ঢাকা, বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

চেন্নাইয়ের হাসপাতালে জনসম্মুখে শেখ হাসিনা, যা জানা গেল

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ মে ২১ ১৭:২৯:২৮
চেন্নাইয়ের হাসপাতালে জনসম্মুখে শেখ হাসিনা, যা জানা গেল

নিজস্ব প্রতিবেদক: জনসম্মুখে অনুপস্থিত এক নেত্রী, ভারতে আশ্রয়ের গুঞ্জন, আর চোখের চিকিৎসার আড়ালে চেন্নাইয়ের হাসপাতালে দেখা—শুনলেই যেন এক রাজনৈতিক থ্রিলারের কাহিনি! এমনই এক দাবির ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে, যেখানে বলা হচ্ছে—সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের চেন্নাইয়ে মহাত্মা গান্ধী হাসপাতালে গেছেন চোখের চিকিৎসা করাতে। কড়া নিরাপত্তায় ঘেরা ভিডিওটি ঘিরে ছড়িয়েছে জল্পনা, সন্দেহ আর তীব্র কৌতূহল।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢেউয়ে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা এরপর থেকে জনচোখের অন্তরালে। অনেকের ধারণা, তিনি ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন। সেই প্রেক্ষাপটেই হঠাৎ একটি ‘চিকিৎসা-ভিত্তিক’ ভিডিও যেন নতুন করে আগুনে ঘি ঢালে।

তবে বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। বাংলাদেশের প্রখ্যাত তথ্য যাচাইকারী সংস্থা রিউমর স্ক্যানার ভিডিওটির পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে জানায়—এটি একেবারেই ভুয়া প্রেক্ষাপটে উপস্থাপিত।

আসলে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরের, যখন শেখ হাসিনা ১১ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে যান। সেই সফরে তিনি প্রথমে কানাডার মন্ট্রিলে ‘গ্লোবাল ফান্ড রিপ্লেনিশমেন্ট কনফারেন্স’-এ অংশ নেন এবং পরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে যোগ দেন। ভাইরাল হওয়া দৃশ্যটি তোলা হয়েছিল তখনই—শেখ হাসিনার নিউইয়র্কে পৌঁছানোর মুহূর্তে।

চেন্নাইয়ের হাসপাতালের সঙ্গে ভিডিওটির কোনো সম্পর্ক নেই। নেই চিকিৎসার প্রসঙ্গ বা ভারতের নিরাপত্তা বলয়ের কোনো সাম্প্রতিক চিহ্ন।

তথ্য বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নেতৃত্বশূন্যতার আবহে সামাজিক মাধ্যমে গুজব ছড়ানো এখন নতুন অস্ত্র। একদম পুরনো ফুটেজ ঘষামাজা করে তা উপস্থাপন করা হচ্ছে বর্তমানের নাটকীয় ঘটনার রূপে।

তাই প্রশ্ন উঠেছে—এসব ভিডিওর উদ্দেশ্য কী? রাজনৈতিক আবেগ নাড়ানো, বিভ্রান্তি তৈরি করা, না কি আসল ঘটনার আড়ালে মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠা করা?

উত্তর হয়তো সময় দেবে, তবে আপাতত সত্যটা স্পষ্ট: শেখ হাসিনাকে চেন্নাইয়ের হাসপাতালে দেখা গেছে—এই দাবি সত্য নয়।

এখন সময় এসেছে আরো সচেতন হওয়ার। প্রতিটি শেয়ার বা ফরোয়ার্ড করার আগে একবার প্রশ্ন করুন—এটা সত্য তো? বিভ্রান্তির ভিড়ে সঠিক তথ্যই হোক পাঠকের মূল ভরসা।

জাকারিয়া ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ