লন্ডনে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের ১৪০০ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ!

নিজস্ব প্রতিবেদক: এক সময়ের অপ্রতিরোধ্য শাসন, দেশের রাজনীতিতে যার ছিল সর্বোচ্চ ক্ষমতা—সেই শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে এবার কড়াকড়ি ব্যবস্থা নিয়েছে যুক্তরাজ্য। লন্ডনের অভিজাত এলাকায় গড়ে ওঠা বিলাসবহুল বাংলো আর দামি অ্যাপার্টমেন্টগুলো আর গোপন থাকল না। ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) জব্দ করেছে এমনই নয়টি সম্পত্তি, যার মোট মূল্য প্রায় ৯০ মিলিয়ন পাউন্ড—বাংলাদেশি মুদ্রায় ১,৪০০ কোটির বেশি।
শনিবার (২৪ মে) দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় প্রকাশিত এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এই বিস্ফোরক তথ্য সামনে আসে। প্রতিবেদনে জানানো হয়, এনসিএ-এর চলমান সিভিল তদন্তের অংশ হিসেবে এই সম্পত্তিগুলো ফ্রিজ (অর্থাৎ, ব্যবহার ও স্থানান্তর নিষিদ্ধ) করা হয়েছে।
জব্দ করা সম্পত্তিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত দুটি—একটি লন্ডনের অভিজাত গ্রোভনার স্কয়ারে ৬.৫ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের একটি অ্যাপার্টমেন্ট, অপরটি উত্তর লন্ডনের গ্রেশাম গার্ডেনস এলাকার ১.২ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের বাড়ি।
এই দুটি সম্পত্তির মালিকানা সালমান এফ রহমানের ছেলে শায়ান এফ রহমানের বলে চিহ্নিত করেছে এনসিএ। সালমান ছিলেন শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা। রাজনৈতিক মহলে তাকে এক সময় 'অদৃশ্য ক্ষমতার অন্যতম চালক' হিসেবেও বিবেচনা করা হতো।
তবে ঘটনা এখানেই শেষ নয়। ফিনান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, গ্রেশাম গার্ডেনসের সেই বাড়িটিতে বসবাস করতেন শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা, যিনি আবার ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের মা। এই তথ্য প্রকাশের পর যুক্তরাজ্যে রাজনীতিতেও তা নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে।
গত বছর দ্য গার্ডিয়ান ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এক যৌথ অনুসন্ধানে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠদের বিদেশে ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ডের সম্পদের তথ্য ফাঁস করে। সেই অনুসন্ধান থেকেই সূচনা হয় এনসিএ-এর এই তদন্ত।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ইউকে-এর নীতি পরিচালক ডানকান হেমস বলেন, “বিলম্ব নয়, এখনই সময় যুক্তরাজ্যের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার। জনগণের অর্থ যারা লুকিয়ে রেখেছে, তাদের সম্পদ যত দূরেই থাকুক, তা খুঁজে বের করতে হবে।”
একই সুর এনসিএ-এর মুখপাত্রের কথাতেও—“আমরা নিশ্চিত করছি, এনসিএ বর্তমানে একটি সিভিল তদন্তের অংশ হিসেবে একাধিক সম্পত্তি জব্দ করেছে এবং আরও তদন্ত চলছে।”
বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে উচ্চপর্যায়ের দুর্নীতি, লুটপাট আর বিদেশে অর্থ পাচার নিয়ে নানা আলোচনা চললেও এবার সেটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাস্তব রূপ নিল।
লন্ডনের অভিজাত ফ্ল্যাটে যাদের ছিল গোপন আস্তানা, তাদের নাম এখন যুক্তরাজ্যের তদন্ত তালিকায়। এক সময় যারা দেশে ছিলেন untouchable, এখন তাদের সম্পত্তির গায়ে লাল দাগ। এই ঘটনা শুধু একটি ফ্রিজিং অর্ডার নয়—এ যেন দুর্নীতির বিরুদ্ধে বৈশ্বিক জবাবদিহির এক নতুন অধ্যায়।
মো: রাজিব আলী/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- ৩ কোম্পানির কারখানায় ঝুলছে তালা, ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের
- শেয়ারবাজারে কারসাজির চক্র: দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দামে অস্বাভাবিক উল্লম্ফন
- শেয়ারবাজার স্থিতিশীলতায় আইসিবির বিশেষ তহবিল থাকবে ২০৩২ সাল পর্যন্ত
- ৮ প্রতিষ্ঠানের লভ্যাংশ ঘোষণা, ছয় কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা খেলো ধাক্কা
- শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সের বাঁচা মরার ম্যাচ
- রপ্তানি আয়ের ৮ হাজার কোটি টাকা গায়েব: কেয়া গ্রুপ ও চার ব্যাংককে তলব
- ভারত বনাম বাংলাদেশ : ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনে নিন ফলাফল
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিএসইর বিশেষ সতর্কবার্তা
- বীমা খাতে সুবাতাস, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১৯ কোম্পানির মুনাফায় উল্লম্ফন
- বদলে গেল ফোনের ডায়াল প্যাড, জানুন আসল কারণ ও আগের অবস্থায় ফেরানোর উপায়
- শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচটি প্রতিষ্ঠান বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা
- ভারত বনাম বাংলাদেশ: গোল, গোল, ৮০ মিনিটের খেলা শেষ
- বদলে গেল আপনার ফোনের ডায়াল প্যাড, আতঙ্ক নয় সমাধান আছে, জেনে নিন
- মার্জিন বিধিমালা ২০২৫ খসড়া প্রকাশ, বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় ঘোষণা
- এশিয়া কাপ 2025 : বাংলাদেশের চুড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করলো বিসিবি