ঢাকা, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২

৬১টি ব্যাংককে ১২ গ্রুপে ভাগ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক: ঘোষণা গভর্নরের

অর্থনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুলাই ০৭ ১৭:৫৮:০৩
৬১টি ব্যাংককে ১২ গ্রুপে ভাগ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক: ঘোষণা গভর্নরের

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের ব্যাংক খাতে আসছে বড় ধরনের কাঠামোগত রূপান্তর। ঝুঁকি ও ব্যবসার ধরন বিচার করে ৬১টি ব্যাংককে ১২টি গ্রুপে ভাগ করার ঘোষণা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। উদ্দেশ্য একটাই—ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে অর্থনীতির ভিত্তিকে আরও মজবুত করা।

সোমবার (৭ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর বলেন, “ব্যাংকগুলো এক ছাঁচে ফেলা যাবে না। কারও ব্যবসা বড়, কারও ঝুঁকি বেশি। তাই ১২টি শ্রেণিতে বিভাজনের মাধ্যমে তাদের জন্য উপযুক্ত তদারকির কাঠামো তৈরি করা হচ্ছে।”

ডিসেম্বরেই শেষ হবে প্রস্তুতি

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, ইতোমধ্যে ২০টি ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক নিরীক্ষা (Risk-Based Audit) শেষ হয়েছে। বাকি ব্যাংকগুলোর নিরীক্ষা ডিসেম্বরের মধ্যেই শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হবে পূর্ণাঙ্গ রিস্ক বেইসড সুপারভিশন (RBS)।

গভর্নরের ভাষায়, “ব্যাংক খাতকে আর শুধু কাগজে-কলমে না দেখে এখন থেকে দেখা হবে ঝুঁকির চোখে। কে কতটা সতর্ক, কে কতটা ঝুঁকিপূর্ণ—তা বিশ্লেষণ করে তদারকি করা হবে।”

রাজনৈতিক পরিশুদ্ধতা ছাড়া সম্ভব নয়

তবে শুধু প্রাতিষ্ঠানিক তদারকিই নয়, গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর স্পষ্ট করে দিয়েছেন—ব্যাংক খাতে দীর্ঘমেয়াদি শৃঙ্খলা আনতে হলে রাজনৈতিক অঙ্গনেরও গুণগত পরিবর্তন জরুরি।

তিনি বলেন, “রাজনৈতিক চাপ, প্রভাব কিংবা অস্বচ্ছতাকে মোকাবিলা করতে হলে রাজনীতিকেই পরিশুদ্ধ হতে হবে। অর্থনীতিকে মুক্ত রাখতে হলে রাজনীতিকে দায়িত্বশীল হতে হবে।”

ভবিষ্যতের দিকচিহ্ন

এই উদ্যোগকে ব্যাংক খাতে ‘ঝুঁকি-ভিত্তিক মানচিত্র’ তৈরির সূচনা বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যেখানে প্রতিটি ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্য ও পরিচালন ব্যবস্থা হবে নীতিনির্ধারকদের হাতে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়োপযোগী এই পদক্ষেপ ব্যাংকিং খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াবে। একই সঙ্গে ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলার ক্ষেত্রেও তৈরি হবে শক্তিশালী ভিত।

ব্যাংকিং খাতের এই সংস্কার কেবল একটি আর্থিক তদারকি পদ্ধতির পরিবর্তন নয়—এ যেন পুরো ব্যবস্থার মেরুদণ্ড পুনর্গঠনের প্রক্রিয়া। ঝুঁকি চিহ্নিত করে তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ—এটাই এখন সময়ের দাবি।

জামিরুল ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ