কোরবানির মাংস দিয়ে কসাইকে পারিশ্রমিক দেওয়া যাবে?
নিজস্ব প্রতিবেদক: কোরবানি—এই একটি শব্দেই যেন লুকিয়ে আছে ত্যাগ, ভালোবাসা ও আল্লাহর প্রতি নিঃস্বার্থ আনুগত্যের প্রতিচ্ছবি। ঈদের দিনের সেই বিশেষ মুহূর্তটি শুধু পশু জবাইয়ের দৃশ্য নয়, বরং একজন মুসলমানের অন্তরের গভীর থেকে উৎসারিত ইবাদতের বহিঃপ্রকাশ। এই ইবাদতের রয়েছে নির্দিষ্ট নিয়ম ও আদব।
কিন্তু প্রতিবছরই একটি বিষয় সামনে আসে—কসাই বা জবাইকারীর পারিশ্রমিক কিভাবে দেওয়া উচিত? অনেকেই প্রশ্ন তোলেন: কোরবানির মাংস, চামড়া বা হাড় দিয়ে যদি কসাইয়ের শ্রমের মূল্য চুকানো হয়, তবে কি তা শরিয়তসম্মত?
আত্মত্যাগের ইবাদতে ব্যবসার ছোঁয়া নয়
ইসলাম বলছে—না, এটি মোটেও সঠিক পদ্ধতি নয়। কোরবানি হচ্ছে এমন একটি ইবাদত, যেখানে আল্লাহর জন্য প্রিয় বস্তু উৎসর্গ করা হয়। এই আত্মত্যাগের সঙ্গে বিনিময় বা লেনদেনের মনোভাব মিশে গেলে ইবাদতের পবিত্রতা হারাতে পারে।
‘কিফায়াতুল মুফতি’ (খণ্ড ৮, পৃষ্ঠা ২৬৫) গ্রন্থে বলা হয়েছে, কোরবানির পশু জবাইয়ের পারিশ্রমিক হিসেবে কসাইকে মাংস বা পশুর কোনো অংশ দেওয়া যাবে না। তাকে দিতে হবে পৃথকভাবে নগদ অর্থ বা অন্য কোনো বস্তু।
মাংস নয়, সম্মান দিন
একজন কসাই বা সাহায্যকারীকে তার শ্রমের মূল্য অবশ্যই দিতে হবে। তবে সেটা যেন হয় সম্মানজনক, শরিয়তসম্মত উপায়ে। কোরবানির মাংস তার হক নয়—আপনার সদকা বা উপহার হিসেবে দিতে চাইলে পারেন, কিন্তু পারিশ্রমিক হিসেবে নয়। এই পার্থক্যটুকু বোঝা জরুরি।
বিক্রির ফাঁদে ইবাদত নয়
শরিয়ত আরও বলে, কোরবানির পশুর মাংস, চামড়া, হাড় বা চর্বি কোনোভাবেই বিক্রি করা যাবে না। কেউ যদি তা বিক্রি করেন, তাহলে সেই অর্থ নিজের জন্য নয়, বরং সদকা করতে হবে। এমনকি পশুর চামড়া বিক্রি করলেও পুরো টাকা গরিবদের মাঝে দান করতে হবে।
‘বাদায়েউস সানায়ে’ (৫/৮১), ‘ফাতাওয়া হিন্দিয়া’ (৫/৩০১) এবং ‘দুররে মুখতার’ (৬/৩২৯)-এর মতো নির্ভরযোগ্য কিতাবে এসব ব্যাখ্যা স্পষ্টভাবে রয়েছে।
ভুল প্রচলন: হাড় বিক্রি করে আয়
ঈদের পর দেখা যায়, টোকাইরা বাসা-বাড়ি থেকে হাড় সংগ্রহ করে মহাজনদের কাছে বিক্রি করে। এই প্রথাটি বহুল প্রচলিত হলেও শরিয়তের দৃষ্টিতে কোরবানিদাতার পক্ষে এটি বৈধ নয়। আপনি যদি হাড় বিক্রি করে থাকেন, তবে সেই অর্থ আল্লাহর রাস্তায় সদকা করা আপনার ওপর ফরজ হয়ে যায়।
ইবাদত মানে আনুগত্য—নিজস্ব নিয়মে নয়
কোরবানি মানে কেবল ত্যাগ নয়, বরং নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে সেই ত্যাগকে আল্লাহর দরবারে পেশ করা। তাই কসাইয়ের হক আদায় করতে গিয়ে কোরবানির বিধান লঙ্ঘন করা যাবে না। একজন প্রকৃত মুমিন হিসেবে আমাদের উচিত প্রতিটি সূক্ষ্ম বিষয়ে শরিয়তের নির্দেশনা মেনে চলা।
শেষ কথা হলো—ইবাদত যেন ব্যবসা না হয়ে যায়। কোরবানির প্রতিটি অঙ্গ, প্রতিটি রক্তবিন্দু, প্রতিটি কাজ হোক আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। কসাইয়ের হকও হোক সেই সন্তুষ্টিরই অংশ—নিয়ম মেনে, ভালোবাসা দিয়ে, পূর্ণ সম্মানের সঙ্গে।
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- বাংলাদেশকে না বলে দিল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড
- আজ ঢাকা বনাম রাজশাহী ম্যাচ:সরাসরি Live দেখবেন যেভাবে
- ঢাকা বনাম রাজশাহী: শেষ হলো ২৬৬ রানের ম্যাচ, জানুন ফলাফল
- সিলেট বনাম রাজশাহী: শেষ হলো ৩৮২ রানের ম্যাচ, জানুন ফলাফল
- চলছে সিলেট টাইটান্স বনাম রাজশাহী ওয়ারিয়র্স ম্যাচ: সরাসরি দেখুন Live
- earthquake today: আবারও ভূমিকম্পে কাঁপলো বাংলাদেশ
- ড. ইউনূসকে না বলে দিল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড
- আজকের সোনার দাম: (শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫)
- বিপিএল ২০২৫-সিলেট বনাম রাজশাহী; কখন, কোথায় কীভাবে দেখবেন লাইভ?
- চট্টগ্রাম রয়্যালস বনাম নোয়াখালী এক্সপ্রেস ম্যাচ: খেলাটি সরাসরি দেখুন Live
- বিএনপির হাইকমান্ডের নির্দেশ: আবারও পরিবর্তন হলো প্রার্থী তালিকা
- বিএনপির চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় বড় রদবদল: যেসব আসনে প্রার্থী পরিবর্তন, দেখুন তালিকা
- আজ বাংলাদেশে ২২ক্যারেট স্বর্ণের দাম কত
- এ সপ্তাহে আসছে ৪ কোম্পানির ডিভিডেন্ড ও ইপিএস
- সিলেট টাইটান্স বনাম রাজশাহী ওয়ারিয়র্স ম্যাচ: খেলাটি সরাসরি দেখুন Live