ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

নন-ক্যাডারদের কর্মকর্তাদের বদলি ও পদোন্নতির নিয়মে বড় রদবদল

জাতীয় ডেস্ক . ২৪আপডেটনিউজ
২০২৫ মে ০৬ ১২:৫৬:১৪
নন-ক্যাডারদের কর্মকর্তাদের বদলি ও পদোন্নতির নিয়মে বড় রদবদল

নিজস্ব প্রতিবেদক: জনপ্রশাসনের অপ্রকাশিত নায়ক—নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য এক নতুন সকাল আসছে। বছরের পর বছর ধরে এক নিয়মে চলা বদলি ও পদোন্নতির ছকে এবার আসছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। সচিবালয় থেকে মাঠ প্রশাসন—সবখানেই সৃষ্টি হতে চলেছে অভিন্ন নিয়ম, যেখানে থাকবে সমতা, স্বচ্ছতা এবং সুযোগের নতুন দিগন্ত।

নিয়োগ বিধিমালায় বৈপ্লবিক এই পরিবর্তনের লক্ষ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গঠন করেছে একটি আট সদস্যের কমিটি। তাদের কাজ—একীভূত একটি নিয়োগ বিধিমালা তৈরি, যা বদলে দিতে পারে নন-ক্যাডারদের কর্মজীবনের গতিপথ। ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে এই কমিটিকে জমা দিতে হবে চূড়ান্ত সুপারিশ।

বদলির গণ্ডি পেরিয়ে সমন্বয়ের পথে

বর্তমানে সচিবালয়ের কর্মচারীরা সচিবালয়েই, আর মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীরা মাঠেই আটকে থাকেন। তবে নতুন বিধিমালা কার্যকর হলে এই চিত্র বদলে যাবে।সচিবালয়ের কর্মকর্তা হবেন জেলা বা উপজেলা প্রশাসনের অংশ, আবার মাঠের কর্মচারী হবেন সচিবালয়ের গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারে—ঠিক যেমনটি আধুনিক প্রশাসনের উচিত।

পদোন্নতির আকাশ হবে সমান

বর্তমানে সচিবালয়ের কর্মচারীরা পৌঁছাতে পারেন উপসচিব পর্যন্ত, যেখানে মাঠ প্রশাসনের কর্মীরা থেমে যান প্রশাসনিক কর্মকর্তা (দশম গ্রেড) পদেই। নতুন বিধিমালা বাস্তবায়িত হলে সবাই পাবেন সমান সুযোগ—AO বা PO পেরিয়ে সহকারী সচিব, জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব হয়ে উঠতে পারবেন উপসচিব।

একটি নীতিমালায় সবাই

এই উদ্যোগের শেকড় গাঁথা আছে ২০১৮ সালের ডিসি সম্মেলনে। সেখানেই প্রথম উত্থাপিত হয় অভিন্ন নিয়োগ বিধিমালার প্রস্তাব। ধাপে ধাপে সেই প্রস্তাব আজ পরিণতির পথে।

কেন জরুরি এই পরিবর্তন?

একাধিক বিধিমালার জটিলতা দূর হবে

বদলির ক্ষেত্রে কর্মীদের দক্ষতা কাজে লাগবে সর্বোচ্চভাবে

পদোন্নতিতে তৈরি হবে স্পষ্টতা ও ন্যায্যতা

সচিবালয় ও মাঠ প্রশাসনের মধ্যে তৈরি হবে বাস্তব সমন্বয়

বর্তমানে প্রায় ১৩ হাজার নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন সচিবালয়ে। তাদের স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা ও প্রাপ্য সুযোগকে বাস্তবে রূপ দিতে একীভূত নিয়োগ বিধিমালা হতে পারে এক নতুন দিগন্তের সূচনা।

যদি এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়, তাহলে শুধু একটি নীতিমালা নয়—একটি সুশাসনের নতুন অধ্যায় রচিত হবে, যেখানে 'ক্যাডার' আর 'নন-ক্যাডার'—এই বিভাজনের দেয়াল ধীরে ধীরে ক্ষয়ে যাবে।

জাকারিয়া ইসলাম/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ