ঢাকা, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

‘প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করলে বিপ্লবী সরকার গঠন হবে’

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ মে ২৪ ১১:১২:৪০
‘প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করলে বিপ্লবী সরকার গঠন হবে’

টেকেরহাটে মেহরাব সিফাতের ঘোষণা: “নতুনের রাজত্ব আনবে ছাত্র-জনতা”

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজনীতির পুরোনো খোলস ছুঁড়ে ফেলে এবার নতুন কিছু গড়ার আহ্বান জানালেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মেহরাব সিফাত। তাঁর ভাষায়, “প্রধান উপদেষ্টা যদি বাধ্য হন সরে দাঁড়াতে, তবে এই শূন্যস্থান পূরণে গড়ে উঠবে একটি বিপ্লবী সরকার—যা দেশকে নিয়ে যাবে এক নতুন গন্তব্যে।”

গতকাল শুক্রবার (২৩ মে) রাতে মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাট তালুকদার ডিজিটাল প্লাজায় এনসিপি আয়োজিত এক আলোচনাসভায় এমন ঘোষণা দেন তিনি। তার কণ্ঠে ছিল আন্দোলনের আত্মবিশ্বাস, ভবিষ্যতের স্বপ্ন আর পরিবর্তনের প্রত্যয়।

‘ড. ইউনূস ছাত্র-জনতার আমানত’

মেহরাব সিফাত স্পষ্ট করে বলেন, “২৪-এর ছাত্র-জনতা যে আস্থা ও দায়িত্ব ড. ইউনূসের কাঁধে তুলে দিয়েছে, তিনি তাতে কোনোভাবেই গাফিলতি করবেন না। কিন্তু যদি তাঁকে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়—হোক বিদেশি ষড়যন্ত্র বা দেশের ভেতরের চাপ—তবে সেটি ইতিহাসে লেখা থাকবে ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হিসেবে।”

তিনি বলেন, “নতুন রাজনৈতিক কাঠামো, সমাজ ও শিক্ষা ব্যবস্থার ভিত গড়েই ছাত্র-জনতা দেখিয়ে দেবে কেমন হতে পারে একটি ন্যায়ের রাষ্ট্র। তারপর গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই তারা ফিরে যাবে—কিন্তু তার আগে নয়।”

‘এ লড়াই ভাঙার নয়, গড়ার’

মেহরাব সিফাত ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান জানান—“আপনারা কেউ মনে করবেন না দায়িত্ব শেষ। এবার আমাদের দায়িত্ব শুরু হয়েছে। ঘরে ফেরার সময় এখন নয়। এবার আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ গড়ব।”

তিনি বলেন, “এটা ভাঙচুরের আন্দোলন নয়, এটি সৃষ্টির সংগ্রাম। ১৭ বছরের জাহিলিয়াতের পর এবার আমরা দেখাব কীভাবে একটা বিকল্প রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করা যায়।”

‘একতাই মুক্তির পথ’

সভায় তিনি জানান, আন্দোলনের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে নানা ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। আহত ও শহীদদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত প্রতিটি রক্তবিন্দুর দাবি থাকবেই।

তাঁর ভাষায়, “এই লড়াইতে যাদের মধ্যে নেই টেম্পুস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি, নেই দোকানে গিয়ে ডাকাতি, নেই হুকুমদারির অহংকার—তাদের সবাইকে এক ছাতার নিচে আনতে হবে। আমাদের লক্ষ্য ফ্যাসিবাদবিরোধী জনগণের ঐক্য।”

উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় নেতৃত্ব

এদিন সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় নাগরিক কমিটির (এনসিসি) সদস্য আজগর শেখ। বক্তব্য রাখেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মাদারীপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক নেয়ামত উল্লাহ, সদস্য সচিব মাসুম বিল্লাহ, এনসিসি রাজৈর উপজেলার সদস্য মহাসিন ফকির ও জাবের হাওলাদার এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা আফরান জামিসহ অনেকেই।

তাঁরা বলেন, “এ আন্দোলন শুধু প্রতিরোধ নয়, এক নবজাগরণের সূচনা। রাজনীতিতে বিকল্প যে সম্ভব, সেই ইতিহাস এবার ছাত্র-জনতাই রচনা করবে।”

আল-আমিন ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ