ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনায় বিশাল অঙ্কের ক্ষতি ভারতের

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ মে ১০ ২১:৪৬:৪২
পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনায় বিশাল অঙ্কের ক্ষতি ভারতের

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের উত্তেজনা এবং সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার জেরে ভারতের শেয়ারবাজারে ব্যাপক দরপতন ঘটেছে। জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা এবং সীমান্তে গোলাগুলির পরিস্থিতি তৈরি হয়। এই উত্তেজনা গত কয়েকদিনে এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, ভারতের শেয়ারবাজারে প্রায় যুদ্ধের অবস্থা তৈরি হয়েছিল।

ভারতের শেয়ারবাজারে গত দুই দিনে প্রায় ৮৩ বিলিয়ন ডলারের (৮ হাজার ৩০০ কোটি ডলার) ক্ষতি হয়েছে। এটি ভারতীয় শেয়ারবাজারের জন্য এক বড় ধরনের বিপর্যয় হিসেবে দেখা দিয়েছে। সংবাদমাধ্যম রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮ ও ৯ মে—এই দুই দিনেই ভারতের শেয়ারবাজারে এই বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে।

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানায়, ১০ মে শনিবার বিকেলে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা আসার আগ পর্যন্ত শেয়ারবাজারে ব্যাপক অস্থিরতা বিরাজ করে। বিশেষ করে, সীমান্তে গোলাগুলি এবং পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উদ্বেগ ছিল চরমে।

অথচ, এসব উত্তেজনার মাঝেও ভারতের শেয়ারবাজারে কিছু সেক্টর অন্যান্যদের তুলনায় ভালো ফলাফল দেখিয়েছে। বিশেষ করে গাড়ি নির্মাতা খাতে কিছুটা স্বস্তি দেখা গেছে। টাটা মোটরসের শেয়ার ৮ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে গেছে, কারণ তারা যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য চুক্তির আশায় জেগে উঠেছে।

তবে, ভারতের শেয়ারবাজারের দুই প্রধান সূচক, এনএসই নিফটি ৫০ এবং বিএসই সেনসেক্স, শুক্রবার ১ দশমিক ১ শতাংশ হ্রাস পায়। সেনসেক্স সূচক ৮০ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে আসে, যা ভারতের শেয়ারবাজারের জন্য এক বড় ধরনের সংকেত। একই সঙ্গে, এই দুই সূচক এক সপ্তাহে প্রায় ১ দশমিক ৩ শতাংশ পতন দেখিয়েছে, যা চলতি বছরের সবচেয়ে দীর্ঘ তিন সপ্তাহের ঊর্ধ্বগতির ধারাকে ছিন্ন করেছে।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ার কারণে শেয়ারবাজারে উদ্বেগ এবং অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। প্রফিটমার্ট সিকিউরিটিজের গবেষণা প্রধান, অবিনাশ গোরাক্ষকর বলেন, ‘‘পাকিস্তান যদি আরও হামলা চালায়, তাহলে তা দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে পরিণত হতে পারে।’’ এর ফলে মৌলিক অর্থনৈতিক বিষয়গুলো পিছনে পড়ে গিয়ে শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এমন পরিস্থিতি আগামী এক সপ্তাহ পর্যন্ত বাজারের গতি ব্যাহত করতে পারে।

এদিকে, ভারতীয় রুপিরও পতন ঘটেছে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংককে রুপির অবমূল্যায়ন ঠেকাতে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। ছোট ও মাঝারি কোম্পানির শেয়ারেও কমে এসেছে প্রায় ১ দশমিক ৯ শতাংশ এবং ০ দশমিক ৮ শতাংশ।

সব মিলিয়ে, ভারতীয় অর্থনীতির জন্য একটি উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, যেখানে পাকিস্তান-ভারত সম্পর্কের উত্তেজনা সরাসরি অর্থনৈতিক বাজারে প্রভাব ফেলেছে। তবে, গাড়ি নির্মাণ খাতের মাঝে কিছুটা আশা দেখা যাচ্ছে, যা ভারতের অর্থনীতির জন্য সুখবর।

মোঃ রাজিব আলী/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ