ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২

হাসনাতের সেনাবাহিনী-বিষয়ক মন্তব্যে বিতর্ক, নাহিদের জবাবে সরগরম রাজনীতি

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ মে ০৮ ১২:৩৭:০৭
হাসনাতের সেনাবাহিনী-বিষয়ক মন্তব্যে বিতর্ক, নাহিদের জবাবে সরগরম রাজনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার মাঝে সেনাবাহিনীকে ঘিরে এক নতুন বিতর্কের জন্ম দিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চল সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। তাঁর সাম্প্রতিক মন্তব্য ঘিরে রাজনীতির ময়দানে শুরু হয়েছে আলোচনার ঝড়। আর এই বিতর্কে পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় মুখ খুলেছেন দলের উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক নাহিদ ইসলাম, যার বক্তব্য নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

সেনাবাহিনী ‘রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ’ করছে—হাসনাতের অভিযোগ

এক আলোচনায় হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন,

“রাজনীতি রাজনীতিবিদদেরই নির্ধারণ করা উচিত। সেনাবাহিনীর উচিত নয় রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা।”

তিনি দাবি করেন, গত ৫ আগস্টের ঘটনার পর সেনাবাহিনী ছাত্র-জনতার সঙ্গে এক ধরনের "আওয়ামী বিরোধী অবস্থান" নিয়েছিল। সেই প্রসঙ্গ টেনে সতর্ক করে বলেন,

“আমি সেনাবাহিনীকে অনুরোধ করবো—আপনারা কখনোই জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না।”

এই বক্তব্যের পরপরই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে—এটা কি কোনো বিশেষ বার্তা নাকি কৌশলগত চাপ সৃষ্টির চেষ্টা?

আরও পড়ুন:রাজনীতিতে নতুন জল্পনা: দেশ ছাড়লেন সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ

নাহিদের পাল্টা জবাব: “সেনাবাহিনী নিয়ে অপপ্রচার দেশের জন্য হুমকি”

হাসনাতের মন্তব্যে প্রকাশ্যে অসন্তোষ জানান এনসিপির আরেক গুরুত্বপূর্ণ নেতা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন,“সেনাবাহিনী দেশের জন্য অমূল্য সম্পদ। তারা সবসময় সংবিধান ও আইনের আওতায় কাজ করে। তাদের নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা দেশের নিরাপত্তার জন্য হানিকর হতে পারে।”

তিনি আরও বলেন,

“সেনাবাহিনী যদি তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন না করে, তবে গণতন্ত্র ও আইনশৃঙ্খলা—উভয়ই হুমকির মুখে পড়ে যাবে।”

নাহিদের মতে, বর্তমান সময়ে সেনাবাহিনীর ভূমিকা জনকল্যাণমুখী এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এদের নিয়ে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য এক ধরনের অপপ্রচার ছাড়া আর কিছুই নয়।

সেনাবাহিনী নিয়ে অভ্যন্তরীণ মতপার্থক্য?

দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতার পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে প্রশ্ন উঠছে—এটা কি এনসিপির মধ্যে কোনো কৌশলগত মতবিভাজনের ইঙ্গিত? নাকি এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিতর্ক তৈরির কৌশল?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন সময় যখন দেশের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে সাধারণ মানুষও সংবেদনশীল, তখন এমন মন্তব্য জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে।

নাকি কিছু রাজনৈতিক শক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে এমন বার্তা ছড়িয়ে সেনাবাহিনীকে বিতর্কে জড়াতে চাইছে?

হাসনাত আবদুল্লাহ ও নাহিদ ইসলামের বক্তব্য কেবল ব্যক্তিগত মত নয়—এগুলো বাংলাদেশের রাজনীতির ভেতরের টানাপোড়েন ও অবস্থান গ্রহণের বহিঃপ্রকাশ। সেনাবাহিনী নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়, তবে এবার আলোচনার কেন্দ্রে এনসিপির দুই নেতার বিপরীতমুখী বক্তব্য দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে—এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।

জামিরুল ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ