ঢাকা, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

রমজানের চাঁদ দেখার গুরুত্ব: ইসলামের এক বিশেষ বিধান

ধর্ম ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ ফেব্রুয়ারি ২৮ ১৩:৫২:৩২
রমজানের চাঁদ দেখার গুরুত্ব: ইসলামের এক বিশেষ বিধান

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসলামের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিধান, যেমন রোজা, হজ, এবং কোরবানি, চান্দ্র মাসের সাথে সম্পর্কিত। বিশেষ করে রমজান মাসের রোজা, যা চান্দ্র মাসের হিসাবের ওপর নির্ভরশীল, ইসলামী আইনজ্ঞদের মতে এটি মুসলিম উম্মাহর জন্য ফরজে কেফায়া। এর মানে হলো, মুসলমানদের মধ্যে অন্তত একটি দলকে এই হিসাব সংরক্ষণ করতে হবে, না হলে সব মুসলিম গুনাহগার হবে।

রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর চাঁদ দেখার অভ্যাস

মহানবী (সা.) নিজে রমজানের চাঁদ দেখতেন এবং এই কাজটি সবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ মনে করতেন। আয়েশা (রা.)-এর বর্ণনায় আমরা জানতে পারি, “রাসুলুল্লাহ (সা.) শাবান মাসের চাঁদ দেখতেন অত্যন্ত মনোযোগ দিয়ে। তিনি রমজানের চাঁদ দেখার জন্য বিশেষভাবে সতর্ক থাকতেন। যদি আকাশ মেঘলা থাকত এবং চাঁদ দেখা না যেত, তবে শাবান মাস ৩০ দিনে পূর্ণ করতেন।” (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২৩২৫)

রমজান মাসের চাঁদ দেখার নির্দেশ

রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজান মাসের চাঁদ দেখার বিষয়ে বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। আবু হুরায়রা (রা.)-এর বর্ণনায় রয়েছে, “তোমরা শাবান মাসের চাঁদের হিসাব রাখো, যাতে রমজানের চাঁদ তোমরা সঠিক সময়ে দেখতে পারো।” (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৬৮৭)

আরও পড়ুন:

রমজান উপলক্ষে মসজিদুল হারাম ও নববীতে নতুন নিয়ম জারি

রমজান ২০২৫: সৌদি আরব মুসলিমদের চাঁদ দেখা সর্ম্পকে নির্দেশ

হাফিজ ইবনে হাজার আস্কালানি (রহ.) এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন, “তোমরা চাঁদের উদয়স্থল পর্যবেক্ষণ করবে এবং প্রতি মাসে তা দেখার চেষ্টা করবে, যাতে রমজানের চাঁদ তোমাদের নজর এড়িয়ে না যায়।” (তুহফাতুল আহওয়াজি : ৩/২৪৯)

চাঁদ দেখা মুস্তাহাব: এক গুরুত্বপূর্ণ কাজ

যেহেতু রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে চাঁদ দেখতেন এবং তা মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, তাই ইসলামী আইনজ্ঞরা বলেন, সাধারণ মুসলমানদের জন্য চাঁদ দেখা মুস্তাহাব (প্রশংসনীয়)। চাঁদ দেখার মাধ্যমে একজন মুসলমান আল্লাহর প্রতি তার ঈমান ও ভালোবাসা প্রকাশ করেন, যা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।

নবীজির (সা.) নতুন চাঁদ দেখে আনন্দ প্রকাশ

নতুন চাঁদের প্রতি নবী (সা.)-এর বিশেষ ভালোবাসা ছিল। কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) নতুন চাঁদ দেখে বলতেন, “কল্যাণ ও হিদায়াতের চাঁদ, কল্যাণ ও হিদায়াতের চাঁদ, কল্যাণ ও হিদায়াতের চাঁদ। যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন, আমি তাঁর ওপর ঈমান আনলাম।” এরপর তিনি আল্লাহর প্রশংসা করতেন, “যিনি এই মাসটি শেষ করেছেন এবং আমাদের জন্য এই নতুন মাস উপহার দিয়েছেন।” (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৫০৯২)

এ থেকে জানা যায় যে, শুধু রমজান মাসের চাঁদ নয়, বরং যেকোনো মাসের নতুন চাঁদ দেখাও একটি মুস্তাহাব কাজ, যা ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

নতুন চাঁদ দেখার পর রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দোয়া

নতুন চাঁদ দেখার পর রাসুলুল্লাহ (সা.) একটি বিশেষ দোয়া পাঠ করতেন। তার দোয়ার ভাষা ছিল:

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আহলিলহু আলাইনা বিল-ইয়ুমনি ওয়াল-ঈমান ওয়াস-সালামাতি ওয়াল-ইসলাম; রব্বি ওয়া রব্বুকাল্লাহ।

অর্থ: হে আল্লাহ, আমাদের জন্য এই চাঁদটিকে বরকতময়, ঈমান, নিরাপত্তা এবং শান্তির বাহন করে উদিত করুন। (হে নতুন চাঁদ) আল্লাহ আমার এবং তোমার প্রভু। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৪৫১)

রমজানের চাঁদ দেখার মাধ্যমে মুসলমানরা আল্লাহর প্রতি তাদের আস্থা ও ভালোবাসা ব্যক্ত করেন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সুন্নত অনুসরণ করে, আমাদের সবার উচিত এই বিশেষ মুহূর্তে চাঁদ দেখার প্রতি আগ্রহী হওয়া এবং আল্লাহর রহমত কামনা করা। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁর রাসুল (সা.)-এর সুন্নতের ওপর আমল করার তাওফিক দিন। আমিন।

আব্দুর রহিম/

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

ইন্দো-বাংলা ফার্মার ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা

ইন্দো-বাংলা ফার্মার ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা

দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড তাদের সমাপ্ত হওয়া আর্থিক বছরের (৩০ জুন, ২০২৫) জন্য বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মুনাফা বিতরণের সুপারিশ... বিস্তারিত