বিএনপির ৪ নেতার পদত্যাগ: সামনে এলো আসল কারণ

১৭ বছর দলের কর্মসূচিতে অনুপস্থিত এক নেতা, তাতেই ভাঙন?
নিজস্ব প্রতিবেদক: দলীয় পদে বহাল থেকেও যেন ছিলেন ছায়ায়—এই অভিযোগে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা বিএনপির শীর্ষস্থানীয় চার নেতা পদত্যাগ করেছেন। সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটিতে ‘আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ’ ও ‘বিতর্কিত ব্যক্তিদের’ ঠাঁই দেওয়া এবং দলবিরোধী কর্মকাণ্ডে নেতৃত্বের জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে তারা পদ ছাড়েন। শুক্রবার (১৬ মে) উলিপুর শহরের হাজী সুপার মার্কেটে এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগের ঘোষণা দেন তারা।
পদত্যাগকারী নেতারা হলেন—উপজেলা বিএনপির ৪ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম ফুলু, পৌর বিএনপির ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক দেওয়ান নূরেচ্ছোবাহ স্টার, উপজেলা কমিটির ৯ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক মতলেবুর রহমান এবং ২৫ নম্বর সদস্য আমিনুল ইসলাম।
‘যিনি নেতৃত্ব দেন, তিনিই নিষ্ক্রিয়’
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে আমিনুল ইসলাম ফুলু অভিযোগ করেন, “দলের উপজেলা আহ্বায়ক তারিক আবুল আলা চৌধুরী গত ১৭ বছরে বিএনপির কোনো কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচিতে যোগ দেননি। অথচ তিনিই কমিটির নেতৃত্বে। ধানের শীষ নিয়ে ভোটে জেতার পর তিনি নিজের অবস্থান রক্ষায় আওয়ামী ঘনিষ্ঠদের দায়িত্ব দিয়েছেন। এমনকি পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনিছুর রহমানকে প্যানেল মেয়র করে দিয়েছেন!”
ফুলুর দাবি, “জেলা পরিষদ নির্বাচনে তারিক সরাসরি আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাফর আলীর পক্ষে ভোট দিয়ে পরে তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এমন কাজ কেবল বিএনপির আদর্শ নয়, রাজনীতির ন্যূনতম নৈতিকতারও পরিপন্থী।”
বিতর্কিতদের ঠাঁই, ত্যাগীদের বাদ
নতুন কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেখানে ঠাঁই পেয়েছেন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির ঘনিষ্ঠ এবং একাধিক মামলার আসামিরা। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, ৬৩ নম্বর মামলার আসামি শহিদুল রহমানকে আহ্বায়ক কমিটির ১৮ নম্বর সদস্য করা হয়েছে।
তাদের দাবি, আওয়ামী লীগের হয়ে উপজেলা ও সংসদ নির্বাচনে সক্রিয় থাকা সাইফুল ইসলাম বাদল এবং রফিকুল ইসলাম যথাক্রমে উপজেলা ও পৌর বিএনপি কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। বাদলকে ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী প্রার্থীর প্রচারণায় মোটরসাইকেলে বসে ঘুরতে দেখা গেছে বলেও অভিযোগ।
‘কমিটি ভারসাম্যপূর্ণ’, বলছে জেলা বিএনপি
এ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। তিনি বলেন, “উলিপুর কমিটি যথেষ্ট ভারসাম্যপূর্ণভাবে গঠিত হয়েছে। যারা পদত্যাগ করেছেন, তারা কমিটিতে নিজেদের প্রত্যাশা অনুযায়ী জায়গা না পাওয়ায় এমন করছেন। এখনো কেউ লিখিতভাবে পদত্যাগপত্র জমা দেননি।”
দলেই দলবিরোধী মনোভাব!
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু জাফর সোহেল রানা, সাবেক ছাত্রদল নেতা ফিরোজ কবীর কাজলসহ অন্যান্য নেতাকর্মী। পদত্যাগকারীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে তারা বলেন, “যেখানে দলের আদর্শ পদে পদে লঙ্ঘিত হয়, সেখানে থাকা যায় না।”
স্থানীয় রাজনীতির বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ঘটনাটি উলিপুর উপজেলা বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের একটি বড় প্রকাশ। দলের মধ্যে ‘আওয়ামী ছায়া’ প্রবেশ করায় বিএনপির তৃণমূল নেতৃত্বে ক্ষোভ বাড়ছে—এমনই এক বার্তা পাওয়া গেল এই পদত্যাগ থেকে।
রাজনীতি যখন বিশ্বাসের জায়গা হারায়, তখন পদই হয় প্রতিবাদের ভাষা। উলিপুর বিএনপিতে ঠিক সেই প্রতিবাদের ধ্বনি শোনা গেল আজ।
আল-আমিন ইসলাম/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- স্বর্ণের বাজারে বড় পরিবর্তন, ভরিতে কমলো ৭,৩২৫ টাকা
- সোনার দাম কমল: ৯ মে থেকে কার্যকর নতুন মূল্য তালিকা
- “না মারলে ঘটত বড় কিছু”—নেহালের এই কথায় দেশজুড়ে তোলপাড়
- ১০ বলে ২৭ রান! রাকিবুলের ছক্কা বৃষ্টি আর জয়ের উল্লাস
- শেয়ারবাজারের ঝুঁকি নিয়ে গভর্নর সতর্ক, জানিয়ে দিলেন বিনিয়োগকারীদের
- আসন্ন বাজেটে শেয়ারবাজারে আস্থা ফেরাতে সরকারের ৭ পদক্ষেপ
- শেয়ারবাজার নিয়ে খেলা বন্ধে কঠোর শাস্তির দাবি
- শেয়ারবাজারের সংকটে এনসিপির শক্তিশালী প্রস্তাব
- ভুটানকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করল বাংলাদেশ
- শেয়ারবাজারে নাটকীয় দিন: একই শ্রেণির শেয়ার দুই চরমে
- যুদ্ধবিরতির পর কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানকে ট্রাম্পের নতুন প্রস্তাব
- বাংলাদেশ ২-২ ড্র: সাফ অনূর্ধ্ব-১৯-এ মালদ্বীপের সাথে সমতা
- শেষ ওভারে বদলে গেল ম্যাচের দৃশ্যপট, ব্যর্থ আকবরদের প্রচেষ্টা
- আজ সন্ধ্যা ৬টার আগে হতে পারে ঝড়, সতর্ক ৬ জেলা
- শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের পলায়ন: বিদেশে কোথায় আশ্রয় নিয়েছেন তারা