তিস্তা থেকে বেল্ট অ্যান্ড রোড: ড. ইউনূসের চীন সফরের কূটনৈতিক গুরুত্ব
নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন নেতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চীনে পা রাখছেন, এক এমন সময় যখন আন্তর্জাতিক কূটনীতির মাঠে বাংলাদেশের উপস্থিতি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। প্রতিবেশী ভারতকে পাশে রেখেই চীনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এই সফর, যেখানে লাল গালিচা বিছানো হবে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে। ইউনূসের এই সফর নতুন কূটনৈতিক সম্পর্কের সম্ভাবনা খুলে দিতে পারে।
২৭ মার্চ, চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় হাইনানে "বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া"-এর উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি ভাষণ দেবেন, যা আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও দৃঢ় করবে। পরদিন, ২৮ মার্চ, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে তার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এই সফরে ইউনূসের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদানও একটি বিশেষ মুহূর্ত হতে পারে।
ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কের উত্তপ্ত পরিস্থিতি ঘিরে, ইউনূসের চীন সফর এক নতুন কূটনৈতিক সম্ভাবনার সূচনা হতে পারে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জানুয়ারিতে ভারত সীমান্তে নতুন করে বেড়াবদ্ধকরণের কাজ শুরু করায় দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে। এরই মধ্যে ইউনূস চীনে গিয়ে বাংলাদেশের কূটনৈতিক শক্তি প্রদর্শন করতে পারেন, যা দেশটির আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক একদম নতুন নয়। ২০০৬ সালে চীন বাংলাদেশকে তার বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে ঘোষণা করে। গত বছর দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছুঁয়েছে, যার মধ্যে প্রধান অংশ ছিল চীনা রপ্তানি। বাংলাদেশের বৈশ্বিক সংযোগ কর্মসূচিতে চীনের অংশীদারিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, আর ইউনূসের সফর এই সম্পর্কের মজবুত ভিত্তি তৈরি করতে পারে।
এছাড়া, এই সফরের মাধ্যমে ইউনূস চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পে নতুন বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। পদ্মা সেতু রেল লিঙ্ক এবং কর্ণফুলী টানেলের মতো বড় প্রকল্পগুলোতে চীনের অংশীদারিত্ব ইতোমধ্যে দৃশ্যমান। তবে, চীন আরো বৃহৎ প্রকল্পের দিকে মনোযোগী হতে পারে, বিশেষ করে মংলা বন্দর সম্প্রসারণে চীনা ঋণ সহায়তার বিষয়ে।
তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হতে পারে তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনার আলোচনা। বাংলাদেশ-ভারত-চীনের মধ্যে তিস্তা প্রকল্প একটি ত্রিপক্ষীয় কূটনৈতিক যুদ্ধে পরিণত হয়েছে, যেখানে চীন ও ভারত দু'দিক থেকেই বাংলাদেশের উপর প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে। ইউনূসের চীন সফরের মাধ্যমে যদি এই প্রকল্পে কোনো ইতিবাচক অগ্রগতি হয়, তবে তা দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী কৌশলগত অবস্থানে নিয়ে যাবে।
সব মিলিয়ে, ইউনূসের চীন সফর কেবল একটি রাষ্ট্রীয় সফর নয়, এটি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক কূটনীতি, বাণিজ্য এবং অর্থনীতির জন্য নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দেওয়ার সুযোগ। চীনের সঙ্গে সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করার মাধ্যমে বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং কৌশলগত অবস্থানকে এগিয়ে নিতে পারে, যা ভবিষ্যতে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
মো: রাজিব আলী/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- বাংলাদেশ বনাম ভারত ফুটবল ম্যাচ: কখন, কোথায় ও কবে খেলা জানুন সময়সূচি
- বিএনপির ২৩ আসনে প্রার্থী পরিবর্তন! আসছে নতুন ১১ প্রার্থী
- আইএমএফের কড়া বার্তা: ঝুঁকিতে দেশের ১৬ ব্যাংক
- পুঁজিবাজারে স্বস্তি: বিএসইসি'র ‘মার্জিন রুলস নীতিমালা ২০২৫’ আসলো নতুন সিদ্ধান্ত
- একলাফে কমলো সোনার দাম, আজ ২২ ক্যারেট স্বর্ণের ভরি কত
- আগামীকাল ভারত বনাম বাংলাদেশ ফুটবল ম্যাচ: সময়সূচি, সম্ভাব্য একাদশ ও পরিসংখ্যান
- পাকিস্তান বনাম শ্রীলঙ্কা ৩য় ওয়ানডে: ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কা, সরাসরি দেখুন Live
- ‘জেড’ থেকে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে উত্তরণ এক কোম্পানি
- ব্রাজিল বনাম তিউনিশিয়া: কবে, কখন, কোথায় ম্যাচ জানুন সময়সূচি
- আজ ভারত বনাম বাংলাদেশ ফুটবল ম্যাচ: সময়সূচি ও হেড টু হেড পরিসংখ্যান
- শেখ হাসিনা রায় ঘোষণা করা হচ্ছে, সরাসরি দেখুন Live
- পর্তুগাল বনাম আর্মেনিয়া: শেষ হলো ১০ গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচ জানুন ফলাফল
- আজকের সোনার দাম: কমলো সোনার দাম, ২২ ক্যারেট স্বর্ণের ভরি কত
- পর্তুগাল বনাম আর্মেনিয়া: একাদশ, প্রেডিকশন ও লাইভ স্ট্রিমিং দেখবেন যেভাবে
- মঙ্গলবার ১৮ কোম্পানির লেনদেন স্থগিত: ডিএসইর বিজ্ঞপ্তি