ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২

Alamin Islam

Senior Reporter

প্রতিদিন মাত্র দুটি খেজুর খান পরিবর্তন আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন

লাইফ স্টাইল ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ অক্টোবর ৩০ ১১:৩১:১৭
প্রতিদিন মাত্র দুটি খেজুর খান পরিবর্তন আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন

আরব মরুভূমির এই ফলটি স্বাদে যেমন অতুলনীয়, পুষ্টিগুণেও তেমনি ভরপুর। খেজুরকে অনায়াসে স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় শীর্ষস্থান দেওয়া চলে। যারা কৃত্রিম চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলতে চান, তাদের খাদ্যতালিকায় খেজুর এক অসাধারণ সংযোজন হতে পারে। চিকিৎসকদের মতে, দৈনিক মাত্র দুটি খেজুর সেবন করলে শরীরের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমে বিস্ময়কর ইতিবাচক পরিবর্তন আসে। চলুন, সেই উল্লেখযোগ্য উপকারিতাগুলো জেনে নেওয়া যাক:

তাৎক্ষণিক জ্বালানি লাভ

শরীরের তাৎক্ষণিক জ্বালানির উৎস হিসেবে খেজুর অত্যন্ত কার্যকর। এর গঠনের প্রায় ৯৮ শতাংশই হলো শর্করা। প্রতিটি খেজুরে মোটামুটি ৬৬ ক্যালোরি শক্তি বিদ্যমান থাকে। 'ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ফুড সায়েন্স অ্যান্ড নিউট্রিশন'-এর গবেষণা অনুযায়ী, এটি দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে। দৈনন্দিন কায়িক বা মানসিক পরিশ্রমের পর সৃষ্ট অবসাদ কাটাতে একটি খেজুর চটজলদি সমাধান দিতে পারে।

হজমতন্ত্রের উন্নতি ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়

খেজুরে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যতালিকাগত আঁশ বা ফাইবার উপস্থিত। এই উপাদানটি কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রকোপ কমাতে অত্যন্ত সহায়ক। এছাড়াও, এটি মুখের লালা রসকে খাদ্যের সাথে উত্তমরূপে মেশাতে ভূমিকা রাখে, যা হজম প্রক্রিয়াকে সুগম করে এবং পেট ফাঁপা বা বদহজমের সমস্যা কমাতে কার্যকর।

লিপিড নিয়ন্ত্রণ ও ওজন হ্রাস

এই ফলটি কার্যত চর্বিমুক্ত। খেজুর রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূমিকা রাখে। ফলস্বরূপ, শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। শুধু তাই নয়, এর নিয়মিত গ্রহণ হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও হ্রাস পায়।

মস্তিষ্কের সক্রিয়তা ও জ্ঞানীয় ক্ষমতা বৃদ্ধি

মস্তিষ্কের কর্মদক্ষতা এবং স্মৃতিশক্তির উন্নতির জন্য খেজুর অপরিহার্য। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদানে সমৃদ্ধ। প্রতিদিন এটি খেলে মস্তিষ্কের জ্ঞানীয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং শেখার ক্ষমতা বা নতুন তথ্য আত্মস্থ করার প্রক্রিয়াও দ্রুততর হয়।

রক্তচাপ স্থিতিশীল রাখা

খেজুরের অভ্যন্তরে পটাশিয়াম নামক খনিজটির উপস্থিতির কারণে এটি রক্তচাপকে স্থিতিশীল রাখতে সক্ষম। একই সাথে, খেজুর স্ট্রোক এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগ থেকে সুরক্ষাও দেয়।

শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার

খেজুরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলির মধ্যে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড, ক্যারোটিনয়েড এবং ফেনোলিক অ্যাসিড। এই যৌগগুলি মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করে। এছাড়াও, পর্যাপ্ত ক্যালোরির কারণে শরীরকে সর্বদা সক্রিয় এবং কর্মক্ষম রাখতেও খেজুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কঙ্কালতন্ত্র ও দাঁতের সুস্বাস্থ্য

হাড়ের সুস্বাস্থ্য এবং দাঁত রক্ষায়ও খেজুর অত্যন্ত কার্যকরী। এতে ৬৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে, যা অস্থি গঠনে অপরিহার্য। তাই খেজুর খেলে হাড় সুদৃঢ় হয়। বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এটি দাঁতের মাড়িকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে।

পুষ্টি উপাদানের অভাব পূরণে সহায়ক

প্রোটিন ও বিভিন্ন ভিটামিনের একটি চমৎকার উৎস হলো খেজুর। এটি শরীরের অপরিহার্য ভিটামিন এবং খনিজ উপাদানের ঘাটতি পূরণ করে। তাই যারা পুষ্টিহীনতায় ভুগছেন, তাদের জন্য খেজুর একটি আদর্শ খাদ্য হতে পারে।

যদিও স্বাস্থ্যগত কারণে এই ফলটি বছরজুড়েই সেবন করা যেতে পারে, তবে আমাদের সংস্কৃতিতে রমজান মাসে ইফতারের অনুষঙ্গ হিসেবে এর চাহিদা বহুলাংশে বেড়ে যায়।

আমিনুল ইসলাম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ