সিন্ডিকেটের জালে ৭২৩৫ কোটি টাকার লোপাট: মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর নামে ডাকাতি

মালয়েশিয়ায় শ্রমিক ভিসায় যেতে ইচ্ছুক ৪ লাখ ৭৬ হাজারের বেশি বাংলাদেশি কর্মীর কাছ থেকে প্রায় ৭ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি অবৈধ সিন্ডিকেট। জনশক্তি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বায়রার নেতাদের অভিযোগ, রুহুল আমিন স্বপনের নেতৃত্বাধীন এই সিন্ডিকেট ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রতিজন কর্মী বাবদ ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা করে আদায় করেছে।
সরকার নির্ধারিত ব্যয় ৭৯ হাজার টাকা থাকলেও, কর্মীদের খরচ হয়েছে ৫-৮ লাখ টাকা পর্যন্ত। এতে অনেকেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চাকরি পাননি। সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ উত্থাপন করেন বায়রার বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) বর্জনকারী নেতারা। এ ঘটনায় বিতর্ক শুরু হয়েছে এবং অনিয়ম তদন্তের জন্য মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সিন্ডিকেট মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে বাংলাদেশের প্রবেশকে বাধাগ্রস্ত করেছে। এর ফলে দেশের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোও বাংলাদেশি শ্রমিকদের অভিবাসনের উচ্চ ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, যার মধ্যে বিমান ভাড়া, ভিসা, চিকিৎসা, প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য ব্যয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
২০২২ সালে মালয়েশিয়া বাংলাদেশের ২৫টি এজেন্সিকে কর্মী পাঠানোর কাজ দেয়। পরে আরো ৭৫টি বেসরকারি এজেন্সি এই সিন্ডিকেটে যোগ দেয়। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, এজেন্সিগুলো মালয়েশিয়ায় থাকা সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রকদের কর্মী প্রতি ৬ হাজার রিঙ্গিত দিয়ে কর্মী নিয়োগের চাহিদাপত্র তথা ভিসা কিনে আনে। এর ফলে ভুয়া চাহিদাপত্রের ভিত্তিতে কর্মী পাঠানো হয়, যেখানে কোনো চাকরি নেই। বাংলাদেশে কর্মী প্রতি ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে।
গত ৩১ মে বন্ধ হয় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। সরকারের কাছ থেকে ছাড়পত্র পেয়েও ১৭ হাজার কর্মী যেতে পারেননি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। তদন্ত করছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
এই পরিস্থিতিকে ডাকাতি আখ্যায়িত করে রিক্রুটিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল ইসলাম বলেন, "আমরা শুরু থেকেই এর বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলাম। তারা আমাদের কথা শোনেনি। বর্তমানে একটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। আশা করছি, এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।"
বায়রার সংবাদ সম্মেলন থেকে জানা গেছে, রুহুল আমিন স্বপনের নিয়ন্ত্রিত দুটি এজেন্সির নামে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো হয়েছে। কর্মী প্রতি ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা দেওয়ার ব্যাংক রশিদও রয়েছে।
সরকার নির্ধারিত ব্যয় ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা হলেও, কর্মীদের খরচ হয়েছে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত। মালয়েশিয়া কৃষি, নির্মাণ, সেবা এবং কারখানার শ্রমিকদের জন্য ভিসা জারি করে। কিন্তু রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো কর্মী প্রতি চাঁদা নিয়েছে ২ লাখ ৭০ হাজার থেকে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত।
এ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৬৪২ জন মালয়েশিয়ায় গেছেন, যাদের প্রত্যেকের খরচ ৬ লাখ টাকার বেশি। এই পরিমাণের মধ্যে ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা সিন্ডিকেট ফি হিসেবে দেওয়া হয়, যা মূলত চাঁদা হিসেবে। ফলে রুহুল আমিন স্বপনের সিন্ডিকেট বিশাল অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
বায়রার মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী বলেন, "যারা অভিযোগ করেছেন তারাও কর্মী পাঠিয়েছেন মালয়েশিয়ায়। তারা সিন্ডিকেটে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন। যেহেতু মানুষ যেতে পারেনি, তাই আমাদের কিছু দায়িত্ব নিতে হবে। আমরা আমাদের রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে কথা বলছি। যেহেতু তারা যেতে পারেনি, তাই এসব নিয়ে একটু বেশিই কথা হচ্ছে। এমনকি ২০১৮ সালে মালয়েশিয়া সরকারের শাটডাউনের কারণে ৫২ হাজার কর্মী যেতে পারেনি। যখনই কোনো সংকট দেখা দেয়, তখনই এই সুযোগটি কাজে লাগানো হয়। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। তাই এসব বিষয় বিবেচনা করতে হবে।"
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা: প্রথম টেস্ট প্রথম দিনেই বাংলাদেশ ৪ রেকর্ড
- বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা: বৃষ্টির কারণে বন্ধ ম্যাচ
- বাংলাদেশের শীর্ষ ১০ নিরাপদ ব্যাংকের তালিকা প্রকাশ
- মারা গেলেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মোস্তফা মোহসীন মন্টু
- শেখ হাসিনা যাকে প্রধানমন্ত্রী করতে চেয়েছিলেন, জানালেন অলি
- মারা গেলেন ভারতের উদিয়মান তারকা ক্রিকেটার
- বিসিবিতে প্রধান কোচ হয়ে ফিরলেন হান্নান সরকার
- আজ ৮ অঞ্চলে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের আশঙ্কা, থাকুন সতর্ক
- আ. লীগের কার্যক্রম স্থগিত, নিষিদ্ধ করা হয়নি: ড. ইউনূস
- ৬০ কোম্পানির কাছে মূলধন রোডম্যাপ চাইল বিএসইসি
- সাকিবসহ ১৫ জনের দেশত্যাগে আদালতের নিষেধাজ্ঞা: নাম প্রকাশ
- আজকের সৌদি রিয়াল রেট (১৪ জুন ২০২৫)
- করোনা সংক্রমণ: স্কুল বন্ধ নাকি চলবে, সিদ্ধান্ত জানালো মাউশি
- সোনার দামে বড় পতনের শঙ্কা, আসছে বড় পরিবর্তন
- ত্রয়োদশ নির্বাচনে বিএনপি ১০০ আসনও পাবে না