ঢাকা, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২

তিন কোম্পানির শেয়ার ৫২ সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে

শেয়ারবাজার ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুন ২৮ ১৩:৫৫:৪২
তিন কোম্পানির শেয়ার ৫২ সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত তিনটি কোম্পানির শেয়ারদাম চলতি সপ্তাহে ৫২ সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবারের লেনদেনে ফাস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট, ন্যাশনাল ব্যাংক এবং এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ারে বড় ধরনের মূল্য সংশোধন ঘটে। এতে করে বাজারে সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা ও সতর্কতা বাড়ছে।

ফাস ফাইন্যান্স: আর্থিক দুর্বলতা ও দীর্ঘদিন ডিভিডেন্ড না দেওয়ার প্রভাব

নন-ব্যাংক আর্থিক খাতভুক্ত কোম্পানিটি বৃহস্পতিবার ২ টাকা ৭০ পয়সায় লেনদেন শেষ করে, যা গত এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। ৫২ সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ দর ছিল ৪ টাকা ৯০ পয়সা।

ফাস ফাইন্যান্স সর্বশেষ ২০১৮ সালে ৫ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড দেয়। এরপর থেকে কোম্পানিটি কোনো ধরনের ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। সর্বশেষ আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী কোম্পানিটির রিজার্ভ ও সম্পদমূল্য নেতিবাচক অবস্থানে রয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থায় সরাসরি প্রভাব ফেলছে।

ন্যাশনাল ব্যাংক: টানা লোকসান ও ডিভিডেন্ড বন্ধ

ব্যাংক খাতের অন্যতম কোম্পানি ন্যাশনাল ব্যাংকের শেয়ার বৃহস্পতিবার ৩ টাকা ৪০ পয়সায় লেনদেন হয়, যা এক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। কোম্পানিটি এক সময় ৮ টাকা ৮০ পয়সা পর্যন্ত লেনদেন হয়েছিল।

২০২০ সালে ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড দেওয়ার পর গত তিন বছর কোনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করা হয়নি। ব্যাংকটির রিজার্ভ নেতিবাচক থাকলেও সম্পদমূল্য ৭ টাকা ৩০ পয়সা। ধারাবাহিক লোকসান কোম্পানিটির ভবিষ্যৎ আয়প্রবাহ নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করেছে।

এনআরবিসি ব্যাংক: ডিভিডেন্ড না দেওয়ায় চাপ

নতুন প্রজন্মের ব্যাংক এনআরবিসি ব্যাংকের সর্বশেষ শেয়ারদাম দাঁড়িয়েছে ৫ টাকা ৯০ পয়সা, যা ৫২ সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন। কোম্পানিটির সর্বোচ্চ দর ছিল ১২ টাকা ৭০ পয়সা।

২০২৩ সালে ১১ শতাংশ নগদ ডিভিডেন্ড দিলেও ২০২৪ সালে প্রভিশন ঘাটতি বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানিটি ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারেনি। এতে বিনিয়োগকারীদের রিটার্ন প্রত্যাশায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

বাজার বিশ্লেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি

বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দীর্ঘ মেয়াদে মূল্যপতনের সময় অনেক সময় বিনিয়োগের উপযুক্ত সুযোগ তৈরি হয়। তবে এজন্য প্রয়োজন কোম্পানির আর্থিক স্বাস্থ্য, ব্যবস্থাপনা দক্ষতা এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার সুস্পষ্ট বিশ্লেষণ।

তাদের মতে, কোম্পানিগুলো যদি কাঠামোগত সংস্কার এবং পরিচালন কাঠামো শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নেয়, তবে বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনর্গঠন সম্ভব। পাশাপাশি নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো কোম্পানিগুলোর কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কাজ করছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের জন্য এই কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে হলে সতর্কভাবে আর্থিক বিশ্লেষণ করা জরুরি। ডিভিডেন্ড নীতিমালা, আর্থিক স্থিতি ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণই দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীল রিটার্নের নিশ্চয়তা দিতে পারে।

মো: রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ