অবাক দুনিয়া: ৪ দিনের শিশুর হৃদ্যন্ত্রে বসবে স্টেন্ট

ঘটনার সুত্রপাত, শনিবার রাতে পেশায় ‘ফিল্ম এডিটর’ অনির্বাণ মাইতির একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে। ফেসবুকে শিশুটির ছবি দিয়ে অনির্বাণ লেখেন, ‘এই বাচ্চাটির তিন দিন বয়স। হার্টে চারটে স্টেন্ট বসাতে হবে।’ বর্তমানে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্য একটি নামী হাসপাতালে কথা হয়েছে। সে কথাও লেখেন তিনি।
আরও লেখেন, ‘সেখানে যা খরচ তা ওর বাবা মায়ের বহনের ক্ষমতা নেই আমাদের অনেকের মতো। বাচ্চাটিকে এসএসকেএম-এ ভর্তি করার কোনও ব্যবস্থা করার আবেদন নিয়ে আমার কাছে ফোন এসেছে। আসলে বাবা মায়েরা সন্তানের জন্য খড়কুটো পেলেও আঁকড়ে ধরেন। আমার এত ক্ষমতা সত্যিই নেই শিশুটিকে এসএসকেএম-এ ভর্তি করতে পারি।’
অনির্বাণের এই পোস্ট মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে ওঠে। রবিবার তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আমার পোস্টটি খুব দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। এর কিছু ক্ষণ পরেই আমাকে ওই শিশুটির বাবা ফোন করে বলেন, ‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতর থেকে চার জন দমদমের ওই বেসরকারি হাসপাতালে এসেছিলেন। বাচ্চাটিকে নিয়ে আমরা আরএন টেগোরে যাচ্ছি।’ এর পর রাত ১টা নাগাদ আরটিপিসিআর পরীক্ষা করে ভর্তি করানো হয় বলে খবর পাই। এ বার শিশুটির স্টেন্ট বসানো হবে।’’
নদিয়া জেলার হরিণঘাটা থানার মহাদেবপুরের বাসিন্দা জয়ন্ত দেবনাথ। গত ১২ জানুয়ারি বারাসতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে জয়ন্তের স্ত্রী পূজা দেবনাথ আচার্য একটি পুত্রসন্তানের জন্ম দেন।
কিন্তু শিশুটিকে দেখে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ আন্দাজ করেন তার হৃদ্যন্ত্রে সমস্যা রয়েছে। পরীক্ষায় তা ধরাও পড়ে। তবে তার চিকিৎসার জন্য যে টাকা প্রয়োজন তার বহর শুনে দেবনাথ পরিবারের সদস্যদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।
২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে শিক্ষকতার চাকরি পেয়েছেন জয়ন্ত। তিনি হাবড়ার বাউগাছি কাশীবালা বিদ্যাপীঠের শিক্ষক। তাঁর পক্ষে এই বিপুল টাকা জোগাড় করা অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। জয়ন্তর কথায়, ‘‘ভেবেই পাচ্ছিলাম না কী করব।
এই রোগের চিকিৎসা এসএসকেএম বা আরএন টেগোরে হয়। কিন্তু আমার অত টাকা নেই। এসএসকেএম-এও কোনও যোগাযোগ করে উঠতে পারিনি। এই সময়ে আমার এক পরিচিত ফেসবুকে পোস্ট করেন। তার পর আমাদের ওঁর টিম হাসপাতালে নিয়ে আসে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের সাহায্য করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।’’
জয়ন্ত জানিয়েছেন, আপাতত কয়েকটি পরীক্ষা হবে। তার পর তাঁর ছেলের হৃদ্যন্ত্রে স্টেন্ট বসানো হবে। কলকাতার ওই বেসরকারি হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে জয়ন্ত বললেন, ‘‘যে যুদ্ধটা হারতে বসেছিলাম, তাতে একটা আশার আলো দেখতে পাচ্ছি। এ জন্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ। এই কঠিন সময়ে যাঁরা আমাদের পাশে দাঁড়ালেন তাঁদের সকলকে ধন্যবাদ।’’
এই প্রক্রিয়ার আর এক সূত্রধার তৃণমূলের মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্য। রবিবার এ নিয়ে ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘সরাসরি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুরো ঘটনাটা জানালাম। তখন রাত্রি হয়ে গিয়েছে অনেকটাই.. ভেবেছিলাম কাল সকালের মধ্যে কোনও একটা ব্যবস্থা তো অবশ্যই হয়ে যাবে! কিন্তু আমি ভুল ছিলাম! দশ মিনিট পরেই দাদার থেকে রিপ্লাই এলো, ‘বলে দিয়েছি, সব আমি করে দেব। চিন্তা করতে বারণ করিস’ (হুবহু এটাই)।
তার পর দাদার অফিস থেকে যোগাযোগ করে কয়েক মিনিটের মধ্যেই বাচ্চাটিকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছে যায় দাদার অফিসের লোকজন। আমি সাধারণত দমকলের ক্ষেত্রেও এত দ্রুত ব্যবস্থা দেখিনি! নিজেই চমকে গিয়েছিলাম পুরোটা দেখে!’
নবজাতকের প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা সফল হওয়ায় খুশি অনির্বাণও। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘আমরা সকলে মিলে চার দিন বয়সের একটি শিশুর পাশে দাঁড়িয়েছি। এটা করতে পেরে খুব তৃপ্ত লাগছে। আমার জায়গায় যিনিই থাকতেন তিনিই এটা করতেন। সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে এটা করতে পারলাম খুব ভাল লাগছে।’’
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- চলছে নেপাল বনাম বাংলাদেশ ম্যাচ: লাইভ দেখুন এখানে
- নেপাল বনাম বাংলাদেশ: হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ হলো ম্যাচ, জানুন ফলাফল
- আশ্চর্যজনক উত্থান: জেড গ্রুপের ৪ শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের ঢল, কেন?
- বাংলাদেশ বনাম ইয়েমেন: ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনে নিন ফলাফল
- নেপাল বনাম বাংলাদেশ: প্রথমার্ধ শেষ, জেনে নিন সর্বশেষ ফলাফল
- আজ বাংলাদেশ বনাম নেপাল ম্যাচ: লাইভ দেখার সহজ উপায়
- চলছে বাংলাদেশ বনাম ইয়েমেন ম্যাচ: লাইভ দেখুন এখানে
- ৩ কোম্পানির অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধি: বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিএসইর সতর্কবার্তা
- ৭ কোম্পানির শেয়ারে অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধি: সতর্কবার্তা জারি করল ডিএসই
- বাংলাদেশ বনাম ইয়েমেন: ৮০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনে নিন সর্বশেষ ফলাফল
- বাংলাদেশ বনাম ইয়েমেন: লস টাইমে গোল, বাঁচা মরার ম্যাচ শেষ, জানুন ফলাফল
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিএসইর জরুরি সতর্কবার্তা
- ঝুঁকিপূর্ণ ৪ শেয়ারে মুনাফার ঝড়: বিনিয়োগকারীদের সতর্ক বার্তা!
- নেপাল বনাম বাংলাদেশ: ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনেনিন ফলাফল
- রাতে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ: বাংলাদেশ থেকে কখন, কোথায় ও কিভাবে দেখবেন