ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

লিটনের সরাসরি মেসেজ: ‘এই পারফরম্যান্স নিয়ে বিশ্বকাপে কী হবে

খেলা ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ মে ২২ ০১:৫৭:৩৩
লিটনের সরাসরি মেসেজ: ‘এই পারফরম্যান্স নিয়ে বিশ্বকাপে কী হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: শারজাহয়ে শুষ্ক আবহাওয়ায় অনুষ্ঠিত তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) বাংলাদেশকে ৭ উইকেটে পরাজিত করে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে নিজেদের নামে করেছে। এই জয়ে বিশ্বকাপের আগে ইউএই দলের প্রস্তুতিতে ইতিবাচক সঙ্কেত পাওয়া গেল।

বাংলাদেশের ইনিংস শুরুতে ভালোভাবে এগিয়েছিল। তানজিদ হাসান ১৮ বলে ঝড়ো ৪০ রান করলেও দলের অন্যান্য ব্যাটাররা পারভেজ হোসেন ইমনসহ দ্রুত আউট হয়ে যায়। জাকার আলী কিছুটা স্থিতি আনলেও বাংলাদেশ নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৬২ রানেই থামে। ইউএই বোলিংয়ে হায়দার আলী চার ওভারে মাত্র ৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচে বড় অবদান রাখেন।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইউএই প্রথমে উইকেট হারালেও আলিশান শরাফুর ৬৮ রানের অনবদ্য অপরাজিত ইনিংস এবং আসিফ খানের ৪১ রানের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে দলকে ১৯.১ ওভারে ৭ উইকেটে জয় এনে দেয়। বিশেষ করে আসিফের ২৬ বলে পাঁচটি ছক্কাসহ ঝড়ো ইনিংস দলকে জয়ের পথে ধাক্কা দিয়ে এগিয়ে নেয়।

বাংলাদেশের বোলিং বিভাগ কার্যকরী হতে পারেনি, বিশেষ করে শেষ ওভারগুলোতে ধীর ওভারপিচড বল করায় ইউএই ব্যাটাররা সুবিধা নিয়েছে। রিশাদ রাজা গুরুত্বপূর্ণ সময়ের দুটি ওভার বোলিং করেন যেখানে ১৯ রান পড়ে, সেই ওভারটিই ম্যাচের গতিপথ পাল্টে দেয়। এছাড়াও তানজিদ তামিম একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ হাতছাড়া করেন, যা ইউএইয়ের জয় নিশ্চিত করতে বড় প্রভাব ফেলে।

ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন আলিশান শরাফু, যিনি বলেন, “আমার পরিকল্পনা ছিল যতটা সম্ভব বেশি বল খেলা। ওরা (বাংলাদেশ) শক্তিশালী বোলিং করেছিল, কিন্তু আমরা চাপ সামলে ভালো খেলেছি। বিশেষ করে আসিফের আগমনে সহজ হয়ে যায় ইনিংস চালিয়ে যাওয়া। আমাদের ড্রেসিংরুমে সবাই খুব আশাবাদী ছিল সিরিজ জয়ের ব্যাপারে।”

সিরিজের সেরা খেলোয়াড় মুহাম্মদ ওয়াসিম বলেন, “আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ, আমাদের দল এবং কোচিং স্টাফকে ধন্যবাদ। পাঁচজন নতুন খেলোয়াড়ের মধ্যে হায়দার আলী অভিষেকে খুব ভালো বোলিং করেছে। এই সিরিজ আমাদের জন্য ইতিহাস, যা ভবিষ্যতে অনেক সাহায্য করবে।”

লিটন বলেন, "নিশ্চিতভাবে বলব, আজকের পারফরম্যান্স আমাদের মান অনুযায়ী হয়নি। আপনি যখনই মাঠে নামেন, জয়ের লক্ষ্য নিয়েই নামেন। কিন্তু খেলা জীবনেরই অংশ এবং ক্রিকেটে সবসময় সবকিছু আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকে না। প্রতিপক্ষও ভালো খেলতে পারে—আজকের ম্যাচে সেটা হয়েছে। তাদের কৃতিত্ব দিতেই হবে।"

বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং ব্যর্থতা নিয়ে তিনি বলেন, "ব্যাটিংয়ে আমরা কয়েকটা ভুল করেছি। এই উইকেট ও কন্ডিশনের জন্য আমরা যেটা চেয়েছিলাম, সেটার কাছেও পৌঁছাতে পারিনি।"

গত কয়েকটি ম্যাচে টস হেরে পরে বল করার চ্যালেঞ্জ নিয়েও কথা বলেন লিটন। "গত তিন ম্যাচে আমরা পরে বোলিং করেছি এবং সব কটিতেই শিশির বড় প্রভাব ফেলেছে," বলেন লিটন।

তবে হতাশার মধ্যেও ইতিবাচক কিছু দিক খুঁজে পাচ্ছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। "পজিটিভ দিক বলতে গেলে, পারভেজ ইমন, তানজিদ তামিম—এই দুজন ভালো কয়েকটা ইনিংস খেলেছে। হৃদয় ও জাকেরও ভালো ব্যাটিং করেছে। বোলিংয়েও মাঝখানে কয়েকজন ভালো করেছে। তবে আমাদের আরও শেখার দরকার আছে, এবং শেখা শিখেই ম্যাচে সঠিকভাবে সেটা বাস্তবায়ন করতে হবে।"

সংযুক্ত আরব আমিরাত দলের প্রশংসা করে লিটন বলেন, "আজ তারা খুব ভালো খেলেছে, বিশেষ করে প্রথমার্ধে তারা দারুণ বোলিং করেছে। এজন্যই আমরা ভালো স্কোর করতে পারিনি। ব্যাটিংয়ে শিশির তাদের কিছুটা সাহায্য করেছে, তবে যারা মিডল অর্ডারে ব্যাট করেছে, তারা ধৈর্য ধরে খেলেছে, ঘাবড়ে যায়নি। এজন্যই কৃতিত্ব তাদের প্রাপ্য।"

শেষ কথা হিসেবে লিটন দাস বলেন, "শেখার কোনো শেষ নেই। আমরা আরও শিখে, ভবিষ্যতে ভালোভাবে ফিরে আসব—এই বিশ্বাস আমাদের আছে।"

ম্যাচসংশ্লিষ্ট পরিসংখ্যান এক নজরে

বাংলাদেশ: ১৬২/৯ (২০ ওভার)

তানজিদ ১৮ বলে ৪০, জাকার আলী ৩৪ বলে ৪১

হায়দার আলী: ৪ ওভারে ৭ রানে ৩ উইকেট

সংযুক্ত আরব আমিরাত: ১৬৬/৩ (১৯.১ ওভার)

শরাফু ৪৭ বলে ৬৮*, আসিফ খান ২৬ বলে ৪১*

জয়: আমিরাত ৭ উইকেটে জয়ী (৫ বল হাতে রেখে)

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ