
MD. Razib Ali
Senior Reporter
জমি কিনতে ভয়? খতিয়ান-দলিল যাচাই করুন অনায়াসে!

ভূমি সংক্রান্ত যেকোনো লেনদেনে স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জমির খতিয়ান এবং দলিলের তথ্য যাচাই প্রক্রিয়া অত্যন্ত জরুরি। ডিজিটাল ব্যবস্থার সহজলভ্যতা এবং ঐতিহ্যবাহী দাপ্তরিক পদ্ধতির সমন্বয়ে এই যাচাই প্রক্রিয়া এখন আরও সুগম হয়েছে। সঠিক যাচাইকরণ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করলে ভবিষ্যতে আইনি জটিলতার সম্মুখীন হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
খতিয়ান: ভূমির মালিকানার প্রাথমিক দলিল
একটি খতিয়ান হলো কোনো নির্দিষ্ট মৌজার জমির মালিকানা এবং এর বিস্তারিত বিবরণ সম্বলিত একটি রেজিস্টার্ড নথি। এতে জমির দাগ নম্বর, পরিমাণ, মালিকের নাম, পিতার নাম, ঠিকানা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সুস্পষ্টভাবে লিপিবদ্ধ থাকে। সিএস, এসএ, আরএস, বিএস বা বিআরএস খতিয়ানগুলো বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত ভূমি জরিপের ফসল, যা জমির ঐতিহাসিক ও বর্তমান মালিকানার চিত্র তুলে ধরে।
খতিয়ান যাচাইয়ের পদ্ধতি
আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে ভূমি মন্ত্রণালয় খতিয়ান যাচাইকে সহজ করেছে।
১. অনলাইন যাচাই: 'ই-পর্চা' সেবা
ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইট (eporcha.gov.bd) ব্যবহার করে ঘরে বসেই খতিয়ান যাচাই করা সম্ভব।
প্রথমে, eporcha.gov.bd পোর্টালে প্রবেশ করতে হবে।
সেখানে আপনার বিভাগ, জেলা, উপজেলা এবং মৌজার সঠিক তথ্য নির্বাচন করুন।
এরপর খতিয়ান নম্বর বা দাগ নম্বর প্রবেশ করিয়ে অনুসন্ধান করুন।
তথ্য সঠিক হলে, আপনি আপনার জমির খতিয়ানের একটি প্রিভিউ দেখতে পাবেন।
নির্ধারিত ফি পরিশোধের মাধ্যমে আপনি খতিয়ানের সত্যায়িত অনুলিপি ডাউনলোড করতে পারবেন। বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং বা অনলাইন গেটওয়ের মাধ্যমে এই ফি পরিশোধের সুযোগ রয়েছে।
২. সরাসরি ভূমি অফিসে যাচাই
যাদের অনলাইন সুবিধা নেই বা যারা অতিরিক্ত নিশ্চিত হতে চান, তারা সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে গিয়ে খতিয়ান যাচাই করতে পারেন।
সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে একটি আবেদনপত্র জমা দিতে হবে।
প্রয়োজনীয় ফি পরিশোধের পর, ভূমি অফিস থেকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খতিয়ানের সত্যায়িত অনুলিপি সরবরাহ করা হবে।
দলিল: মালিকানা হস্তান্তরের আইনি প্রমাণ
দলিল হলো একটি আইনি নথি যা জমির মালিকানা হস্তান্তরের প্রমাণ হিসেবে কাজ করে। জমি ক্রয়, বিক্রয়, দান, হেবা, বন্ধক বা অন্য যেকোনো ধরনের লেনদেনের জন্য দলিল অপরিহার্য। এই দলিলে জমির বিস্তারিত বিবরণ, যেমন - দাগ নম্বর, খতিয়ান নম্বর, মৌজা, জমির পরিমাণ এবং জমির বর্তমান ও পূর্ববর্তী মালিকদের তথ্য বিস্তারিতভাবে উল্লেখ থাকে।
দলিল যাচাইয়ের প্রক্রিয়া
দলিলের সত্যতা যাচাই করা খতিয়ান যাচাইয়ের মতোই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১. সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে যাচাইকরণ
সকল প্রকার দলিল সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে নিবন্ধিত হয়। তাই দলিলের তথ্য যাচাইয়ের জন্য সাব-রেজিস্ট্রি অফিসই প্রধান উৎস।
দলিলের ফটোকপি এবং একটি নির্দিষ্ট ফি সহ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে যেতে হবে।
সেখানে দলিলের ভলিউম বা ইনডেক্স থেকে দলিলের সঠিকতা যাচাই করা হয়। অফিসিয়াল রেকর্ড ব্যবহার করে দলিলের নম্বর, সাল, দাতা ও গ্রহীতার নাম এবং জমির বিবরণের সাথে বর্তমান দলিলের তথ্যের মিল আছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়।
দলিলের রেজিস্টার নম্বর, সাল, দাতা ও গ্রহীতার নাম এবং জমির বিবরণ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মিলিয়ে দেখা হয়।
বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে যে, দলিলের স্ট্যাম্প শুল্ক এবং অন্যান্য সরকারি ফি সঠিকভাবে পরিশোধ করা হয়েছে কিনা। কোনো অসঙ্গতি থাকলে তা ভবিষ্যতে আইনি জটিলতা তৈরি করতে পারে।
২. অনলাইন প্রাথমিক যাচাই (সীমিত পরিসরে)
বর্তমানে কিছু সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সীমিত পরিসরে অনলাইন ভেরিফিকেশন সিস্টেম চালু হয়েছে। এর মাধ্যমে দলিলের কিছু প্রাথমিক তথ্য যাচাই করা যেতে পারে। তবে, চূড়ান্ত নিশ্চিতকরণের জন্য সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে সরাসরি যাচাই করাই বেশি নির্ভরযোগ্য।
জালিয়াতি রোধে সতর্কতা
ভূমি সংক্রান্ত তথ্য যাচাইয়ের সময় বেশ কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরি:
জাল দলিলের ফাঁদ: অসাধু চক্র ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে প্রতারণা করতে পারে। তাই সবসময় সরকারি ওয়েবসাইট বা সরকারি অফিসের মাধ্যমে তথ্য যাচাই করা উচিত।
তথ্যের নির্ভুলতা: জমির দাগ নম্বর এবং খতিয়ান নম্বর যেন সঠিকভাবে মিলে যায়, সেদিকে বিশেষ মনোযোগ দিন। সামান্য ভুলও সম্পূর্ণ ভিন্ন জমির তথ্য এনে দিতে পারে।
মালিকানার ধারাবাহিকতা: জমির মালিকানার ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা যাচাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পূর্ববর্তী সব দলিলের মাধ্যমে মালিকানা সঠিকভাবে এসেছে কিনা, তা নিশ্চিত করতে একজন অভিজ্ঞ ভূমি বিশেষজ্ঞ বা আইনজীবীর সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
জমির খতিয়ান ও দলিলের তথ্য যাচাই একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং সংবেদনশীল প্রক্রিয়া। অনলাইনে এবং সরাসরি ভূমি অফিসে উভয় পদ্ধতিই নির্ভরযোগ্য, তবে সতর্কতা এবং সঠিক তথ্যের ব্যবহার অপরিহার্য। যেকোনো সন্দেহ বা জটিলতার ক্ষেত্রে একজন আইনজীবীর পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। এটি আপনার জমি সংক্রান্ত লেনদেনকে নিরাপদ ও ঝামেলামুক্ত রাখবে এবং সম্ভাব্য প্রতারণা থেকে রক্ষা করবে। এই প্রক্রিয়াটি হয়তো কিছুটা সময়সাপেক্ষ, তবে দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষার জন্য এটি অপরিহার্য।
আব্দুর রহিম/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- আজ বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচ: লাইভ দেখার সহজ উপায় ও সময়সূচি
- ৫ ব্যাংকের শেয়ার বাজেয়াপ্ত: সরকারি সিদ্ধান্তে শেয়ারহোল্ডাররা দিশেহারা!
- এক কোম্পানির শেয়ার 'জেড' থেকে 'এ' ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর
- 'জেড' থেকে 'এ' ক্যাটাগরি ও 'বি' থেকে 'জেড' ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর দুই কোম্পানির শেয়ার
- শেয়ারবাজারে আসছে বড় পরিবর্তন: ডিএসইর রেকর্ড ডেট প্ল্যান!
- বিএনপিতে শোকের ছায়া: বিএনপি মহাসচিবের শোক প্রকাশ
- বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা: বি-ক্যাটাগরির ঝুঁকি, ৬ শেয়ারে অবিশ্বাস্য মুনাফা
- আগামীকাল শনিবার যে সকল এলাকায় ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না
- অন্ধকারে 'জেড' ক্যাটাগরির ৯ শেয়ার: বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্কবার্তা!
- দুই কোম্পানির ক্যাটাগরি পরিবর্তন
- সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা: গ্রেড অনুযায়ী কার কত বেতন বাড়ছে
- লভ্যাংশ পেল ৩ কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- এক কোম্পানির শেয়ার ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর
- আর্সেনাল বনাম নটিংহাম ফরেস্ট: লাইভ দেখার উপায় ও সময়সূচি
- চলছে বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচ: লাইভ দেখুন এখানে