বাংলাদেশের চার চিঠির জবাবে ভারতের এক উত্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক: তারা আসছেন গোপনে, রাতের আঁধারে। গায়ে ধুলো, চোখে ভয়। বাংলাদেশ সীমান্তে এসে দাঁড়াচ্ছেন শত শত মানুষ। তাদের ঠেলে পাঠানো হচ্ছে ওপার থেকে। এপারে সীমান্তরক্ষীরা বিস্মিত, প্রশাসন উদ্বিগ্ন।
মে মাসে ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চল দিয়ে অন্তত ৩৭০ জনকে বাংলাদেশে ‘পুশ ইন’ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আছেন রোহিঙ্গা নাগরিকও। একে দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলছে বাংলাদেশ, আর প্রতিবাদে একের পর এক চিঠি পাঠাচ্ছে নয়াদিল্লিতে—গোটা চারটি চিঠি!
৮, ১৩, ১৫ ও ২০ মে—এই চারদিনে কূটনৈতিক বার্তার মাধ্যমে ভারতের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে, যেন এই ঠেলাঠেলির খেলা বন্ধ হয়। সীমান্তে যেন অমানবিকতার নয়, হয় বোঝাপড়ার জয়।
কিন্তু ভারতের উত্তর এসেছে ২১ মে—একটি সংক্ষিপ্ত অথচ স্পষ্ট বার্তায় তারা জানিয়ে দিয়েছে, সব কিছুই নাকি আইনের আওতায় হচ্ছে। তারা কোনো অবৈধ বিদেশি বাংলাদেশে ঠেলে দিচ্ছে না, এমন দাবিও করেছে ভারত।
অভিযোগ-জবাবের কূটনৈতিক লড়াই
ভারতের পাল্টা বক্তব্যে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এখনো ২,৪৬১ জন সন্দেহভাজন নাগরিকের পরিচয় যাচাই শেষ করেনি। আর এই ধীরগতিই নাকি দুই দেশের মধ্যে বোঝাপড়ায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানিয়ে দিয়েছেন স্পষ্টভাবে,
“ঠেলে দেওয়া কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা নিয়ম মেনেই চলি। প্রমাণিত ভারতীয় হলে অবশ্যই ফেরত নেওয়া যাবে, তবে এমন পুশ ইন বরদাস্ত করা হবে না।”
চুক্তির ছেঁড়া পৃষ্ঠা ও রোহিঙ্গা বাস্তবতা
বাংলাদেশ মনে করে, এই একতরফা কার্যক্রম ভঙ্গ করছে একাধিক আন্তর্জাতিক ও দ্বিপাক্ষিক চুক্তি।
১৯৭৫ সালের যৌথ সীমান্ত নির্দেশিকা,
২০১১ সালের সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (CBMP)
এবং সাম্প্রতিক বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সিদ্ধান্তগুলো—সবই যেন আজ ভুলে যাওয়া প্রতিশ্রুতি।
আরও স্পর্শকাতর ইস্যু হলো—রোহিঙ্গা।
ভারত যাদের ঠেলে দিচ্ছে, তাদের অনেকেই মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিক। বাংলাদেশ বহুবার বলেছে, এই মানুষদের জায়গা বাংলাদেশে নয়, মিয়ানমারে। তাই ভারতে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ঠেলে না দিয়ে আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায় তাদের নিজ দেশে ফেরানোর দাবি জানিয়েছে ঢাকা।
সমাধান কি বন্ধ দরজার ওপাশে?
এই পুশ ইন পলিসি সীমান্তে উত্তেজনা বাড়াচ্ছে, সামাজিক ভারসাম্যেও টান পড়ছে।
বাংলাদেশ চায়—বিজিবি-বিএসএফ-এর মধ্যে সমন্বয় বাড়ুক, নিয়মিত তথ্য বিনিময় হোক।
কারণ, দুই প্রতিবেশীর সম্পর্ক যদি ভরসায় গড়ে ওঠে, তবে সীমান্তে থাকবে না উদ্বেগের ছায়া।
ভারত বলছে—আইন মেনেই সব করছে তারা। বাংলাদেশ বলছে—মানবিকতা ও চুক্তি মেনে চলা জরুরি।
প্রশ্ন হলো—এই ঠেলাঠেলির খেলা কি শুধু সীমান্তে চলছে, নাকি কূটনীতির ঘরেও?
আল-আমিন ইসলাম/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে কারসাজির চক্র: দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দামে অস্বাভাবিক উল্লম্ফন
- ৩ কোম্পানির কারখানায় ঝুলছে তালা, ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের
- শেয়ারবাজার স্থিতিশীলতায় আইসিবির বিশেষ তহবিল থাকবে ২০৩২ সাল পর্যন্ত
- ৮ প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ ঘোষণা, ছয় কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা খেলো ধাক্কা
- শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সের বাঁচা মরার ম্যাচ
- রপ্তানি আয়ের ৮ হাজার কোটি টাকা গায়েব: কেয়া গ্রুপ ও চার ব্যাংককে তলব
- এশিয়া কাপ ২০২৫: তিন ওপেনার নিয়ে বাংলাদেশের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা
- ভারত বনাম বাংলাদেশ : ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনে নিন ফলাফল
- ভারত বনাম বাংলাদেশ: গোল, গোল, ৮০ মিনিটের খেলা শেষ
- বদলে গেল ফোনের ডায়াল প্যাড, জানুন আসল কারণ ও আগের অবস্থায় ফেরানোর উপায়
- শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচটি প্রতিষ্ঠান বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা
- বীমা খাতে সুবাতাস, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১৯ কোম্পানির মুনাফায় উল্লম্ফন
- বদলে গেল আপনার ফোনের ডায়াল প্যাড, আতঙ্ক নয় সমাধান আছে, জেনে নিন
- এশিয়া কাপ 2025 : বাংলাদেশের চুড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করলো বিসিবি
- গুজব না সত্য: যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা হাসিনার পদত্যাগপত্র খুঁজে পায়নি