ঢাকা, সোমবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

পেটব্যথা ও গ্যাস্ট্রিক: অবহেলা নয়, লুকিয়ে থাকতে পারে অন্ত্ররোগ

স্বাস্থ্য ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ০১ ১৭:৫৯:০১
পেটব্যথা ও গ্যাস্ট্রিক: অবহেলা নয়, লুকিয়ে থাকতে পারে অন্ত্ররোগ

বাংলাদেশে পেটব্যথা, গ্যাস্ট্রিক, অ্যাসিডিটি বা হজমের সমস্যাকে আমরা সাধারণত খুব হালকাভাবে নিই। একটু বেশি ঝাল খাওয়া, অনিয়মিত খাবার বা দেরিতে ঘুমানো—এসবকেই দায়ী করি। অনেকেই মনে করেন, অল্প অল্প অ্যান্টাসিড খেলে বা ঘরোয়া কোনো প্রতিকার নিলে ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু এই অবহেলাই কখনো কখনো বড় বিপদের কারণ হয়। কারণ দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা পেটের ব্যথা, অস্বস্তি বা ডায়রিয়ার পেছনে থাকতে পারে ইনফ্লেমেটরি বাওয়েল ডিজিজ (IBD)—যার প্রধান দুটি রূপ হলো ক্রোনস ডিজিজ এবং আলসারেটিভ কোলাইটিস।

আইবিডি সাধারণত খুব ধীরে ধীরে শরীরে প্রভাব ফেলে। প্রথম দিকে হালকা ব্যথা, খাবার হজমে সমস্যা, মাঝে মাঝে পাতলা পায়খানা বা খাবার খাওয়ার পর অস্বস্তি—এসবকে আমরা নিয়মিত গ্যাস্ট্রিক ধরে নিই। কিন্তু মাসের পর মাস একই সমস্যা চলতে দিলে অন্ত্রে দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ তৈরি হতে পারে, যা পরবর্তীতে অন্ত্রের ক্ষত, রক্তক্ষরণ—এমনকি অপারেশনের মতো জটিল অবস্থাতেও ঠেলে দিতে পারে।

বিশ্বজুড়ে গবেষণায় দেখা গেছে, ক্রোনস ও কোলাইটিস সাধারণত ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সীদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। অর্থাৎ তরুণরাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। আমাদের দেশের তরুণরা অনেক সময় লক্ষণগুলো লুকিয়ে রাখে কিংবা এটিকে লজ্জার বিষয় মনে করে আলোচনা এড়িয়ে যায়—ফলে রোগ আরও নীরবে বেড়ে ওঠে।

অনেক লক্ষণ আছে যেগুলোকে মানুষ ভুল করে গ্যাস্ট্রিক ভেবে বসেন—যেমন: দীর্ঘদিনের পেটব্যথা, বারবার পাতলা পায়খানা, মলে রক্ত দেখা, হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া, দুর্বলতা, বা খাবার খাওয়ার পর অতিরিক্ত অস্বস্তি। এগুলো নিয়মিত হলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে।

বাংলাদেশে এই রোগ দেরিতে ধরা পড়ার অন্যতম কারণ হলো সচেতনতার অভাব। অনেকেই দেরি করে চিকিৎসকের কাছে যান, আবার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা—যেমন কোলোনোস্কপি, স্টুল টেস্ট বা সিটি স্ক্যান—করান না। ফলে রোগ অনেকটাই জটিল হয়ে ওঠে।

যাদের নিয়মিত পেটের সমস্যা থাকে, তাদের কয়েকটি বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি—যেমন: টানা ৩–৪ সপ্তাহ সমস্যা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া, ঘন ঘন অ্যান্টাসিড বা অ্যান্টিবায়োটিক না খাওয়া, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা, পানি বেশি পান করা এবং অতিরিক্ত ঝাল–তেল–প্রসেসড খাবার এড়িয়ে চলা। মানসিক চাপ কমানোও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ আন্তর্জাতিক গবেষণায় বারবার দেখা গেছে যে স্ট্রেস অন্ত্রের প্রদাহ বাড়াতে পারে।

সঠিক সময়ে সচেতনতা, নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা এবং জীবনযাপনে সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে আইবিডি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তাই নীরব পেটব্যথাকে কখনোই অবহেলা করা উচিত নয়; কারণ অনেক সময় ছোট লক্ষণ থেকেই বড় রোগের সূচনা হয়।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

শেয়ার কারসাজি: ৩ প্রতিষ্ঠানকে ১১.১০ কোটি টাকার অর্থদণ্ড দিল বিএসইসি

শেয়ার কারসাজি: ৩ প্রতিষ্ঠানকে ১১.১০ কোটি টাকার অর্থদণ্ড দিল বিএসইসি

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ার লেনদেনে গুরুতর কারসাজির ঘটনায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তিনটি প্রতিষ্ঠানকে সম্মিলিতভাবে ১১... বিস্তারিত