ঢাকা, শনিবার, ৩ মে ২০২৫, ২০ বৈশাখ ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

পিনাকি ভট্টাচার্যের মুখে দেশ ছাড়ার নেপথ্য রহস্য

রাজনীতি ডেস্ক . ২৪আপডেট নিউজ
২০২৫ মে ০৩ ১০:২৫:৩০
পিনাকি ভট্টাচার্যের মুখে দেশ ছাড়ার নেপথ্য রহস্য

নিজস্ব প্রতিবেদক:

গুমের ভয়েই দেশ ছাড়ি’—পিনাকি জানালেন নেপথ্য কাহিনি

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিচিত একটি নাম—লেখক ও মানবাধিকারকর্মী পিনাকি ভট্টাচার্য। সরাসরি রাজনীতিতে জড়িত না হয়েও যাঁর বিশ্লেষণ ও বক্তব্য প্রভাব ফেলেছে সাধারণ মানুষের মাঝে। তবে আজ তিনি বাংলাদেশে নেই। রয়েছেন দূরদেশে, ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয়ে। কেন তাঁকে দেশ ছাড়তে হলো, সেই প্রশ্নের জবাব দিলেন নিজ মুখেই।

এক সাক্ষাৎকারে পিনাকি জানান, ২০১৮ সালে ‘নিরাপদ সড়ক আন্দোলন’ চলাকালীন শহীদুল আলম গ্রেপ্তারের দিন সকালেই একটি ফোন পান। ফোনটি এসেছিল ডিজিএফআই-এর পক্ষ থেকে। পরিচয় দিয়ে বলা হয়, তাঁকে অফিসে যেতে হবে। ফোনকারী নিজেকে "মেজর ফারহান" বলে পরিচয় দেন।

পিনাকি জানান, "আমি তখনই জানতে চাই যে কেন একজন সিভিলিয়ানকে ডিজিএফআই ডাকছে। তারা শুধু বলে—জরুরি কিছু কথা আছে। আমি বলি তাহলে আপনারা আমার অফিসে আসুন, বাসায় আসুন বা নিরপেক্ষ কোনো স্থানে দেখা করি। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই আবার ফোন করে জানানো হয়, আমাকে আজ সন্ধ্যার আগেই ডিজিএফআই অফিসে যেতে হবে।"

ঘটনার গুরুত্ব বুঝে তিনি বিষয়টি বন্ধু ও সহকর্মীদের জানান। তাঁদের পরামর্শে তিনি সিদ্ধান্ত নেন ডিজিএফআই অফিসে না যাওয়ার। তাঁর ভাষায়, "অনেকেই তখন বলেন আমি যেন আত্মগোপনে যাই। সেই তালিকায় আজকের সরকারের এক মন্ত্রীও ছিলেন।"

এরপরই শুরু হয় নজরদারি ও অনুসন্ধান। পিনাকি জানান, “পরদিন আমার বাসা ও অফিসে রেইড চালানো হয়। আমি কোথায় আছি, সেটা জানার চেষ্টা চলে। প্রায় পাঁচ মাস আত্মগোপনে ছিলাম ঢাকার নানা স্থানে।”

পরে নির্বাচন শেষ হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। “আমার বাসার সামনে সারাক্ষণ ডিজিএফআই-এর নজরদারি চলছিল। আমি বুঝে যাই—দেশে থাকা আমার পক্ষে আর নিরাপদ নয়।”

পিনাকি ভট্টাচার্য দাবি করেন, তখন তিনি নিখোঁজ ব্যক্তিদের ওপর একটি ডকুমেন্টেশন করছিলেন। সেখানে দেখতে পান, ডিজিএফআই যাদের ডেকে নেয়, তাদের অনেকেই আর ফেরত আসে না। এ থেকেই তাঁর মনে হয়, তাঁর ক্ষেত্রেও হয়তো একই পরিণতি অপেক্ষা করছে।

অবশেষে তিনি দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। আশ্রয় নেন ফ্রান্সে। কারণ হিসেবে বলেন, “আমি একটি ফরাসি মানবাধিকার সংস্থার সঙ্গে কাজ করতাম। তারাই আমাকে ফ্রান্সে রাজনৈতিক আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেয় এবং সর্বাত্মক সহায়তা করে।”

বর্তমানে পিনাকি ভট্টাচার্য ফ্রান্সে অবস্থান করছেন এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ইস্যুতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

আল-আমিন ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ