গরমে বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ: চিকিৎসকরা যা বলছেন শিশুদের জন্য
নিজস্ব প্রতিবেদক: গরম পড়তেই শিশুদের অসুস্থতা যেন বেড়ে যায় হঠাৎ করে। এর পেছনে অন্যতম কারণ হলো—ডায়রিয়া। অনেকেই এটিকে সাধারণ রোগ হিসেবে ভাবলেও, একটু অবহেলা এই অসুখকে রূপ দিতে পারে প্রাণঘাতী সংকটে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুর শরীরে তরল পদার্থের ঘাটতি বা পানিশূন্যতা ডায়রিয়ার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দিক। তাই এই রোগের কারণ, লক্ষণ, প্রতিকার এবং প্রতিরোধ সম্পর্কে আগে থেকেই জানা থাকা জরুরি।
কেন হয় ডায়রিয়া?
ডায়রিয়া মূলত অন্ত্রে সংক্রমণের ফলে হয়ে থাকে। এর জন্য দায়ী হতে পারে—
ব্যাকটেরিয়া (যেমন: কলেরা),
ভাইরাস (যেমন: রোটাভাইরাস),
অথবা প্রোটোজোয়া (যেমন: অ্যামিবিয়া)।
এ ছাড়া অপরিষ্কার পানি, খোলা খাবার খাওয়া, অথবা অপরিচ্ছন্ন হাতে শিশুকে কিছু খাওয়ানো—এসব ছোট ভুল থেকেই ডায়রিয়ার সূচনা হতে পারে।
প্রাথমিক লক্ষণ: সতর্ক হওয়ার সময় এখনই
ডায়রিয়া শুরুর আগে বা সময়কালে শিশুদের মধ্যে দেখা দেয় কিছু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। যেমন:
ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হওয়া
বমি হওয়া
দুর্বলতা ও অস্থিরতা
ক্ষুধামান্দ্য
তবে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় হলো ডিহাইড্রেশন বা শরীরে পানির ঘাটতি, যা চোখে পড়ার মতো লক্ষণ দিয়ে ধীরে ধীরে শিশুকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে।
পানিশূন্যতার ৩টি স্তর—আপনি কোন পর্যায়ে বুঝবেন?
১. মৃদু পানিশূন্যতা:
শিশু দেখতে স্বাভাবিক থাকে
শুধু ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হয়
তেমন কোনো দৃশ্যমান পরিবর্তন থাকে না
২. স্বল্প পানিশূন্যতা:
শিশু অস্থির হয়ে পড়ে
মুখে ও ঠোঁটে শুষ্কতা দেখা দেয়
ঘন ঘন পানি খেতে চায়
চোখ কিছুটা বসে যায়, চামড়া টান দিলে দেরিতে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরে
তীব্র পানিশূন্যতা (জীবন ঝুঁকিপূর্ণ):
শিশু নিস্তেজ হয়ে পড়ে
পানি খাওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে
চোখ গভীরভাবে বসে যায়
চামড়ার স্থিতিস্থাপকতা মারাত্মকভাবে কমে যায়
হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসে
চিকিৎসা: দুটি স্তম্ভে দাঁড়িয়ে পুরো চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা
১. সংক্রমণের উৎসের চিকিৎসা:
ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া সবচেয়ে বেশি দেখা যায় শিশুদের মধ্যে। এতে সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিকের দরকার হয় না। তবে ব্যাকটেরিয়ার কারণে ডায়রিয়া হলে, যেমন কলেরায়, অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হয় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী।
২. পানিশূন্যতা প্রতিরোধ ও চিকিৎসা:
মৃদু ও স্বল্প ডিহাইড্রেশনে ওরস্যালাইনই সবচেয়ে বড় অস্ত্র। প্রতিবার পাতলা পায়খানার পরপরই শিশুকে ওরস্যালাইন খাওয়ানো উচিত।
তীব্র পানিশূন্যতায় আইভি স্যালাইনের প্রয়োজন হয়। এই অবস্থায় সময় নষ্ট না করে হাসপাতালে নেওয়াই একমাত্র পথ।
মনে রাখবেন: প্রতিটি পাতলা পায়খানার পর একটি করে খাবার স্যালাইনের পরিমাণ শিশুকে খাওয়াতে হবে। যদি বমি করে, তবে একটু সময় নিয়ে আবার খাওয়ানোর চেষ্টা করুন।
প্রতিরোধেই নিরাপত্তা: আগে থেকেই সাবধান হন
ডায়রিয়া থেকে শিশুকে সুরক্ষিত রাখতে হলে অভিভাবকদের নিচের নিয়মগুলো মানতেই হবে:
পরিষ্কার পানি পান করান
খাবার ঢেকে রাখুন
শিশুকে খাওয়ানোর আগে ও টয়লেটের পর ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুতে শিখান
বৃষ্টির মৌসুমে রাস্তার খোলা খাবার একেবারেই পরিহার করুন
শিশু অসুস্থ হলে নিজে ও গুগলে সার্চ না করে চিকিৎসকের কাছে যান
সচেতনতা দিয়েই থামানো যায় এই নীরব ঘাতককে
ডায়রিয়া, নামটা ছোট হলেও এর পরিণতি হতে পারে ভয়ঙ্কর। প্রতি বছর বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে হাজার হাজার শিশু মারা যায় এই প্রতিরোধযোগ্য রোগে। অথচ সময়মতো পানি, স্যালাইন আর সচেতনতার মাধ্যমে সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব এই বিপদকে।
তাই ঘরে বসেই শুরু হোক সচেতনতার প্রস্তুতি। মা-বাবার একটু নজরদারিই শিশুর জীবন বাঁচাতে পারে।
মোঃ রাজিব আলী/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- আর্জেন্টিনা বনাম বাংলাদেশ ম্যাচ কবে, জানুন সময়সূচি
- আর্জেন্টিনা বনাম বাংলাদেশ: কখন, কোথায় ও কীভাবে দেখবেন লাইভ
- আর্জেন্টিনা বনাম বাংলাদেশ আজকের খেলালাইভ দেখার সহজ উপায়
- বাংলাদেশ বনাম আর্জেন্টিনা: সরাসরি দেখুন Live
- earthquake today: আবারও ভূমিকম্প, মাত্রা কত ও উৎপত্তিস্থল কোথায়
- কিছুক্ষণ পর বাংলাদেশ বনাম আর্জেন্টিনা ম্যাচ: সরাসরি Live দেখুন এখানে
- আর্জেন্টিনা বনাম বাংলাদেশ ম্যাচ কবে, কখন, কোথায় ও কীভাবে দেখবেন লাইভ
- চলছে বাংলাদেশ বনাম আর্জেন্টিনা ম্যাচ:খেলাটি সরাসরি দেখুন Live এখানে
- Argentina vs Bangladesh : ৮০ মিনিটের খেলা শেষ, জানুন ফলাফল
- চলছে Argentina vs Bangladesh ম্যাচ: খেলাটি সরাসরি দেখুন Live এখানে
- আজ আর্জেন্টিনা বনাম বাংলাদেশ ম্যাচ: খেলাটি লাইভ দেখার উপায় ও সময়সূচি
- বাংলাদেশ বনামআর্জেন্টিনা ম্যাচ কবে, জানুনসময়সূচি
- আজ আর্জেন্টিনা বনাম বাংলাদেশ ম্যাচ: খেলাটি সরাসরি Live দেখবেন যেভাবে
- বাংলাদেশ বনাম আর্জেন্টিনা : ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জানুন ফলাফল
- চলছে Argentina vs Bangladesh ম্যাচ: ২২ মিনিটে দ্বিতীয় গোল, Live দেখুন এখানে