অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ: আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রোটিন আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। এটি শক্তি জোগায়, পেশি গঠনে সাহায্য করে এবং সার্বিক স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ডিম, মাংস, ডালসহ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার থাকা স্বাভাবিক। তবে যেকোনো কিছু অতিরিক্ত গ্রহণ করলেই তা ক্ষতির কারণ হতে পারে, আর প্রোটিনও এর ব্যতিক্রম নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই আসুন, জেনে নিই অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণের চারটি সম্ভাব্য ক্ষতিকর দিক।
১. ওজন বৃদ্ধির ফাঁদ
প্রোটিন অনেকের জন্য ওজন কমানোর দারুণ একটি উপাদান হতে পারে। তবে মাত্রাতিরিক্ত গ্রহণ করলে এর উল্টো ফল দেখা যায়। শরীর অতিরিক্ত প্রোটিনকে শক্তিতে রূপান্তর করতে না পারলে তা চর্বি হিসেবে জমা হয়, যার ফলে ওজন বাড়তে পারে। ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের মানুষের খাদ্যতালিকায় বেশি প্রোটিন থাকলে তাদের ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি বেড়ে যায়, বিশেষ করে যখন এটি কার্বোহাইড্রেটের পরিবর্তে গ্রহণ করা হয়। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে প্রোটিনের পরিমাণের দিকেও নজর রাখা জরুরি।
২. কোষ্ঠকাঠিন্যের জটিলতা
প্রোটিন নিজে কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণ নয়, তবে এটি যদি আঁশযুক্ত খাবারের সঙ্গে না খাওয়া হয়, তাহলে হজম প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ (NIH)-এর গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুদের খাদ্যতালিকায় ফাইবারের অভাব থাকলে তাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই খাদ্যতালিকায় প্রোটিনের পাশাপাশি শাকসবজি ও অন্যান্য আঁশযুক্ত উপাদান রাখাও সমান গুরুত্বপূর্ণ, যাতে হজমক্রিয়া স্বাভাবিক থাকে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা এড়ানো যায়।
৩. কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ
অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ কিডনির ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করতে পারে। NIH-এর গবেষণায় বলা হয়েছে, উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাদ্য গ্রহণের ফলে ইন্ট্রাগ্লোমেরুলার হাইপারটেনশন হতে পারে, যা কিডনির ফিল্টারিং কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে। বিশেষত যাদের কিডনি সংক্রান্ত পূর্ববর্তী সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ আরও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই কিডনি সুস্থ রাখতে চাইলে সঠিক পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ করা জরুরি।
৪. হৃদরোগের ঝুঁকি
অতিরিক্ত প্রোটিন হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। ৩০ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ৪২,২৩৭ জন সুইডিশ নারীর ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চমাত্রায় প্রোটিন গ্রহণ করলে হৃদরোগজনিত কারণে মৃত্যুর আশঙ্কা বেড়ে যায়। দীর্ঘ সময় ধরে অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ করলে হার্ট ফেইলিওরের সম্ভাবনাও থেকে যায়। তাই সুস্থ হৃদয়ের জন্য প্রোটিন গ্রহণের পরিমাণ সম্পর্কে সচেতন থাকা প্রয়োজন।
প্রোটিন আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য, তবে অতিরিক্ত গ্রহণ করলে তা বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। ওজন বৃদ্ধি, কোষ্ঠকাঠিন্য, কিডনির সমস্যা এবং হৃদরোগের ঝুঁকি এড়াতে খাদ্যতালিকায় প্রোটিনের সঠিক পরিমাণ বজায় রাখা জরুরি। সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে প্রোটিনের পাশাপাশি ফাইবার এবং অন্যান্য পুষ্টিগুণসম্পন্ন খাবার রাখার দিকেও নজর দিতে হবে। তাই সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকতে চাইলে প্রোটিন গ্রহণের মাত্রা সম্পর্কে সচেতন হোন এবং প্রয়োজনে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন।
মো: ফারুক/
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে কারসাজির চক্র: দুর্বল কোম্পানির শেয়ারের দামে অস্বাভাবিক উল্লম্ফন
- শেষ হলো মেলবোর্ন স্টার্স বনাম বাংলাদেশের মধ্যকার রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের স্কোয়াড জায়গা পেলেন যারা
- ৩ কোম্পানির কারখানায় ঝুলছে তালা, ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের
- এশিয়া কাপ ২০২৫: তিন ওপেনার নিয়ে বাংলাদেশের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা
- ভারত বনাম বাংলাদেশ : ৯০ মিনিটের খেলা শেষ, জেনে নিন ফলাফল
- রপ্তানি আয়ের ৮ হাজার কোটি টাকা গায়েব: কেয়া গ্রুপ ও চার ব্যাংককে তলব
- বদলে গেল ফোনের ডায়াল প্যাড, জানুন আসল কারণ ও আগের অবস্থায় ফেরানোর উপায়
- ভারত বনাম বাংলাদেশ: গোল, গোল, ৮০ মিনিটের খেলা শেষ
- বদলে গেল আপনার ফোনের ডায়াল প্যাড, আতঙ্ক নয় সমাধান আছে, জেনে নিন
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বড় চমক, বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের স্কোয়াড চূড়ান্ত
- ‘ক্ষমতা ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি’—ড. ইউনূস
- মালয়েশিয়া প্রবাস: যেভাবে আবেদন করবেন সম্পূর্ণ বিনা খরচে
- ভারত বনাম বাংলাদেশ: প্রথমার্ধের খেলা শেষ, জানুন সর্বশেষ ফলাফল
- গুজব না সত্য: যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা হাসিনার পদত্যাগপত্র খুঁজে পায়নি