ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ আসছে, ৪ বিভাগে রেকর্ড বৃষ্টির আশঙ্কা

সারাদেশ ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ মে ২৫ ২৩:০৬:২৬
ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ আসছে, ৪ বিভাগে রেকর্ড বৃষ্টির আশঙ্কা

২৯-৩১ মে পর্যন্ত ময়মনসিংহ, সিলেট, রংপুর ও চট্টগ্রামে সতর্কতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বঙ্গোপসাগরে তৈরি হতে যাওয়া একটি লঘুচাপ আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’তে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষকরা। ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশে আঘাত হানলে দেশের অন্তত চারটি বিভাগে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত ঘটতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

রোববার (২৫ মে) কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও আমেরিকার আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুযায়ী, আগামী ২৭ বা ২৮ মে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এটি পরবর্তীতে নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

কোন বিভাগগুলো বেশি ঝুঁকিতে?

ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করলে ২৯, ৩০ ও ৩১ মে—এই তিন দিনে ময়মনসিংহ, রংপুর, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগে ৫০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত ঘটতে পারে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।

বিশেষ করে,

ঘূর্ণিঝড় যদি খুলনা বিভাগ দিয়ে প্রবেশ করে, রংপুর ও ময়মনসিংহ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

আর যদি এটি বরিশাল বা চট্টগ্রাম বিভাগের উপর দিয়ে স্থলভাগে উঠে আসে, তাহলে সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগে ভয়াবহ বৃষ্টিপাত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়ের স্তর কীভাবে নির্ধারণ হয়?

ঘণ্টায় বাতাসের গতি অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়ের শ্রেণিবিন্যাস হয়—

৩১ কিমি/ঘণ্টার কম হলে এটি লঘুচাপ,

৩১–৫০ কিমি/ঘণ্টা হলে নিম্নচাপ,

৫১–৬২ কিমি/ঘণ্টা হলে গভীর নিম্নচাপ,

৬৩ কিমি/ঘণ্টার বেশি হলে একে ঘূর্ণিঝড় বলা হয়।

ঝড়টির নাম ‘শক্তি’ কেন?

এ সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে ‘শক্তি’, যা শ্রীলঙ্কার দেওয়া নাম। এটি যদি বাস্তবেই ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়, তাহলে এটি হবে ২০২৫ সালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মৌসুমি ঘূর্ণিঝড়।

কী করতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, এখনই আতঙ্ক নয়, বরং সচেতন হওয়া জরুরি। যেহেতু এটি এখনও লঘুচাপ পর্যায়ে আছে, তাই নিয়মিত আবহাওয়া আপডেট ও পূর্বাভাস অনুসরণ করা উচিত।

ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ বাংলাদেশে আঘাত হানলে শুধু ঝড় নয়, অত্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাত ও প্লাবন পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে। এই ঝড়ের সম্ভাব্য গতিপথ ও তীব্রতা নির্ভর করছে এর উপকূল অতিক্রমের স্থান ও গতির ওপর।

সরকারি পূর্বাভাস ও সতর্কতা মেনে চলাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

FAQ (প্রশ্ন-উত্তরসহ)

প্রশ্ন ১: ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ কবে বাংলাদেশে আসতে পারে?

উত্তর: আবহাওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২৭ বা ২৮ মে বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়ে ২৯–৩১ মে’র মধ্যে বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে।

প্রশ্ন ২: ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে কোন জেলাগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে?

উত্তর: ময়মনসিংহ, সিলেট, রংপুর ও চট্টগ্রাম বিভাগে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রশ্ন ৩: ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’র নাম কে দিয়েছে?

উত্তর: ঘূর্ণিঝড়টির নাম ‘শক্তি’ রেখেছে শ্রীলঙ্কা। এটি ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত হয়েছে।

প্রশ্ন ৪: এই ঘূর্ণিঝড় কতটা ভয়াবহ হতে পারে?

উত্তর: গবেষকদের মতে, এই ঝড়ের প্রভাবে ৫০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হতে পারে, যা রেকর্ড বৃষ্টির আশঙ্কা তৈরি করেছে।

আল-আমিন ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ