ঢাকা, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

দৈনিক কয়টা প্যারাসিটামল খাওয়া যায়! বেশ খেলেই লিভার-কিডনির ক্ষতি নিশ্চিত?

স্বাস্থ্য ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৪ ১৮:৪৬:০০
দৈনিক কয়টা প্যারাসিটামল খাওয়া যায়! বেশ খেলেই লিভার-কিডনির ক্ষতি নিশ্চিত?

বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: জ্বর কমাতে দিনে কতগুলি প্যারাসিটামল সেবন নিরাপদ? লিভারের ঝুঁকি কি বাড়ছে?

প্রকৃতির খামখেয়ালি মেজাজে বিশেষত এই আর্দ্র মৌসুমে প্রায় প্রতিটি ঘরেই হানা দিচ্ছে জ্বর। অনিয়মিত বৃষ্টিতে ভিজে শারীরিক অসুস্থতা বাড়ছে, আর এরই সুযোগ নিয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে একাধিক ভাইরাস, যার ফলস্বরূপ জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। সামান্য জ্বর অনুভব হলেই আমরা দ্রুত সেবন করছি প্যারাসিটামল নামক ওষুধটি।

কিন্তু, প্যারাসিটামল সেবনের এই প্রবণতা নিয়ে চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা বহু আগে থেকেই গুরুতর সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তাঁদের মতে, অতিরিক্ত পরিমাণে এই ওষুধের ব্যবহার দেহের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ওপর চাপ সৃষ্টি করে, যা বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

মাত্রাতিরিক্ত সেবনের ফল: শরীরের উপর কি প্রভাব পড়ছে?

শরীর ম্যাজম্যাজ করলে বা সামান্য গা গরম লাগলেই যাঁরা প্যারাসিটামল খাচ্ছেন, তাঁদের জন্যেই এই বড় বিপদ অপেক্ষা করছে। এই ওষুধ একটি অত্যন্ত সুরক্ষিত ও বহুল ব্যবহৃত হলেও, অনিয়ন্ত্রিত সেবন লিভার (যকৃত) এবং কিডনির (বৃক্ক) মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। এছাড়াও, এর প্রভাবে পেটের গোলযোগ বা হজমজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।

সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে যে, ঘন ঘন প্যারাসিটামল গ্রহণ হজমতন্ত্র (গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল), হৃদযন্ত্র এবং কিডনির অসুস্থতার আশঙ্কা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য, ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ঘন ঘন এই ওষুধ সেবনের ফলে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল, হার্ট এবং কিডনির জটিলতা বহুগুণ বেড়ে যেতে পারে।

কখন প্যারাসিটামল গ্রহণ জরুরি?

সব ধরনের জ্বরের ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল সেবনের প্রয়োজন নেই। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হলো, দেহের তাপমাত্রা যখন ১০১° ফারেনহাইট (বা ৩৮.৩° সেলসিয়াস) এর নিচে থাকে, তখন ওষুধ এড়িয়ে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ। এই অবস্থায় ওষুধের বদলে পূর্ণ বিশ্রাম এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পানই যথেষ্ট।

যখন ওষুধ সেবনের প্রয়োজন হয়:

দৈনিক মাত্রা: জ্বর নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি দৈনিক সর্বোচ্চ ৬টি ট্যাবলেট গ্রহণ করতে পারেন।

সময় ব্যবধান: মনে রাখা প্রয়োজন, দুটি ডোজের মাঝে কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টার ব্যবধান আবশ্যক।

স্বাভাবিক ব্যবহার: সাধারণত, দিনে ৪টি ট্যাবলেটেই দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

চিকিৎসকরা জোর দিয়ে বলছেন, যদি এরপরেও জ্বর না কমে বা তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে না আসে, তবে প্যারাসিটামল সেবনের আগে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

প্যারাসিটামল অত্যন্ত সুরক্ষিত ওষুধ এবং এটি ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই ফার্মেসি থেকে কেনা যায়। তবে, অতিরিক্ত বা অনিয়ন্ত্রিত মাত্রায় এটি সেবন করলে লিভারসহ একাধিক শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন। তাই সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই ওষুধ খাওয়া দরকার।

তানভির ইসলাম/

ট্যাগ: প্যারাসিটামল কতগুলো খাওয়া উচিত প্যারাসিটামল খাওয়ার নিয়ম দিনে কটা প্যারাসিটামল খাওয়া নিরাপদ প্যারাসিটামলের সর্বোচ্চ ডোজ প্যারাসিটামল বেশি খেলে কি হয় প্যারাসিটামল খেলে লিভারের ক্ষতি প্যারাসিটামল কিডনির ক্ষতি ঘন ঘন প্যারাসিটামল খাওয়া প্যারাসিটামল কখন খাওয়া উচিত জ্বর কমানোর ওষুধ জ্বর এলে কি করবো জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায় ১০১ ডিগ্রি জ্বর হলে করণীয় ভাইরাল ফিভার চিকিৎসা জ্বর হলে বিশ্রাম ঔষধ না খেয়ে জ্বর কমানো শরীরের ম্যাজম্যাজ ভাব গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা প্যারাসিটামল চিকিৎসকের পরামর্শ প্যারাসিটামল ওষুধ খাওয়ার সতর্কতা প্যারাসিটামল সতর্কতা ওভারডোজ প্যারাসিটামল

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ