ঢাকা, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২

ক্লাব বিশ্বকাপ:

আল-হিলাল বনাম ফ্লুমিনেন্স: নাটকীয়ভাবে শেষ হলো কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুলাই ০৫ ০৭:৪৯:৩২
আল-হিলাল বনাম ফ্লুমিনেন্স: নাটকীয়ভাবে শেষ হলো কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্ব ফুটবলের মর্যাদাপূর্ণ আসর ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ ২০২৫-এর কোয়ার্টার ফাইনাল পর্বে মুখোমুখি হয়েছিল দুই মহাদেশীয় পরাশক্তি—সৌদি আরবের আল-হিলাল এবং ব্রাজিলের ফ্লুমিনেন্স। ট্যাকটিকস, গতি আর রোমাঞ্চে ভরপুর এই ম্যাচটি ফুটবলপ্রেমীদের উপহার দিয়েছে এক রুদ্ধশ্বাস ৯০ মিনিট।

দুই দলের মধ্যকার এই ম্যাচে একাধিক গোল, দ্রুত পাল্টাপাল্টি আক্রমণ, ডিফেন্সিভ ব্লক আর চোখ ধাঁধানো স্কিলের প্রদর্শনী দেখা গেছে। পুরো ম্যাচজুড়ে উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে, যা ম্যাচের শেষ বাঁশি পর্যন্ত দর্শকদের মনোযোগ ধরে রাখতে সক্ষম হয়।

প্রথমার্ধে মধ্যমাঠের লড়াই, ব্যবধান তৈরি করেন মার্তিনেল্লি

ম্যাচের প্রথমার্ধে উভয় দলই পজিশন ধরে রেখে খেলার চেষ্টা করে। বল দখলের লড়াই বেশ জোরালো হলেও গোলের মুখ খুলতে অপেক্ষা করতে হয় ৪০তম মিনিট পর্যন্ত। ফ্লুমিনেন্সের হয়ে গোল করেন মিডফিল্ডার মাথেউস মার্তিনেল্লি। তার নেওয়া দূরপাল্লার শট আল-হিলালের রক্ষণভাগ ভেদ করে জালে ঠাঁই নেয়।

দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের গতি আরও বাড়ে

বিরতির পর দুই দলই আগ্রাসী কৌশলে ফিরে আসে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আক্রমণে গতি বাড়ায় ফ্লুমিনেন্স। ৫১তম মিনিটে মারকোস লেওনার্দো দারুণ একটি সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন।

কিন্তু আল-হিলাল ম্যাচ ছেড়ে দেয়নি। বল দখলের নিয়ন্ত্রণ ও পাসিং গেমের মাধ্যমে তারা ধীরে ধীরে খেলার নিয়ন্ত্রণ নেয়। ৭০তম মিনিটে হেরকুলেস একটি দুর্দান্ত গোল করে ব্যবধান কমান। এরপরে আল-হিলাল একাধিকবার ফ্লুমিনেন্সের বক্সে ঢুকে গোলের চেষ্টা করলেও সফল হতে পারেনি।

ম্যাচজুড়ে পরিসংখ্যানের দিক থেকে এগিয়ে ছিল আল-হিলাল

পুরো ম্যাচের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, বল দখলে ও পাস একুরেসিতে এগিয়ে ছিল আল-হিলাল। তারা মোট ৫৮ শতাংশ বল দখলে রেখেছিল এবং ৪৩২টি পাস সম্পন্ন করে, যেখানে ফ্লুমিনেন্সের ছিল ৩৩৩টি পাস ও ৪২ শতাংশ বল দখল।

শটের দিক থেকেও আল-হিলাল এগিয়ে ছিল—তারা নেয় ১৫টি শট, যার মধ্যে ৪টি ছিল অন টার্গেট। অন্যদিকে, ফ্লুমিনেন্স ১০টি শট নেয়, যার ৩টি ছিল লক্ষ্যে। তবে ফিনিশিংয়ের জায়গায় ফ্লুমিনেন্স ছিল কার্যকর।

ম্যাচ পরিসংখ্যান (Match Stats):

বিষয়ফ্লুমিনেন্সআল-হিলাল
মোট শট ১০ ১৫
লক্ষ্যে শট
বল দখল ৪২% ৫৮%
পাস সংখ্যা ৩৩৩ ৪৩২
পাস সঠিকতা ৮৪% ৮৮%
ফাউল ১৩ ১২
হলুদ কার্ড
লাল কার্ড
অফসাইড
কর্নার ১২

ম্যাচটি ছিল কৌশলের পরীক্ষা এবং মানসিক দৃঢ়তার লড়াই

যেখানে আল-হিলাল পজিশন ফুটবল ও শারীরিক শক্তির ওপর ভরসা করে খেলেছে, সেখানে ফ্লুমিনেন্স খেলেছে দ্রুত পাস, নিখুঁত কাউন্টার অ্যাটাক এবং গোলের সামনে কার্যকর ফিনিশিংয়ের কৌশল নিয়ে। দুই দলের কোচই একাধিক পরিবর্তন ও কৌশলগত চমক দিয়েছেন ম্যাচের বিভিন্ন সময়।

আন্তর্জাতিক ক্লাব ফুটবলের এই আসরে ম্যাচটি আবারও প্রমাণ করে দিয়েছে, পরিসংখ্যান নয়, দিন শেষে গোলের সংখ্যা দিয়েই জয় নির্ধারিত হয়। মাঠে দুই দলই সমানতালে লড়লেও নাটকীয়ভাবে শেষ হয়েছে ম্যাচটি, যেখানে ফুটবলপ্রেমীরা পেয়েছে গতি, কৌশল, উত্তেজনা আর গোলের সমাহার।

ক্লাব বিশ্বকাপের এই ম্যাচটি তাই শুধু ফলাফলের দিক থেকেই নয়, মানসিক ও কৌশলগত লড়াই হিসেবেও স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ