ঢাকা, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

‘এই হাইকোর্টের দরকার কী?’– সারজিসের স্ট্যাটাস ঘিরে তোলপাড়

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ মে ২২ ১২:১৫:০৫
‘এই হাইকোর্টের দরকার কী?’– সারজিসের স্ট্যাটাস ঘিরে তোলপাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের শপথগ্রহণে আর কোনো আইনগত বাধা রইল না। হাইকোর্টের রায়ে বাতিল হয়ে গেল তার বিরুদ্ধে দায়ের করা রিট। কিন্তু আইনি নিষ্পত্তির পর শুরু হলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরেক দফা আলোচনার ঝড়—বিতর্কের কেন্দ্রে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিসি) এক নেতার ‘বিস্ফোরক’ স্ট্যাটাস।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুরে হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে শপথ নিতে না দেওয়ার এক রিট আবেদন খারিজ করে দেয়। বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায়ের বেঞ্চ এই আদেশ দেন। রায়ের পর ইশরাকের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন জানান, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, এখন আর শপথ গ্রহণে কোনো বাধা নেই। বরং ২৬ মে’র মধ্যে শপথ না নিলে বিষয়টি আদালত অবমাননার পর্যায়ে পড়বে।

কিন্তু এখানেই শেষ নয়। আদালতের এই রায়কে ঘিরে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিসি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি লেখেন,

“মব তৈরি করে যদি হাইকোর্টের রায় নেওয়া যায় তাহলে এই হাইকোর্টের দরকার কী?”

তার এ বক্তব্য মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে পড়ে। শুরু হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া, মতবিনিময় ও রাজনৈতিক তর্জা।

বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, সারজিস আলমের এই স্ট্যাটাস সরাসরি আদালতের নিরপেক্ষতা ও স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। কেউ এটিকে গণতান্ত্রিক হতাশার ভাষ্য বলে মেনে নিচ্ছেন, আবার অনেকে একে আদালতের প্রতি অবমাননাকর ও অশোভন আক্রমণ হিসেবেই দেখছেন।

উল্লেখ্য, ইশরাক হোসেন বিএনপির একজন উদীয়মান নেতা হিসেবে পরিচিত। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাম্প্রতিক নির্বাচনে তিনি জয়ী হন, কিন্তু তার নির্বাচনী বৈধতা ও শপথ গ্রহণ ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছিল দ্বন্দ্ব, সন্দেহ ও মামলা। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই দায়ের হয় রিট।

আইনজীবীদের মতে, রিট খারিজের মাধ্যমে আদালত পরিষ্কার করে দিয়েছে যে নির্বাচিত প্রতিনিধির শপথ গ্রহণের সাংবিধানিক অধিকার অস্বীকার করা যায় না। তবে আদালতের এই অবস্থানকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে—এবার বিচারব্যবস্থাই যেন রাজনীতির ময়দানে পড়ে গেল।

সারজিস আলমের স্ট্যাটাস নিয়ে এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। প্রশ্ন উঠছে—এই বক্তব্য কি বিচারব্যবস্থার বিরুদ্ধে আস্থা হারানোর অভিব্যক্তি, নাকি ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের মর্যাদায় আঘাত?

যা-ই হোক, রিটের নিষ্পত্তিতে ইশরাক হোসেনের শপথের পথ মসৃণ হলেও সারজিসের স্ট্যাটাসে যে ঝড় উঠেছে, তা থামার নয় সহসা। বরং এই ঘটনা আরও একবার মনে করিয়ে দিল—বাংলাদেশের রাজনীতিতে আদালতের রায় কখনোই শুধু আদালতের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না, তার রেশ ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকের নিউজফিড থেকে টকশোর টেবিলেও।

আল-আমিন ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ