বাংলাদেশের ইন্টারনেট ভবিষ্যৎ এখন ভারতের দখলে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের ডিজিটাল খাতের নিয়ন্ত্রণ ক্রমশ এককেন্দ্রিক হয়ে উঠছে, যেখানে সামিট গ্রুপ শীর্ষস্থানীয় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সরকারের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রভাবের ফলে সামিট একাধিক লাইসেন্স লাভ করে, যা তাদের দেশের ইন্টারনেট খাতের অর্ধেকেরও বেশি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার সুযোগ দিয়েছে। এই আধিপত্যের ফলে বাংলাদেশের ইন্টারনেট অবকাঠামো ভারতনির্ভর হয়ে পড়ছে, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য এক গভীর উদ্বেগের বিষয়।
কিভাবে সামিট গ্রুপ আধিপত্য বিস্তার করল?
২০০৯ সালের পর থেকে সামিট গ্রুপ টেলিকম খাতে ব্যাপকভাবে প্রবেশ করতে শুরু করে। প্রথমে তারা ন্যাশনাল টেলিকম ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) লাইসেন্স পায়, এরপর ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল ক্যাবল (আইটিসি), ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) লাইসেন্স লাভ করে। এই লাইসেন্সগুলোর মাধ্যমে তারা দেশের আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট প্রবাহের অন্যতম নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠে।
ভারতনির্ভর ইন্টারনেট: কতটা ভয়ংকর?
সামিট গ্রুপের একচ্ছত্র দখলের কারণে বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথের বিশাল অংশ ভারতের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। সরকারি খাতের যথেষ্ট সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও সামিট ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ভারত থেকে ব্যান্ডউইডথ আমদানি করে, যা বাংলাদেশের ডিজিটাল অবকাঠামোকে বিদেশি স্বার্থের কাছে জিম্মি করে ফেলেছে।
২০১২ সালে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) নীতিমালা লঙ্ঘন করে ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে আইটিসি লাইসেন্স প্রদান করে, যার মধ্যে সামিট অন্যতম। এর ফলে বাজারে প্রতিযোগিতা সীমিত হয়ে পড়ে এবং সামিটের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ আরও সুসংহত হয়।
বাংলাদেশে ভারতীয় ব্যান্ডউইডথের ক্রমবর্ধমান প্রবাহ
বর্তমানে দেশের ৭০ শতাংশের বেশি ব্যান্ডউইডথ ভারত থেকে আমদানি করা হয়, যার মধ্যে ৫০ শতাংশেরও বেশি সামিটের হাতে। এই পরিস্থিতি সাইবার নিরাপত্তা ও ডিজিটাল সার্বভৌমত্বের জন্য বড় হুমকি সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, ভারত যদি রাজনৈতিক কারণে ব্যান্ডউইডথ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়, তবে বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়তে পারে।
এই সংকট থেকে উত্তরণের পথ
সরকার এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, যদিও সাম্প্রতিক সময়ে নীতিমালা সংশোধনের কথা শোনা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দেশীয় ব্যান্ডউইডথ উৎপাদন বাড়ানো এবং বিকল্প আন্তর্জাতিক সংযোগ তৈরি করা জরুরি।
সামিট টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ আল ইসলাম দাবি করেছেন, সামিট তার দক্ষতার ভিত্তিতেই বাজারে নিজেদের অবস্থান তৈরি করেছে এবং ভারসাম্য রক্ষায় সচেষ্ট। তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে, ভারতের ওপর নির্ভরতা বাস্তবতা, যদিও ব্যবসায়িক কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা কম।
বাংলাদেশের ইন্টারনেট খাত বর্তমানে সামিট গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, যা দেশের ডিজিটাল ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। যদি সরকার যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়, তবে ভবিষ্যতে সাইবার নিরাপত্তা ও ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব মারাত্মক হুমকির মুখে পড়তে পারে। দ্রুত কার্যকর নীতিমালা গ্রহণ এবং দেশীয় প্রযুক্তির সক্ষমতা বাড়ানোই হতে পারে এই সংকট মোকাবিলার একমাত্র উপায়।
সালমা/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- চুপ্পুকে সরিয়ে জাতীয় নির্বাচনে আগে নতুন রাষ্ট্রপতি চান পিনাকি
- PSG বনাম ইন্টার মায়ামি: কখন, কোথায় ও কীভাবে দেখবেন লাইভ ম্যাচ
- পিএসজি বনাম ইন্টার মায়ামি: ম্যাচ প্রিভিউ, একাদশ ও ম্যাচ শুরুর সময়
- বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা: প্রথম ওয়ানডেতে লড়াকু টার্গেট দিল শ্রীলঙ্কা
- ৮ গোল: শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম বাহারাইনের মধ্যকার ম্যাচের ৯০ মিনিটের খেলা
- মাহিয়া মাহির মৃত্যু গুজব: সত্য ও মিথ্যার বিশ্লেষণ
- ফাফ ডু প্লেসির ডাবল সেঞ্চুরি রেকর্ডে কাঁপছে ক্রিকেট বিশ্ব
- পিএসজি বনাম ইন্টার মায়ামি: ৪-০ গোলে শেষ হলো ম্যাচ
- শান্তর পদত্যাগ, নতুন টেস্ট অধিনায়কত্বে এগিয়ে যিনি
- ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ : দ্বিতীয় পর্ব নিশ্চিত ১৬ দলের, সময় সূচি প্রকাশ
- কফিনবন্দি হয়ে ফিরলেন ফখরুল, চোখের জলে ভেসে গেল শেষ বিদায়
- বাংলাদেশ বনাম মিয়ানমার: আবারও গোল, ৯০ মিনিটের খেলা শেষ
- মিয়ানমারের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ, জেনে নিন সময় সূচি
- বিনিয়োগকারীদের জন্য তিন কোম্পানির লভ্যাংশ ঘোষণা
- বাজারে সামগ্রিক মন্দার মাঝেও বস্ত্র খাতের ৫ কোম্পানির চমক