আমাদের দেশেই খেলোয়াড়দের বেশি অপমানিত হতে হয় : মাশরাফি

মাশরাফিসহ সিনিয়র ক্রিকেটারদের সাথে টিম ম্যানেজমেন্টের সম্পর্ক শীতল নাকি উষ্ণ- এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে অনেকবার। মাশরাফি কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়া ও টিম ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বশীলতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় আবারও আলোচিত হয়ে উঠেছে এই ইস্যু।
নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে মাশরাফি বলেন, “দলের আগে কখনোই কোনো খেলোয়াড় হতে পারে না। ভালো না করলে বাদ পড়তেই হবে। অফ ফর্ম সব খেলোয়াড়ের জীবনেই যায়, বাদও পড়ে। কিন্তু ম্যানেজমেন্ট থেকে অপমানিত শুধু আমাদের দেশেই বেশি হয়।”
জাতীয় দলের বাইরে যাওয়া ক্রিকেটাররা সহসা ফিরতে পারেন না দলে। এমনকি তাদের নিয়ে সেভাবে কাজও করা হয় না। মাশরাফির মতে, ফর্মে না থাকা ক্রিকেটারদের সাথে সহনশীল ও সহযোগিতামূলক আচরণ করা উচিৎ। তিনি লিখেছেন, “পারর্ফম না করলে বাদ দেবেন এটা স্বাভাবিক।
তাকে তো সহযোগিতা করতে হবে, কীভাবে ফর্মে আনা যায় বা তাকে মানসিকভাবে কীভাবে সমর্থন করা যায়। কোনোভাবেই আপনি বুঝতে দিতে পারেন না যে, আপনি তাকে আর আপনার সময়কালে দেখতে চান না। এটার কারণ একটাই, কোনো কোচই আমাদের দেশে কাজ করার আগে আমাদের দেশের ক্রিকেটের অনুসারী থাকে না। চাকরির জন্য আসে, শেষ হলে চলে যায়।”
কোচদের নিয়ে আগেও প্রশ্ন তোলা মাশরাফি মনে করেন, কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চাহিদার কথা মাথায় রাখা হয় না বলেই এর প্রভাব পড়ছে খেলোয়াড়দের ওপর। তিনি জানান, “কোচ নিয়োগের সময় যে ইন্টারভিউ নেওয়া হয়, সেখানে আসলে তাকে কী প্রশ্ন করা হয়? বা আদৌ কি করা হয় কোনো প্রশ্ন? নাকি শুধু জানতে চাওয়া হয়, ‘তোমার কি করার ইচ্ছা?’ হয়তো তখন সে কিছু পয়েন্ট তুলে ধরে।
ওখান থেকে নতুনত্ব কিছু পেলে চিন্তা করা হয়, ‘দারুণ কোচ, কী সুন্দর পরিকল্পনা, এর মতো কোচই হয় না। আমার তো মনে হয়, ভুল ওখানেই হয়ে যায়। কারণ, মানুষকে বোঝাতে আমরা সব সময় হাই প্রোফাইল কোচ খুঁজি, যা পরে আর কোনো কাজে আসে না।”
বাংলাদেশের কোচ হওয়ার ক্ষেত্রে হাই প্রোফাইল কোচদেরই প্রাধান্য দেওয়া হয়, অথবা বাংলাদেশে কাজ করে কোচরা হয়ে ওঠেন হাই প্রোফাইল। মাশরাফির চাওয়া, কোচ খোঁজার এই সংস্কৃতি বদলে এমন কোচ খোঁজা হোক, যিনি জানেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের সংস্কৃতি।
মাশরাফির ভাষায়, “আমাদের প্রয়োজন তাকে যে আমাদের ক্রিকেট অনুসরণ করে বা আমাদের ম্যাক্সিম্যাম খেলোয়ারকে নিয়ে স্টাডি করে এসে ইন্টারভিউ দিচ্ছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, আমাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে ন্যূনতম ধারনা নিয়ে আসা। তা না হলে তো সে বুঝবেই না, একজন সাকিব, তামিম, মুশফিক, রিয়াদ তৈরি করতে কত দিন লেগেছে, বা অতীতে তাদের অবদান কী, একজন মুস্তাফিজ কীভাবে উঠে এসেছে।”
কোচদের সাথে কাজ করার ‘তিক্ত’ অভিজ্ঞতা জানিয়ে মাশরাফি বলেন, “এ যাবৎকালে প্রায় ৯-১০ জন কোচের সাথে কাজ করেছি আমি। প্রত্যেকটা কোচ তার নিজের মতো করে কাজ শুরু করে, যেটা করাটাও স্বাভাবিক। কারন একেকজনের কাজের ধরন একেকরকম। কিন্তু সব সময় দেখেছি, প্রত্যেক কোচ তার নিজস্ব একজন বা দুইজন প্রিয় খেলোয়াড় বানিয়ে নেয়।
পরে সিলেক্টর, ক্যাপ্টেন বা অন্য কেউ তাকে আর কিছুই বুঝাতে পারে না। বরং সম্পর্কগুলো জটিল হতে থাকে। ওই পছন্দের জন্য সে আবার দুইজনকে এমন অপছন্দ করা শুরু করে যে, তাদের আর দেখতেই পারে না। এক পর্যায়ে এমন জিদ শুরু করে যে, প্রয়োজনে চাকরি ছেড়ে দেব, এমন কথা প্রকাশ্যেও শুনেছি কয়েকবার কোচের মুখে।”
কোচের আচরণে বৈষম্য যেন না থাকে, সেই আহ্বান জানিয়ে মাশরাফি লিখেছেন, “আমার পয়েন্ট হলো, কোচের পছন্দ কিছু খেলোয়াড় হতেই পারে। সেটা সব কোচেরই হয়। অনান্য দেশেও হয়। তবে সেখানে কখনও সেটা প্রকাশ্যে বুঝতে দেয় না, অনুমান করতে হয়। কারণ দলের সেরা ৩-৪ জন খেলোয়াড়ই শুধু ম্যাচ জেতায় না। জেতালেও আপনি একজনের জন্য আরেকজনকে ছোট করতে পারেন না।”
“দর্শক বা সাংবাদিক অনেক কিছু লিখতেও পারে, বলতেও পারে। এটা একদম স্বাভাবিক ব্যাপার। কোচকে বলা হয় ফাদার অফ দ্যা সাইড। সে সবাইকে দেখে রাখবে, প্রয়োজনে কঠোর হবে। আবার দলের স্বার্থে যাকে প্রয়োজন তাকে ব্যবহার করবে। তার সব কিছুই হতে হবে পজিটিভ। কারও প্রতি কঠোর, কারও প্রতি নমনীয়, এটা এক রকমের বৈষম্যতে রূপ নেয় আমাদের দেশে। যা গোছানো দলকে অগোছালো করে ফেলে।”
বিদেশি কোচরা চুক্তি শেষ হলে চলে যান, কিংবা লোভনীয় প্রস্তাবে যোগ দেন অন্য দলে। অনেক কোচ নিজেকে ভালো জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করেন বাংলাদেশের কোচ হিসেবে কাজ করেই। মাশরাফি সেদিকেই ইঙ্গিত করেছেন, “এক পর্যায়ে তারা নিজেদের দেশে, না হলে আইপিএল বা আরও ভালো কোনো অফার পেয়ে চলে যাবে।
কারণ এত দিনে সে আমাদের দেশের ক্রিকেটকে নিয়ে অনেক এক্সপেরিমেন্ট করে নিজের অভিজ্ঞতা বাড়িয়েছে, নিজের প্রোফাইলও ভারি করেছে। বেতন তো নিয়েছে মাসে ১২-১৫ লাখ টাকা আর আমাদের কোচরা না খেয়ে মরে। গালিও দেখি আমাদের কোচরাই হজম করে।”
“পরে উনারা চলে গেলে আমরা পড়ি বিপদে। আবার নতুন কোচ, নতুন পরীক্ষা, নতুন দাবি মেটানো। এভাবেই চলছে বাংলাদেশে কোচদের যাওয়া-আসা। তাই আমার মনে হয়, হাই প্রোফাইল কোচ নয়, আমাদের প্রয়োজন আমাদের কোচ, বাংলাদেশের কোচ।”– বলেন মাশরাফি।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ভারতের সাবেক স্পিনার দিলীপ দোশী মারা গেলেন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে
- PSG বনাম ইন্টার মায়ামি: কখন, কোথায় ও কীভাবে দেখবেন লাইভ ম্যাচ
- পিএসজি বনাম ইন্টার মায়ামি: ম্যাচ প্রিভিউ, একাদশ ও ম্যাচ শুরুর সময়
- চুপ্পুকে সরিয়ে জাতীয় নির্বাচনে আগে নতুন রাষ্ট্রপতি চান পিনাকি
- ৮ গোল: শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম বাহারাইনের মধ্যকার ম্যাচের ৯০ মিনিটের খেলা
- মাহিয়া মাহির মৃত্যু গুজব: সত্য ও মিথ্যার বিশ্লেষণ
- বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্কবার্তা দিল ডিএসই
- শান্তর পদত্যাগ, নতুন টেস্ট অধিনায়কত্বে এগিয়ে যিনি
- পিএসজি বনাম ইন্টার মায়ামি: ৪-০ গোলে শেষ হলো ম্যাচ
- শ্রীলঙ্কা বনাম বাংলাদেশ: বৃষ্টির কারণে বন্ধ দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ
- কফিনবন্দি হয়ে ফিরলেন ফখরুল, চোখের জলে ভেসে গেল শেষ বিদায়
- বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নজরে পাঁচ কোম্পানি
- ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ : দ্বিতীয় পর্ব নিশ্চিত ১৬ দলের, সময় সূচি প্রকাশ
- বাজারে সামগ্রিক মন্দার মাঝেও বস্ত্র খাতের ৫ কোম্পানির চমক
- বিনিয়োগকারীদের জন্য তিন কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা