ঢাকা, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বিএসইসির সভায় পুঁজিবাজার উন্নয়নে ৯ দফা প্রস্তাব উত্থাপন

শেয়ারবাজার ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ মে ১৭ ২২:২৬:৪৭
বিএসইসির সভায় পুঁজিবাজার উন্নয়নে ৯ দফা প্রস্তাব উত্থাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে কাঠামোগত স্থিতিশীলতা ও দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আজ শনিবার (১৭ মে) এক পরামর্শমূলক সভার আয়োজন করে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি ভবনে আয়োজিত এ সভায় কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ সভাপতিত্ব করেন। উপস্থিত ছিলেন কমিশনারবৃন্দ, নির্বাহী পরিচালক ও পরিচালকরা।

সভায় দেশের পুঁজিবাজারের প্রধান অংশীজনদের মধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ), বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) এবং ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)-এর উচ্চপদস্থ প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

আলোচনায় পুঁজিবাজারের তারল্য, বিনিয়োগকারীদের আস্থা এবং বাজারে অংশগ্রহণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বেশ কিছু নীতিগত ও প্রণোদনামূলক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য:

তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির করহারের ব্যবধান ন্যূনতম ১০ শতাংশ নির্ধারণ

১ লাখ টাকা পর্যন্ত ডিভিডেন্ড আয়ের ওপর কর মওকুফ

নেতিবাচক ইক্যুইটির দীর্ঘমেয়াদি সমাধান কাঠামো তৈরি

বিও হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ ফি ও ক্যাপিটাল গেইনে কর মওকুফের সুপারিশ

ব্রোকারহাউজগুলোর টার্নওভারের ওপর আরোপিত অগ্রিম আয়কর (AIT) হ্রাস

বৃহৎ দেশীয়, রাষ্ট্রায়ত্ত ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করতে উৎসাহ প্রদান

সরকারি ট্রেজারি বন্ড (G-Sec) এর নিলাম প্রক্রিয়া স্টক এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তরের প্রস্তাব

বিনিয়োগকারীদের অর্থের নিরাপত্তা জোরদারে প্রয়োজনীয় রেগুলেটরি সংস্কার

সভায় আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক চলতি বছরের মিউচ্যুয়াল ফান্ড আয়ের ২০ শতাংশ প্রভিশন রেখে বাকি ৮০ শতাংশ ইউনিটহোল্ডারদের মধ্যে লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণের প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাবের লক্ষ্য হলো মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতের স্বচ্ছতা ও বিতরণ দক্ষতা বৃদ্ধি।

বিনিয়োগ-সহায়ক পরিবেশ তৈরিতে অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে বিএসইসি প্রতি মাসের শেষ বৃহস্পতিবার একটি নিয়মিত সমন্বয় সভা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়। এর মাধ্যমে নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে বাজার সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে নীতি-প্রতিক্রিয়া পদ্ধতির উন্নয়ন ঘটবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের কাঠামোগত আলোচনা বাজার সংস্কারে একটি প্রয়োজনীয় ধাপ, যা দীর্ঘমেয়াদে পুঁজিবাজারে গভীরতা ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে।

FAQ (প্রশ্নোত্তর)

প্রশ্ন ১: বিএসইসির এই বৈঠকে কতটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়?

উত্তর: মোট ৯টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়, যার মধ্যে কর ছাড়, ডিভিডেন্ড নীতিমালা ও তালিকাভুক্তি অন্যতম।

প্রশ্ন ২: কোন কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনতে বলা হয়েছে?

উত্তর: বড় দেশীয়, রাষ্ট্রায়ত্ত ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করার প্রস্তাব এসেছে।

প্রশ্ন ৩: বিনিয়োগকারীদের জন্য কী ধরনের প্রণোদনার কথা বলা হয়েছে?

উত্তর: বিও ফি ও ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স মওকুফ, নেগেটিভ ইক্যুইটির সমাধান, ডিভিডেন্ড আয়ে কর ছাড়ের প্রস্তাব করা হয়।

প্রশ্ন ৪: এই সভার ফলাফল কবে বাস্তবায়ন হবে?

উত্তর: সভায় প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে, বাস্তবায়নের বিষয়টি এখন নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সিদ্ধান্তসাপেক্ষ।

জামিরুল ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ