তথ্য
- আজআইপিএল নিলাম 2026: কখন, কোথায় ও কীভাবে দেখবেন Live
- আজ IPL Auction 2026: কখন, কোথায় ও কীভাবে দেখবেন লাইভ
- আইপিএল নিলাম ২০২৬: দেখুন এখন পর্যন্ত দল পেলেন যারা ও মুস্তাফিজের অবস্থান
- আইপিএল নিলাম ২০২৬: এখন পর্যন্ত দল পেলেন যারা, জানুন মুস্তাফিজ ও রিশাদের অবস্থান
- আইপিএল নিলাম ২০২৬: দল পেলেন মুস্তাফিজের সতীর্থ
- IPL Auction 2026: কবে, কখন, কোথায় ও কীভাবে দেখবেন লাইভ
- আইপিএল নিলাম ২০২৬ : কখন, কোথায় ও কীভাবে দেখবেন লাইভ
- আইপিএল নিলাম আজ: মুস্তাফিজের ২ কোটির ভিত্তিমূল্য, জানুন এক নজরে সকল তথ্য
- ভারত বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা তৃতীয় টি-২০: ম্যাচটি সরাসরি Live দেখুন এখানে
- আজকের সোনার দাম: (সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫)
- bbl live- হোবার্ট হারিকেনস বনাম সিডনি থান্ডার: বোলিংয়ে রিশাদ, দেখুন Live
- হোবার্ট হারিকেনস বনাম সিডনি থান্ডার: ব্যাটিংয়ে রিশাদরা, সরাসরি দেখুন Live
- বিএসইসি’র নিরীক্ষা নীতিমালা কমিটি গঠন, পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা জোরদার
- আইপিএল নিলাম ২০২৬: সরাসরি দেখুন Live