ঢাকা, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

সকালে ওঠার ৭টি উপকারিতা জানলে আজ থেকেই অভ্যাস শুরু করবেন

লাইফ স্টাইল ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ জুলাই ২৬ ১১:২৭:৪৩
সকালে ওঠার ৭টি উপকারিতা জানলে আজ থেকেই অভ্যাস শুরু করবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজকের ব্যস্ত ও প্রযুক্তিনির্ভর জীবনে অনেকেই রাত জেগে কাজ করাকে ‘স্মার্টনেস’ মনে করেন। তবে গবেষণা বলছে, যাঁরা নিয়মিত ভোরে ওঠেন, তাঁদের শরীর-মন দুটোই ভালো থাকে এবং কর্মজীবনে তাঁরা হয়ে ওঠেন আরও সফল।

বিশ্বজুড়ে নানা গবেষণায় দেখা গেছে, সকালবেলা ওঠার অভ্যাস ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখে। শুধু তাই নয়, অনেক সফল উদ্যোক্তা, খেলোয়াড় ও চিন্তাবিদদের মধ্যে এই অভ্যাসটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হিসেবে দেখা যায়।

সকালে ওঠার ৭টি বড় উপকারিতা:

১. মানসিক স্বচ্ছতা ও মনোযোগ বৃদ্ধি

ভোরের নির্মল পরিবেশ এবং দেহ-মন বিশ্রামের পর পাওয়া সতেজতা আপনাকে দিন শুরুতে মনোযোগী করে তোলে। গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে উঠলে মস্তিষ্কের কগনিটিভ ফাংশন (মেমোরি, চিন্তা, বিশ্লেষণ) বৃদ্ধি পায়।

২. স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে ওঠে

সকালে উঠে হালকা ব্যায়াম, মেডিটেশন, বা স্বাস্থ্যকর নাস্তা গ্রহণের সুযোগ থাকে। এটি হজমশক্তি বাড়ায়, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।

৩. সময় ব্যবস্থাপনায় সহায়ক

ভোরে ওঠা মানেই হাতে বেশি সময়। এতে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সময়মতো সম্পন্ন করা যায় এবং ব্যস্ততা কমে। এই অভ্যাস জীবনকে করে তোলে নিয়মানুবর্তী ও প্রোডাক্টিভ।

৪. মানসিক প্রশান্তি ও স্ট্রেস কমে

সকালের নির্মল আলো, পাখির ডাক, ঠান্ডা বাতাস মনকে করে শান্ত। এটি মানসিক উদ্বেগ ও বিষণ্নতা কমাতে সহায়ক।

৫. সূর্যালোক গ্রহণের সুযোগ

প্রাকৃতিক ভিটামিন ডি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ভোরে উঠে হাঁটলে তা সহজেই গ্রহণ করা যায়।

৬. রাতে ভালো ঘুম হয়

যাঁরা সকালবেলা ঘুম থেকে ওঠেন, তাঁদের রাতে ঘুমও হয় নিরবিচারে এবং গভীর। এটি সারাদিনের ক্লান্তি দূর করে শরীরকে চাঙা রাখে।

৭. কর্মদক্ষতা ও সৃজনশীলতা বাড়ায়

সকালে মস্তিষ্ক নতুন আইডিয়া নিতে সবচেয়ে প্রস্তুত থাকে। তাই লেখালেখি, পরিকল্পনা বা সৃজনশীল কাজের জন্য সকাল শ্রেষ্ঠ সময়।

বৈজ্ঞানিক সমর্থন:

একটি গবেষণায় (Harvard Biobehavioral Health Study, ২০২২) দেখা গেছে, যারা সকালে ওঠে তাদের মধ্যে বিষণ্নতার হার ২৫% কম, কর্মদক্ষতা ৩৫% বেশি এবং তাদের দিনটি ছিল গড়ে ১.৫ ঘণ্টা বেশি উৎপাদনশীল।

কাদের জন্য জরুরি?

শিক্ষার্থী যারা পড়ালেখায় মনোযোগ বাড়াতে চান

চাকরিজীবী যারা সময় ম্যানেজমেন্টে দুর্বল

গৃহিণী বা উদ্যোক্তা যারা নিজের জন্য একটু শান্ত সময় খোঁজেন

মানসিক চাপ বা ঘুমের সমস্যায় ভোগা ব্যক্তি

সকালে ওঠা কোনও কষ্টকর কাজ নয়, বরং এটি আপনার জীবনকে নতুন ধারায় পরিচালিত করার একটি চাবিকাঠি। আপনি যদি সফল, সুস্থ ও সুশৃঙ্খল জীবন চান, তবে আজ থেকেই শুরু করুন ভোরের অভ্যাস।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQ)

প্রশ্ন ১: কতটায় উঠলে “সকালে ওঠা” বলা যায়?

উত্তর: সাধারণভাবে ভোর ৪টা থেকে সকাল ৬টার মধ্যে ঘুম থেকে ওঠাকে “সকালে ওঠা” হিসেবে ধরা হয়। তবে একজন ব্যক্তির ঘুমের রুটিন ও ঘুমের দৈর্ঘ্যের উপরেও তা নির্ভর করে।

প্রশ্ন ২: সকালের কোন সময়টা সবচেয়ে প্রোডাক্টিভ?

উত্তর: গবেষণা অনুযায়ী, সকাল ৬টা থেকে ৯টার মধ্যে সময়টি অধিকাংশ মানুষের জন্য মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ও মনোযোগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রোডাক্টিভ সময় হিসেবে ধরা হয়।

প্রশ্ন ৩: সকালে উঠলে শরীরের কী কী উপকার হয়?

উত্তর: সকালে উঠলে হজমশক্তি ভালো থাকে, মেটাবলিজম বাড়ে, হৃদযন্ত্র ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে, এবং শরীর বেশি সক্রিয় থাকে। এছাড়া প্রাকৃতিক ভিটামিন-ডি গ্রহণের সুযোগও মেলে।

প্রশ্ন ৪: সকালে উঠলে মানসিক স্বাস্থ্যের কী উপকার হয়?

উত্তর: সকালে উঠলে মানসিক প্রশান্তি বাড়ে, স্ট্রেস কমে, এবং দুশ্চিন্তা বা বিষণ্নতার ঝুঁকি কমে যায়। সকালে সূর্যের আলো ও নির্মল বাতাস মনকে স্বস্তি দেয়।

প্রশ্ন ৫: রাতে দেরি করে ঘুমিয়ে সকালে ওঠা কি শরীরের জন্য ক্ষতিকর?

উত্তর: হ্যাঁ, কারণ ঘুমের পর্যাপ্ততা কম হলে সকালে উঠেও আপনি ক্লান্ত বোধ করবেন। তাই সকালে উঠতে হলে অন্তত ৬-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করতে হবে।

প্রশ্ন ৬: সকালের কোন অভ্যাসগুলো সবচেয়ে কার্যকর?

উত্তর: সকালে উঠে পানি পান, হালকা ব্যায়াম বা স্ট্রেচিং, মেডিটেশন বা প্রার্থনা, স্বাস্থ্যকর নাস্তা এবং দিনটির কাজের পরিকল্পনা — এগুলো সকালের সবচেয়ে কার্যকর অভ্যাস।

প্রশ্ন ৭: কিভাবে সকালে উঠার অভ্যাস গড়ে তোলা যায়?

উত্তর: ধীরে ধীরে ঘুমের সময় এগিয়ে আনুন, ঘুমের আগে স্ক্রিন টাইম কমান, বিছানায় যাওয়ার আগে ক্যাফেইন এড়িয়ে চলুন এবং ঘুমানোর সময় নির্দিষ্ট রাখুন। ঘুমের আগে রিল্যাক্সিং রুটিন সহায়ক হতে পারে।

আল-আমিন ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ