ঢাকা, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

ট্রাইব্যুনালের নতুন অধ্যাদেশ: আওয়ামী লীগসহ যেকোনো দলকে নিষিদ্ধ করা যাবে

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ মে ১১ ১৫:০৭:২৪
ট্রাইব্যুনালের নতুন অধ্যাদেশ: আওয়ামী লীগসহ যেকোনো দলকে নিষিদ্ধ করা যাবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: গতকাল সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) আইন সংশোধন করে একটি নতুন অধ্যাদেশ জারি করেছে। এই অধ্যাদেশে সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, ট্রাইব্যুনাল কোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে, এবং এমন দলকে নিষিদ্ধও করতে পারবে, যাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ সংঘটনের অভিযোগ রয়েছে।

নতুন অধ্যাদেশের বিষয়বস্তু:

অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, যদি কোনো রাজনৈতিক দল বা এর অঙ্গসংগঠন আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের আওতায় কোনো অপরাধে জড়িত থাকে, তাহলে ট্রাইব্যুনালের কাছে সেই সংগঠনের কার্যক্রম স্থগিত করা, নিষিদ্ধ ঘোষণা করা, অথবা তার নিবন্ধন বা লাইসেন্স বাতিল করার ক্ষমতা থাকবে। এর পাশাপাশি, সংগঠনের সম্পত্তি জব্দ করারও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে নতুন পদক্ষেপ:

এছাড়া, এই নতুন অধ্যাদেশে "সংগঠন" শব্দের আওতায় রাজনৈতিক দলকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যার ফলে কোনো রাজনৈতিক দল যদি আন্তর্জাতিক অপরাধে জড়িত থাকে, তবে সে দলের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারবে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, এটি আওয়ামী লীগের মতো প্রধান রাজনৈতিক দলকে লক্ষ্যবস্তু করার জন্য ব্যবহৃত হতে পারে, যদি তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়।

গেজেট প্রকাশ ও বিশেষ সভা:

গেজেট আকারে শনিবার এই অধ্যাদেশটি প্রকাশ করা হয়েছে। একই দিনে, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ একটি বিশেষ সভা ডেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধন প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। সভায়, আওয়ামী লীগ ও দলের নেতাদের বিরুদ্ধে বিচার কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত, দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইন প্রয়োগসহ আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব এবং জুলাই আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত।

সিদ্ধান্ত ও পরবর্তী পদক্ষেপ:

এছাড়া, জুলাই ঘোষণাপত্রের পরবর্তী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত করে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই অধ্যাদেশের ফলে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আইনগত কার্যক্রমে নতুন একটি পরিবর্তন আসবে, যা আগামী দিনগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা কী বলছেন:

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে সরকারের বিরোধী দলগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করার একটি পরিকল্পনা হতে পারে। বিশেষ করে, আওয়ামী লীগসহ যেকোনো রাজনৈতিক দল যদি আন্তর্জাতিক অপরাধে জড়িত থাকে, তাহলে তাদের ওপর কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে, যা সরকারের ক্ষমতা সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

এমন পরিস্থিতিতে, রাজনৈতিক দলগুলো এবং সুশীল সমাজের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে, যেখানে তারা সরকারের নতুন পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করতে চাইছে।

নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে আরও শক্তিশালী করার পথে একধাপ এগোল। এটি রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করবে, যেখানে তাদের প্রতি অধিক নজর রাখা হবে। এ পরিস্থিতি আইন এবং রাজনীতি উভয় ক্ষেত্রেই গুরুত্ব বহন করবে।

FAQ:

ট্রাইব্যুনালের নতুন অধ্যাদেশ কী?

নতুন অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধে জড়িত থাকলে রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করা যেতে পারে, এবং তাদের কার্যক্রম স্থগিত বা বন্ধ করা যাবে।

এই অধ্যাদেশে আওয়ামী লীগকে কি নিষিদ্ধ করা যাবে?

হ্যাঁ, যদি আওয়ামী লীগ বা তার অঙ্গসংগঠন আন্তর্জাতিক অপরাধে জড়িত থাকে, তবে ট্রাইব্যুনাল তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে পারবে।

এই অধ্যাদেশের কার্যক্রম কবে থেকে কার্যকর হবে?

নতুন অধ্যাদেশটি ৭ মে থেকে কার্যকর হয়েছে এবং গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।

রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে এই অধ্যাদেশ কি ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে?

এই অধ্যাদেশে দলগুলোর কার্যক্রম স্থগিত, নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং তাদের নিবন্ধন বা লাইসেন্স বাতিল করার ব্যবস্থা রয়েছে।

আল-আমিন ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ